Human Aging Speed

ধীরে ধীরে নয়, বার্ধক্য রাতারাতি আসে! জীবনে কোন দু’টি বয়সের কোঠায় হঠাৎ বুড়িয়ে যান সবাই?

বার্ধক্য চিরকাল একই গতিতে একই ভাবে আসে না। জীবনের নির্দিষ্ট সময়ে হঠাৎ করে দ্রুত গতিতে কেউ বুড়িয়ে যেতে পারেন। জীবনে মোটামুটি দু’বার, দু’ধরনের বয়সের কোঠায় এসে বার্ধক্যের গতি বেড়ে যেতে পারে। কোন কোন সময়ে?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫ ১৫:২১
কোন কোন বয়সের কোঠায় এসে বার্ধক্যের গতি বেড়ে যেতে পারে?

কোন কোন বয়সের কোঠায় এসে বার্ধক্যের গতি বেড়ে যেতে পারে? গ্রাফিক সহায়তা: এআই।

সময় এগোয়। বয়স বাড়ে। বার্ধক্যের চিহ্ন প্রকট হয়। ধীরে ধীরে, দিনে দিনে, এই প্রক্রিয়া এগোতে থাকে। এই সাধারণ ধারণাকে আংশিক ভাবে ভ্রান্ত বলে চিহ্নিত করল আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড স্কুল অফ মেডিসিনের নতুন এক গবেষণা। জীবনে কোনও এক সময়ে যদি আপনার মনে হয়, হঠাৎ শরীর ভেঙে যাচ্ছে, রাতারাতি যেন বয়সটা অনেকখানি বেড়ে গিয়েছে, তা কেবল মানসিক নয়। আক্ষরিক অর্থেই রাতারাতি বয়স বাড়ে বলে দাবি করা হয়েছে এই গবেষণায়।

Advertisement

বলা হচ্ছে, বার্ধক্য চিরকাল একই গতিতে একই ভাবে আসে না। জীবনের নির্দিষ্ট সময়ে হঠাৎ দ্রুত গতিতে বুড়িয়ে যেতে পারেন। জীবনে মোটামুটি দু’বার, দু’ধরনের বয়সের কোঠায় এসে বার্ধক্যের গতি বেড়ে যেতে পারে। কোন কোন সময়ে?

জীবনের নির্দিষ্ট সময়ে হঠাৎ করে দ্রুত গতিতে বুড়িয়ে যেতে পারেন।

জীবনের নির্দিষ্ট সময়ে হঠাৎ করে দ্রুত গতিতে বুড়িয়ে যেতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৪০ এবং ৬০-এর কোঠায় পৌঁছে রাতারাতি বার্ধক্য প্রকট হয় মানুষের। ৪০-এর কোঠার মধ্যভাগে এবং ৬০-এর কোঠার গোড়ার দিকে মানবশরীরে আণবিক স্তরে বিবিধ পরিবর্তন ঘটে। গবেষকেরা বার্ধক্যের নেপথ্য কারণ আরও সূক্ষ্ম ভাবে বোঝার জন্য ১০৮ জন ব্যক্তির উপর অসংখ্য মাইক্রোবিয়োমের (শরীর এবং ত্বকের ভিতরে বসবাসকারী ব্যাক্টেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাক) মূল্যায়ন করেছেন। যাঁদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল, তাঁদের বয়স ২৫ থেকে ৭৫ বছরের মধ্যে।

স্ট্যানফোর্ডের গবেষণা বলছে, বয়স ধীরে ধীরে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয় না। বরং মানুষ তার জীবদ্দশায় দু’বার দ্রুত এবং আকস্মিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায়। তার গড় বয়স ৪৪ বছর এবং ৬০ বছর।

জেনেটিক্সের অধ্যাপক এবং এই গবেষণার অন্যতম অংশভাক মাইকেল স্নাইডার বলেছেন, ‘‘আমরা কেবল সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে বৃদ্ধ হচ্ছি না। সত্যিই কিছু আকস্মিক বড়সড় পরিবর্তন ঘটে শরীরে। দেখা যাচ্ছে, ৪০-এর কোঠার মাঝামাঝি সময়ে এটি ঘটে। যেমন ৬০ পেরোনোর অব্যবহিত পরেই যে কোনও শ্রেণির আণবিক স্তরের পর্যবেক্ষণেই এই ফলাফল পাওয়া যাবে।’’

৬০ বছর বয়সের গোড়ায় এই পরিবর্তনগুলি ততটাও চমকপ্রদ নয়, কিন্তু ৪০-এর বদল গবেষকদেরও চমকে দিয়েছে। প্রথম দিকে গবেষকেরা ৪০ পেরোনো মহিলাদের শরীরে এই পরিবর্তনগুলিকে মেনোপজ় বা পেরিমেনোপজ়ের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করেছিলেন। কিন্তু পরে দেখা যায়, ৪০-এর মাঝামাঝি বয়সি পুরুষদের মধ্যেও এই পরিবর্তনগুলি ঘটছে। অর্থাৎ পুরুষ এবং মহিলা, উভয় লিঙ্গের মধ্যেই পরিবর্তনগুলির অন্যান্য সম্ভাব্য কারণ রয়েছে। অবশ্যই মহিলাদের জন্য মেনোপজ় বা পেরিমেনোপজ়ও গুরুত্বপূ্র্ণ কারণ।

গবেষকদের মতে, এই বড় পরিবর্তনগুলি স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। ৪০ বছর বয়সি ব্যক্তিদের মধ্যে অ্যালকোহল, ক্যাফিন এবং লিপিড মেটাবলিজ়ম, হার্টের স্বাস্থ্য, ত্বক ও পেশির কার্যকারিতার সঙ্গে সম্পর্কিত আণবিক পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। অন্য দিকে ৬০ বছর বয়সে কার্বোহাইড্রেট মেটাবলিজ়ম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ, কিডনির কার্যকারিতা, হার্টের স্বাস্থ্য, ত্বক এবং পেশি সংক্রান্ত নানাবিধ পরিবর্তন লক্ষ করা যায়।

Advertisement
আরও পড়ুন