Helmet and Hair Loss

গোছা গোছা চুল ঝরছে রোজ? নেপথ্য কারণ হেলমেট নয় তো? বাইকযাত্রার আগে কী করা উচিত

সঠিক ভাবে হেলমেট না পরলেই চুলের ক্ষতি হতে পারে! অনেক আরোহী দীর্ঘ সময় ধরে হেলমেট পরে থাকার ফলে চুল ঝরে পড়ার মতো সমস্যার সম্মুখীন হন। বাইকে ওঠার আগে, যাত্রার পরে, কখন কী ভাবে চুলের যত্ন নিলে হেলমেটের কুপ্রভাব কমতে পারে?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২৫ ১১:২১
How to avoid hair loss as wearing helmet for the daily bike ride can affect your hair

হেলমেট আপনার চুলের কী কী ক্ষতি করে? ছবি: আই।

অ্যাপ বাইকের সুবিধা এখন প্রায় সব শহরেই। ট্র্যাফিক জ্যামে পাশ কাটিয়ে যাওয়া, কম খরচে দ্রুত যাত্রা করা, বাস-ট্রেনের মতো ভেঙে ভেঙে যাত্রা করার চেয়ে একবারে বাইকে বেরিয়ে যাওয়া যায়। ফলে অনেক দিক থেকে অ্যাপ বাইক রাইডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। কিন্তু রোজের এই যাতায়াতই আপনার ক্ষতি করছে নীরবে। আপনার চুল সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যায় অনুঘটকের ভূমিকা পালন করছে হেলমেট। তবে এই তত্ত্ব এত সরল নয়। এখানে জটিলতা রয়েছে। বাইকে চড়লে হেলমেট কিন্তু অপরিহার্য। তা আপনি নিজে বাইক চালান, বা পিছনে বসুন। দুর্ঘটনার হাত থেকে মাথাকে বাঁচানোর একমাত্র অস্ত্র। তা ছাড়া সূর্যের কড়া ও ক্ষতিকারক আলো থেকে চুলকে বাঁচায় হেলমেট। রাস্তার ধুলোময়লা চুলে প্রবেশ করতে দেয় না। কিন্তু সঠিক ভাবে পরতে হবে হেলমেট। তবেই এই উপকারগুলির পাল্লা ভারী হবে অপকারের উল্টো দিকে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সঠিক ভাবে হেলমেট পরেন না কেউ। ফলে চুলের ক্ষতি হতে থাকে। প্রথমে জানতে হবে, হেলমেট আপনার চুলের কী কী ক্ষতি করে। তার পর শিখে নিতে হবে হেলমেট পরার সঠিক উপায়গুলি। তা হলেই অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে।

Advertisement

যাত্রার আগে চুলের যত্ন

চুল পরিষ্কার এবং শুকনো রাখা: হেলমেট পরার আগে যেন আপনার চুল সম্পূর্ণ রূপে পরিষ্কার এবং শুকনো থাকে। হেলমেটে চুলের সঙ্গে বার বার ঘর্ষণ হয় বলে ছত্রাক সংক্রমণ এবং ভাঙন ধরার ঝুঁকি বাড়ে।

আলগা কেশসজ্জা: ঘর্ষণ কমাতে এবং চুল ভাঙন রোধ করতে সিল্কের স্ক্রাঞ্চি বা নরম কাপড়ের হেয়ার টাই ব্যবহার করে চুল বাঁধুন। ধাতব বা প্লাস্টিকের কিংবা রাবার ব্যান্ড দিয়ে চুল বাঁধলে হেলমেটের ভিতরে আটকে গিয়ে চুল ছিঁড়ে যেতে পারে। চুলের গোড়ায় যাতে চাপ না পড়ে, সে ভাবে হালকা, আলগা ভাবে বাঁধা উচিত চুল। পনিটেল, বিনুনি, খোঁপা— এ ধরনের কেশসজ্জাই নিরাপদ। কিন্তু খোঁপা বা পনিটেল করলে ঘাড়ের কাছে করতে হবে, উঁচুতে হলেই চাপ পড়ে যাবে চুলে। চুল খুলেও হেলমেট পরা যায়, কিন্তু তাতে হাওয়ার ধুলোকণা চুলে বসে যাবে।

হেয়ারক্যাপ দিয়ে মাথার সঙ্গে হেলমেটের দূরত্ব তৈরি করুন।

হেয়ারক্যাপ দিয়ে মাথার সঙ্গে হেলমেটের দূরত্ব তৈরি করুন। ছবি: সংগৃহীত।

লিভ-ইন ময়েশ্চারাইজ়ার/ লিভ-ইন কন্ডিশনার: চুলের উপর ময়েশ্চারাইজ়ারের আস্তরণ সারা মাথায় আর্দ্রতা এনে দেয়। ঘর্ষণের বিরুদ্ধে ঢালের মতো কাজ করে লিভ-ইন কন্ডিশনার বা ময়েশ্চারাইজ়ার। শিয়া বাটার, নারকেল তেল, অথবা আর্গন অয়েলের মতো হাইড্রেটিং উপাদানে তৈরি পণ্য ব্যবহার করবেন।

সঠিক হেলমেট নির্বাচন: চুলের ক্ষতি এড়াতে উপযুক্ত হেলমেট নির্বাচন করা দরকার।

ফিটিং: খুব আলগা হলে হেলমেট পরার উদ্দেশ্যই সফল হবে না। কিন্তু আবার প্রবল চাপ পড়লেও চুলের ক্ষতি হতে পারে। তাই নিজের মাপে ফিট করানো হেলমেট পরলে সবচেয়ে ভাল।

ভিতরের আস্তরণ: হেলমেটের ভিতরের আস্তরণ মসৃণ ও নরম হওয়া দরকার।

হেলমেটের ওজন: হালকা হেলমেট আপনার মাথা এবং চুলের উপর কম চাপ ফেলবে। ভারী হেলমেটের অতিরিক্ত চাপ এবং ঘর্ষণ চুলের ক্ষতি করতে পারে।

হেয়ারক্যাপ: মাথার সঙ্গে হেলমেটের দূরত্ব তৈরি করতে পারলেও উপকার হবে। তাই হেয়ারক্যাপ দিয়ে আস্তরণ তৈরি করুন। এতে হেলমেটের ভিজে ভাব, আগের আরোহীর চুলের অবশিষ্টাংশ ইত্যাদি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবেন।

যাত্রার পর চুলের যত্ন

চুল ধোয়া: ঘাম, ময়লা থেকে মুক্তি পেতে সালফেট-মুক্ত হালকা শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।

ডিপ কন্ডিশনিং: চুলের মাস্ক বা ডিপ কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট দরকার চুলের যত্নের রুটিনে। নারকেল তেল, আর্গন অয়েল বা কেরাটিনের মতো উপাদানযুক্ত পণ্যগুলি ব্যবহার করুন। শ্যাম্পুর পর এটি মেখে খানিক ক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন।

হেয়ার স্প্রে: চুল আঁচড়ানোর সুবিধার জন্য, ভাঙন কমাতে, জট ছাড়াতে স্প্রে বা লিভ-ইন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।

মাথার ত্বকের মাসাজ: রক্ত সঞ্চালন এবং চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে মাথার ত্বকে আলতো করে মাসাজ করতে হবে।

চুলে তেল দেওয়া: হাইড্রেশন বাড়াতে এবং চুল ফাটার সমস্যা কমাতে চুলে নিয়মিত তেল মাখুন। তার পর শ্যাম্পু করে নেবেন।

তবে এ ধরনের সমস্যাগুলির মধ্যে অধিকাংশের সমাধান হল একটিই— নিজের জন্য আলাদা একটি হেলমেট কিনে নেওয়া। তাতে স্বাস্থ্যবিধি বজায় থাকে, নিজের হাতে সপ্তাহে দু’দিন করে হেলমেট ধুয়ে নেওয়া যায়। আলো-হাওয়ার মাঝে হেলমেট রেখে দিলে ছত্রাকের সমস্যাও দেখা দেয় না।

Advertisement
আরও পড়ুন