Broken Heart Syndrome

প্রেমে ব্যর্থ অথবা বিবাহবিচ্ছিন্ন? হার্টের এই বিশেষ অসুখে বেশি ভুগছেন পুরুষেরাই, দাবি গবেষণায়

হৃদয় ভাঙছে কেন? পুরুষেরাই বেশি ভুগছেন আজকাল। সাম্প্রতিক গবেষণায় কী দেখলেন বিজ্ঞানীরা?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৫ ১৬:৫৫
New Research says Men have an 11 percent death rate from Broken Heart Syndrome

ব্রোকেন হার্ট অসুখটি কী? কেন পুরুষেরা বেশি ভুগছেন? ফাইল চিত্র।

হৃদয় ভেঙে টুকরো টুকরো হচ্ছে ছেলেদের? মানসিক চাপ আর উদ্বেগ এমন জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে যে, তার চাপে পড়ে হৃদয়ের আকারই নাকি বদলে যাচ্ছে। এক সময়ে মনে করা হত, হৃদয় ভাঙার রোগে বুঝি মেয়েরাই বেশি ভোগেন, কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, ভাঙা হৃদয়ের রোগ এখন ছেলেদেরই বেশি হচ্ছে। সমীক্ষায় এ-ও দেখা গিয়েছে, হৃদয়ের এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মত্যু অবধি হয়।

Advertisement

আমেরিকান ‘হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’ জার্নালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে গবেষকেরা জানিয়েছেন, ‘ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম’ আজকাল পুরুষদেরই বেশি দেখা যাচ্ছে। এর কারণ অনেক কিছুই হতে পারে। প্রথমত অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের রেশ পড়ছে হার্টের উপর। পাশাপাশি, চাকরি, সংসার জীবনের নানা উদ্বেগে মনমেজাজ যেন আর বশে থাকছে না। উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার কয়েক মন ভারী পাথর চেপে বসছে মনে। মানসিক চাপ কখন যে প্রাণঘাতী হয়ে উঠছে, তা বোঝাই দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে। গবেষণা বলছে, প্রেমের সাগরে ডুব দিয়েছেন এমন মানুষের মস্তিষ্কে ‘ডোপামাইন’ হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। ভালবাসায় আঘাত পাওয়া বা জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাতে মন ভাঙার পোশাকি নাম ‘ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোম’ বা ‘তাকাৎসুবো কার্ডিয়োমায়োপ্যাথি’। অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ, তার উপরে মানসিক চাপ আর উৎকণ্ঠায় বিধ্বস্ত, তাঁদের এই অসুখ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সে ক্ষেত্রে মানসিক আঘাতই সজোরে ধাক্কা দেয় হার্টকে।

ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোমে আক্রান্ত এমন দু’লক্ষাধিক পুরুষকে নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছেন আমেরিকার গবেষকেরা। তাতে দেখা গিয়েছে, এতে মহিলাদের চেয়ে পুরুষদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এমনকি, সে দেশে ব্রোকেন হার্টে পুরুষদের মৃত্যুর হারও প্রায় ১১.২ শতাংশ। এই সমীক্ষাটি আমেরিকায় করা হলেও, এ দেশেও প্রাসঙ্গিক। এ দেশেও ব্রোকেন হার্টে আক্রান্তের সংখ্যা কম নয়।

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, এই অসুখ হার্টের। কাজেই মানসিক চাপ বাড়লে ‘স্ট্রেস হরমোন’ বা কর্টিসলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। সেই সময়ে তীব্র মাথাযন্ত্রণা, শ্বাসকষ্ট, বুক ধড়ফড় করার মতো লক্ষণও দেখা দেয়। বুকে চাপা ব্যথা হয় অনেকের। সেই সঙ্গে অবসাদ দেখা দিতে থাকে। উৎকণ্ঠা বহুগুণে বেড়ে যায়। এমনকি ‘প্যানিক অ্যাটাক’ হতেও দেখা যায় অনেকের। হার্ট অ্যাটাকের মতো উপসর্গ দেখা দেয়। কিন্তু অনেকেই ভেবে বসেন, ব্রোকেন হার্ট হয়েছে মানেই হার্ট অ্যাটাক হবে, তেমনটা নয়। তবে যদি মানসিক উত্তেজনায় রক্তের চাপ লাগামছাড়া হয়ে যায়, তা হলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এক দিনে হয় না এই রোগ। দীর্ঘ সময় ধরেই যদি উদ্বেগের পাথর জমতে থাকে মনে, তা হলে তার চাপে এক দিন হৃদয় সাড়া দেয়। অনেক সময় দেখা যায়, প্রেম ভাঙলে, কাছের মানুষের মৃত্যু হলে বা বিবাহবিচ্ছেদ ইত্যাদি কারণেও ব্রোকেন হার্ট সিনড্রোমে আক্রান্ত হয়েছেন রোগী।

Advertisement
আরও পড়ুন