Anemia During Pregnancy

দেশে প্রসূতিদের মধ্যে রক্তাল্পতার হার বাড়ছে? ঘাটতি ভিটামিনেরও, দাবি সমীক্ষায়

ভারতে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের অনেকেরই শরীরে আয়রন ও ভিটামিনের ঘাটতি হচ্ছে। ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সি মহিলারা বেশি ভুগছেন এই সমস্যায়। কী কারণে দেশের মহিলাদের মধ্যে রক্তাল্পতার হার বেশি, তা জানালেন গবেষকেরা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৪০
Poor nutrition leads to anemia and vitamin deficiencies in pregnant women, The Lancet Study says

কেন দেশের মহিলারা বেশি ভুগছেন রক্তাল্পতায়, কারণ জানালেন গবেষকেরা। ফাইল চিত্র।

কৈশোরে পা দেওয়ামাত্র অনেক মেয়েরই রক্তাল্পতার সমস্যা শুরু হয়। প্রৌঢ়ত্ব পর্যন্ত সেই সমস্যা থেকে মুক্তি নেই। বিশেষ করে যদি পুষ্টির ঘাটতি থেকে যায়, তা হলে আরও নানা শারীরিক সমস্যাও দেখা দেয়। সরকারের তরফে স্কুলে আয়রন ক্যাপসুল বিলি করে কিংবা অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের বাড়ি গিয়ে নানা ধরনের ওষুধ খাইয়েও এই সমস্যা যে একেবারে নির্মূল করা যায়নি তার প্রমাণই হল মেডিক্যাল জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট’-এর একটি সমীক্ষা। যেখানে দাবি করা হয়েছে, ভারতে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের অনেকেরই শরীরে আয়রন ও ভিটামিনের ঘাটতি হচ্ছে। সার্বিক পুষ্টির অভাবই এর জন্য দায়ী।

Advertisement

ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্‌থ সার্ভে-র রিপোর্টও উদ্বেগজনক। সমীক্ষা জানাচ্ছে, দেশে অন্তঃসত্ত্বাদের ৫২.২ শতাংশই রক্তাল্পতার শিকার। ১৫ বছর থেকে ৪৯ বছর অবধি মহিলারাই সবচেয়ে বেশি ভুগছেন আয়রন ও ফোলিক অ্যাসিডের ঘাটতিতে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, বেশির ভাগ ভারতীয় মহিলা তাঁদের খাওয়া নিয়ে মোটেই সচেতন নন। তাই ভারতের অধিকাংশ মহিলা হিমোগ্লোবিন-জনিত অ্যানিমিয়ার শিকার। তবে আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থাও এর জন্য দায়ী। প্রত্যন্ত এলাকার অনেক মহিলাই গর্ভকালীন সময়ে পুষ্টিকর খাবার পান না। নিয়ম মেনে ওষুধও খান না অনেকেই। সে কারণেই সমস্যা বাড়ছে। পাশাপাশি, থ্যালাসেমিয়া, থাইরয়েডের সমস্যা, লিভারের সমস্যা, ম্যালেরিয়া, ভাইরাল হেপাটাইটিসও রক্তাল্পতার কারণ হতে পারে। বেশির ভাগ মহিলাই এই সব রোগ নিয়ে সচেতন নন। রোগের উপসর্গ দেখা দিলেও চিকিৎসকের কাছেও যান না।

কারণ আরও আছে। ‘ল্যানসেট’-এর সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, বি-১২ ও ফোলিক অ্যাসিডের অভাবেও রক্তাল্পতা হয়। দেশের মাত্র ৩৭ শতাংশ মহিলা সুষম খাবার খান, বাকিদের ভিটামিনের ঘাটতি থেকে যায়। পাশাপাশি, খাবারে পর্যাপ্ত প্রোটিনও থাকে না। যে কারণে রক্তাল্পতার সমস্যা আরও বাড়ছে বলে দাবি করা হয়েছে। অপরিষ্কার শৌচাগার ব্যবহারও কিন্তু আরও একটি কারণ। এর থেকে মূত্রনালির সংক্রমণ, কৃমির সমস্যা দেখা দেয়। কৃমি পাকস্থলী থেকে রক্ত শুষে নেয়। এর কারণেও রক্তাল্পতা হয়।

রক্তাল্পতার হাত থেকে বাঁচতে গেলে মাছ, মাংস, ডিম, মোচা, থোড়, কাঁচকলা, সবুজ আনাজ, খেজুর, ছোলা, সামুদ্রিক মাছ, টম্যাটো, বিট, বাদাম, মধু, ওট্‌স, ফলের মধ্যে আপেল, বেদানা রোজকার ডায়েটে ঘুরিয়েফিরিয়ে রাখতে হবে। মদ্যপান ও ধূমপানের নেশায় লাগাম টানতে হবে। রক্তাল্পতা ক্রনিক হোক বা অ্যাকিউট, চিকিৎসার মধ্যেই থাকা উচিত। হিমোগ্লোবিনের মাত্রা খেয়াল রাখার জন্য দরকার নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১০-এর নীচে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Advertisement
আরও পড়ুন