Mobile addiction remedy

মোবাইলে আসক্তি কাটাতে চেয়েও পারছেন না? সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে ‘এক ঘরে’ নীতি!

মোবাইল যে অনেক ভাবে শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিত ক্ষতি করছে তা বুঝেও তা থেকে নিজেকে দূরে সরাতে পারছেন না বহু মানুষ। কারণ ওই আসক্তি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:০৪

ছবি : সংগৃহীত।

চোখের সমস্যা, ঘাড়ে ব্যথা, আঙুলে আর্থ্রাইটিস, ঘুমের বারোটা পাঁচ— এত সমস্যা সত্ত্বেও মোবাইল থেকে দূরে সরাতে পারছেন না নিজেকে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মে বা সমাজমাধ্যমে মগ্ন হয়ে কাটিয়ে দিচ্ছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। খাওয়া, ঘুম, বাবা-মা-প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলার সময়, সবেতে ভাগ বসাচ্ছে মোবাইল। এমনকি, খাওয়ার টেবিলেও চোখ থাকছে মোবাইলে। ফলে কী খাচ্ছেন, কতটা খাচ্ছেন, খেয়াল থাকছে না সে দিকেও। দুনিয়াকে হাতের মুঠোয় আনার প্রযুক্তি থেকে যে উপকার পাওয়ার কথা ছিল, তার থেকে ক্ষতিই হচ্ছে বেশি। কারণ, মোবাইল এখন ধূমপান, মদ্যপানের মতোই বিপজ্জনক আসক্তিতে পরিণত হয়েছে। সুস্থ থাকতে এবং সার্বিক ভাবে ভাল থাকতে স্ক্রিনটাইম কমাতে বলছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু বলা যতটা সহজ, কাজে করা তত সহজ নয়।

Advertisement

মোবাইল যে অনেক ভাবে শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক ক্ষতি করছে, তা বুঝেও তা থেকে নিজেকে দূরে সরাতে পারছেন না বহু মানুষ। কারণ, ওই আসক্তি। তবে এক তারকা যাপনবিদ তথা পুষ্টিবিদ ঋজুতা দ্বিবেকর ওই আসক্তি কাটানোর একটি উপায় বাতলেছেন। তিনি বলছেন, ‘‘মোবাইল যখন নেশা, তখন তাকে অন্য নেশার মতোই রাখতে হবে। ঠিক যেমন ভাবে ধূমপান বা মদ্যপানকে দেখা হয়, সেই রকম।’’

বলিউডের তারকা অভিনেত্রী করিনা কপূর খান, আলিয়া ভট্ট, জাহ্নবী কপূরকে পুষ্টি এবং যাপন বিষয়ে পরামর্শ দেন ঋজুতা। নায়িকারাও তাঁর উপর ভরসা করে জীবন যাপনের ধরন বদলান। যেমন করিনা বাইরের খাবারের বদলে বাড়িতে রান্না করা শুরু করেছেন। মিষ্টিকে পুরোপুরি বিদায় জানানোর বদলে স্বাস্থ্যকর মিষ্টি খেতে শুরু করেছেন আলিয়া। নায়িকাদের পছন্দের সেই পুষ্টিবিদ ইদানীং বিভিন্ন জায়গায় যাপন বিষয়ে প্রেরণাদায়ক বক্তৃতাও করেন। তা শুনতে আসেন হাজারো মানুষ। যার অধিকাংশই সাম্প্রতিক প্রজন্মের। তেমনই এক আলোচনার মঞ্চে ঋজুতা জানিয়েছেন, কী ভাবে মোবাইল আসক্তিকে কাটানো যায়।

আসক্তি কাটানোর উপায় হিসাবে ঋজুতা বলেছেন, ‘‘বিমানবন্দরে স্মোকিং জ়োন কেমন হয় দেখেছেন? অত বড় বিমানবন্দরের এক প্রান্তে একটি ছোট্ট কাচের ঘর। সেখানে গিয়ে আর পাঁচজনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ধূমপান করতে হয়। সেখানে আপনার বসার উপায় থাকে না। আরামের কোনও জায়গা নেই। মোবাইলের ক্ষেত্রেও তেমন নীতি নিতে হবে।’’

সেটি কী রকম, তার ব্যাখ্যা দিয়ে ঋজুতা বলেছেন, ‘‘ধূমপান যাঁরা করেন, তাঁরা কি বাড়িতে ঘরের মধ্যে বসে সকলের সামনেই ধূমপান করেন? নাকি ঘরের বাইরে গিয়ে ধূমপান করে আসেন? ঠিক তেমনি বাড়িতে মোবাইল দেখারও আলাদা একটি জ়োন বা ঘর হওয়া উচিত। মোবাইল নিয়ে সমস্ত কাজ ওই একটি ঘরেই বন্দি করে রাখতে হবে।’’ যাপনবিদের পরামর্শ, বাড়িতে থাকলে যাঁর যখন মোবাইল দেখার বা কাজ করার, তিনি ওই ঘরে গিয়ে দেখবেন। সেখানে বসার কোনও জায়গা থাকবে না। ফ্যান, এসি থাকবে না। আরাম করার কোনও উপায়ই থাকবে না। ফোন এলে সেখানে গিয়ে ধরতে হবে। তার পরে সেখানেই রেখে চলে আসতে হবে।

সোজা কথায়, নেশার জিনিসের অনুষঙ্গে আরাম দিয়ে তাকে আরও বাড়িয়ে তোলা যাবে না। তাকে কঠিন করে তুলতে হবে। তবেই তাতে লাগাম পরানো যাবে। আর ঋজুতার বক্তব্য, যে কোনও আসক্তিকে কড়া হাতে দমন করলে তবেই কাজ হতে পারে, নইলে নয়।

Advertisement
আরও পড়ুন