ক্যানসার নির্মূল করার নতুন অস্ত্রের খোঁজ। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ক্যানসার থেকে কি তবে রেহাই মিলতে চলেছে? মারণ রোগের চিকিৎসায় নতুন পথের সন্ধান পেলেন ফ্লোরিডা ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। কোভিড টিকার পথেই ক্যানসারের নতুন প্রতিষেধক তৈরি হতে চলেছে বলে দাবি।
বেশ কয়েক দশক ধরেই গবেষণা চলছে এ বিষয়ে। অতিমারি-পর্বে ‘বিশল্যকরণীর’ মতো কাজ করেছিল ‘এমআরএনএ’ বা ‘মেসেঞ্জার আরএনএ’ প্রযুক্তি। রেকর্ড গতিতে তৈরি হয়েছিল কোভিডের টিকা। সেই একই প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে এ বারে ক্যানসারের প্রতিষেধক তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা। ‘এমআরএনএ’ প্রযুক্তির সঙ্গে কাজে লাগানো হচ্ছে ইমিউনোথেরাপিকেও। দুই প্রযুক্তির সাহায্যেই ক্যানসারের নতুন টিকা তৈরি হচ্ছে বলে দাবি করা হয়েছে। ক্যানসার টিকা তৈরির এই কর্মযজ্ঞে শামিল হয়েছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ-সহ অনেক বড়সড় প্রতিষেধক নির্মাতা সংস্থাও।
‘নেচার বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং’ জার্নালে ক্যানসারের প্রতিষেধক আবিষ্কার নিয়ে নতুন গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ক্যানসার নিরাময়ে ‘পিডি-এল১’ প্রোটিনকে কাজে লাগানো হবে। এই প্রোটিনের টিউমার ধ্বংস করার ক্ষমতা আছে।
প্রতিষেধক বলতে বোঝায় রোগ প্রতিরোধকারী ব্যবস্থা। কোনও রোগ হওয়ার আগেই ওষুধটি প্রয়োগ করে সংক্রমণ ঠেকানো। ক্যানসারের টিকা অবশ্য ভিন্ন ধরনের। রোগীর ক্যানসার ধরা পড়ার পরে এটি দেওয়া হবে। কাজ সে অন্য প্রতিষেধকের মতোই করবে। শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সজাগ করবে ওই টিকা। তার পর ক্যানসার কোষ খুঁজে বার করে তাকে ধ্বংস করবে।
টিকা তৈরি করতে ‘এমআরএনএ’ প্রযুক্তিকেই কাজে লাগাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। মেসেঞ্জার আরএনএ-র কাজ হল শরীরের কোন কোষে অস্বাভাবিক কী ঘটছে, তার খবর এনে দেওয়া। শরীরের কোনও অংশে যদি কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিভাজন শুরু হয় এবং তা টিউমারের চেহারা নিতে শুরু করে, তা হলে এই টিকার ডোজ়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধী টি-কোষ (ইমিউন কোষ) সক্রিয় হয়ে উঠবে। টি-কোষকে বলা হয় ‘ঘাতক কোষ’, যা ক্যানসারের প্রোটিন দেখলেই তাকে ধ্বংস করতে সচেষ্ট হবে। গবেষকেরা দাবি করেছেন, এই টিকা তৈরি হয়ে গেলে কেমোথেরাপি বা রেডিয়োথেরাপির মতো যন্ত্রণাদায়ক পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে আর রোগীকে যেতে হবে না। টিকার ডোজ়েই ক্যানসার-মুক্তি ঘটবে।