Heart Attack in Women

হৃদ্‌রোগকে রজোনিবৃত্তির লক্ষণ ভেবে এড়িয়ে যাচ্ছেন? পঞ্চাশোর্ধ্বদের জন্য পরামর্শ চিকিৎসকের

রজোনিবৃত্তির সময় চলে এলে নানা রকম লক্ষণ দেখা দিতে থাকে। মানসিক চাপ-উদ্বেগও বাড়ে। সেই সঙ্গেই যদি হার্টের রোগ বাসা বাঁধতে থাকে, তা হলেও প্রায় একই রকম কিছু উপসর্গ প্রকাশ পায়। কোনটি কিসের লক্ষণ বুঝবেন কী ভাবে?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৫ ১৬:২৫
Some heart attack signs in women mimic menopause symptoms

রজোনিবৃত্তি ও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ আলাদা করবেন কী ভাবে? ছবি: ফ্রিপিক।

বুকে ব্যথা হলে অনেকেই ভাবেন, গ্যাস-অম্বলের লক্ষণ। হার্টের অবস্থা বেহাল হচ্ছে কি না, তা জানার চেষ্টাও করেন না কেউ। আর মহিলাদের ৪৫ থেকে ৫০ বছরে রজোনিবৃত্তি নিয়ে উদ্বেগ অনেকটাই বেড়ে যায়। ওই সময়ে শরীরে যে বদলগুলি আসে, সে সব উপসর্গ দেখা দিতে থাকে, তার সব ক’টিকেই হরমোনের গোলমাল ভেবে বসেন অনেকেই। চিকিৎসকেরা সাধারণত বলেন যে, বয়স ৩০ থেকে ৪০ হলে মহিলাদের কয়েকটি পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত, বিশেষ করে হার্টের কিছু টেস্ট করানো থাকলে ভাল হয়। কারণ রজোনিবৃত্তির সময় যত এগিয়ে আসবে, ততই হরমোনের তারতম্য দেখা দেবে। আর ওই সময়টাতেই হৃদ্‌রোগের কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে। যাঁদের ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা আছে বা বংশগত ভাবে হার্টের রোগের ইতিহাস আছে, তাঁদের অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে।

Advertisement

এই বিষয়ে হার্টের চিকিৎসক দিলীপ কুমার জানালেন, পঞ্চাশ পেরিয়ে গেলে যদি হার্টের অবস্থা খারাপ হয়, তা হলে তার লক্ষণ দেখা দিতে থাকবে আগেই। বেশির ভাগ মহিলাই তাকে রজোনিবৃত্তির সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যান। তাই সঠিক লক্ষণ চেনা খুবই জরুরি। কোন লক্ষণ হরমোনের গোলমালের, আর কোন কোনটি হৃদ্‌রোগের, তা বোঝার কিছু উপায় আছে।

হার্টের রোগের লক্ষণ সকলের এক নয়

ইস্ট্রোজেন হরমোন যত দিন সক্রিয় থাকে, মহিলাদের হার্টের রোগের ঝুঁকি কম থাকে। চিকিৎসক জানালেন, ইস্ট্রোজেন হরমোন হার্টের ধমনীতে ক্যালশিয়াম ও অন্যান্য দূষিত পদার্থ জমতে দেয় না। ফলে হার্টে ব্লকেজ় হওয়ার ঝুঁকি কমই থাকে মহিলাদের। যদি বংশগত ভাবে হার্টের রোগের ইতিহাস থাকে, তা হলে এর ব্যতিক্রম হতেই পারে। বয়স যত বাড়ে, রজোনিবৃত্তির সময় এগিয়ে আসে, ততই ইস্ট্রোজেন ক্ষরণের মাত্রা কমতে থাকে। ফলে ওই বয়সে গিয়ে মহিলাদের হৃদ্‌রোগ হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। যদি হার্টের অসুখ হয়, তা হলে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকবে—

বুকে চাপ অনুভব

বুকে চিনচিনে ব্যথা, মাঝেমধ্যেই চাপ অনুভূত হবে। মনে হতে পারে কয়েক মণ বোঝা বুকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।

রাতে শুয়ে ঘাম

রাতে শোয়ার পরে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসা, দরদর করে ঘাম হওয়াও ভাল লক্ষণ নয়। রজোনিবৃত্তির সময় অতিরিক্ত গরম লাগা, সব সময় ঘাম হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয় ঠিকই, তবে হার্টের রোগ হলে স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেও রাতে শুয়ে ঘাম হবে।

যখন-তখন শ্বাসকষ্ট

ফুসফুসের রোগ না থাকলেও যখন-তখন শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। বিশ্রামের মুহূর্তেও দমবন্ধ হয়ে আসতে পারে। সিঁড়ি বেয়ে উঠলে কিংবা ভারী কোনও কাজ করলেও শ্বাসকষ্ট হতে থাকবে।

হজমের গোলমাল

ঘন ঘন হজমের গোলমাল হার্ট অ্যাটাকের পূর্বলক্ষণ হতে পারে। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা অনেকেরই রয়েছে। তবে এই সমস্যা যদি জাঁকিয়ে বসতে শুরু করে, তা হলে আর ফেলে রাখা ঠিক হবে না।

গরমের দিনেও শীত করা

গরমের দিনেও শীত করবে। হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে। মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে। ঠান্ডা না লাগলেও প্রচণ্ড কাশি, কফের সঙ্গে রক্ত বার হলে সাবধান হতে হবে।

এই সব লক্ষণ দেখা দিতে থাকলে অতি অবশ্যই ইসিজি, ইকোকার্ডিয়োগ্রাম বা ট্রেডমিল টেস্ট করিয়ে নেওয়া জরুরি। সেই সঙ্গে নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করাতে হবে।

এই প্রতিবেদন সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। হার্টের রোগের লক্ষণ সকলের এক নয়। তাই উপসর্গ দেখা দিলে নিজে থেকে ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া জরুরি।

Advertisement
আরও পড়ুন