Cupping Therapy Benefits

পিঠের উপর লাল চাকা চাকা ছোপ, যন্ত্রণায় কাতর জীতু কমল! আবার কী হল অভিনেতার?

হঠাৎ জীতু কমলের পোস্ট করা কিছু ছবি নিয়ে আবার সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড়। অভিনেতা সমাজমাধ্যমে একাধিক ছবি প্রকাশ করেছেন। ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে রয়েছেন অভিনেতা। কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে তাঁর পিঠে ফোটানো হয়েছে একাধিক সূচ। আবার, অন্য কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে পিঠ জুড়ে লাল লাল চাকা চাকা দাগ।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৩:২৪
কী হল জীতুর?

কী হল জীতুর? ছবি: সংগৃহীত।

মাসখানেকও হয়নি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন অভিনেতা জীতু কমল। শারীরিক অসুস্থতা, সহ-অভিনেত্রীর সঙ্গে চরম বিবাদ— সবটা সামলে আবার ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ধারাবাহিকে যোগ দিয়েছেন অভিনেতা। এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ জীতুরই পোস্ট করা কিছু ছবি নিয়ে আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড়। অভিনেতা সমাজমাধ্যমে একাধিক ছবি প্রকাশ করেছেন। ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে রয়েছেন অভিনেতা। কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে তাঁর পিঠে ফোটানো হয়েছে একাধিক সুচ। আবার, অন্য কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে পিঠ জুড়ে লাল লাল চাকা চাকা দাগ। কোথাও আবার, পিঠের উপর বসানো রয়েছে ছোট ছোট কাপের মতো কিছু জিনিস। ছবির ক্যাপশনে জীতু লিখেছেন, ‘ইচ্ছে অনিচ্ছের মাঝে’। আর এই ছবি দেখেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অনুরাগীরা।

Advertisement

ফিজ়িয়োথেরাপিস্টরা জানাচ্ছেন, দেহের কোনও অংশে এই ভাবে ছোট ছোট পাত্র বসানো আসলে এক ধরনের থেরাপির অঙ্গ। প্রাচীন চিন, ইজিপ্ট এবং পশ্চিম এশিয়ায় এর চল ছিল। বর্তমানে যন্ত্রণা উপশমে তেল মালিশের বদলে কাপিং থেরাপির উপর ভরসা রাখছে তরুণ প্রজন্ম। টলি অভিনেতা দেবকেও দেখা গিয়েছে কাপিং থেরাপি করাতে। ঠিক কী করা হয় এই থেরাপিতে?

ফিটনেস বিশেষজ্ঞ রাজা মজুমদার জানাচ্ছেন, দেহের কোনও অংশে শক্ত হয়ে থাকা পেশিতে রক্ত চলাচল বাড়িয়ে নমনীয়তা ফেরাতেও কাপিং উপযোগী। অ্যাকনে, এগ্‌জ়িমার মতো ত্বকের সমস্যা, শরীরে প্রদাহ, ভ্যারিকোজ় ভেন থেকে উপশম মিলতে পারে এই পদ্ধতিতে। তা ছাড়া, এটির মাধ্যমে ডিপ টিসু মাসাজও সম্ভব।

আর কী কী লাভ হয় এই থেরাপি করালে?

উন্নত রক্ত সঞ্চালন: কাপিং থেরাপির মাধ্যমে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। শরীরে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বাড়লে অনেক শারীরিক সমস্যার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এই থেরাপি করালে টিস্যুর ক্ষত নিরাময় হয়, প্রদাহ কমে। এই থেরাপির মাধ্যমে শরীরের বর্জ্যপদার্থগুলি বেরিয়ে যায়। এই থেরাপির পর শরীরে লাল চাকা চাকা দাগ দেখা যায়।

মানসিক চাপ কমাতে: কাপিং থেরাপি স্নায়ুতন্ত্রের উপরেও প্রভাব ফেলে। এই থেরাপি কমালে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমে। এই থেরাপি প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপিত করে, ফলে মন শান্ত হয়।

ত্বক ভাল রাখে: কাপিং থেরাপি ত্বক পরিচর্যার জন্যও বেশ ভাল। শরীরে রক্ত সঞ্চালনের হার বাড়িয়ে ও কোলাজেন উৎপাদনের মাত্রা বাড়িয়ে ত্বকে বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে। জেল্লা বৃদ্ধি করতেও সাহায্য করে এই থেরাপি। অ্যাকনে, একজ়িমার মতো ত্বকের সমস্যা কমায়।

কী ভাবে হয় কাপিং থেরাপি?

এই থেরাপিতে কাপের মতো পাত্রের ভূমিকাই প্রধান। কাপগুলি বিভিন্ন আকারের। সাধারণত এগুলি কাচ, মাটি, ধাতু বা বাঁশের তৈরি হয়। মূলত কাপের মধ্যে শূন্যস্থান (ভ্যাকুয়াম) তৈরি করে সেগুলি দেহের নির্দিষ্ট জায়গায় উল্টো করে বসিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে কাপগুলি চামড়ার সঙ্গে একেবারে এঁটে বসে যায়। এই ভাবে সেগুলি রেখে দেওয়া হয় ৩-৪ মিনিট। এর ফলে ওই অংশের শিরাগুলি ফুলে ওঠে, রক্ত চলাচল বাড়ে সেখানে। এর পরে কাপগুলি সরিয়ে নেওয়া হয়। প্রয়োজন বুঝে নির্দিষ্ট সংখ্যার কাপ ব্যবহার করেন থেরাপিস্ট।

এ ছাড়াও ওয়েট কাপিং নামে একটি পদ্ধতির চল রয়েছে। এতে কাপ বসানোর কিছু ক্ষণ পরে সেগুলি সরিয়ে নেওয়া হয়। এর পরে ফুলে ওঠা অংশে ধারালো কিছু দিয়ে অগভীর ভাবে কেটে সামান্য রক্ত বার করে নেওয়া হয়। মনে করা হয়, এতে দেহের টক্সিন সহজেই বেরিয়ে যায়। এর পরে আবার কাপ বসানো হয়। পরে ওই অংশে ওষুধ লাগিয়ে হালকা করে ব্যান্ডেজ করে দেওয়া হয়।

কী কী সতর্কতা নেবেন?

১) কাপ দিয়ে ভ্যাকুয়াম তৈরির জেরে থেরাপির পরে ত্বকের উপরে গোল দাগ বেশ কিছু দিন থাকে। যাঁরা এই থেরাপি করাতে যাবেন, তাঁদের এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। কাপ বসানোর সময়ে ব্যথা বা ত্বকের ক্ষতির আশঙ্কাও থাকে।

২) থেরাপিস্টের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই যাওয়া উচিত। কারণ, এর জন্য মানবদেহে পেশি, রক্তবাহী শিরা-ধমনীর অবস্থান সম্পর্কে ভাল জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।

৩) ওয়েট কাপিংয়ের ক্ষেত্রে সাবধানতা বেশি দরকার, কারণ এতে সংক্রমণের ঝুঁকিও থাকে। ব্যবহৃত কাপ ও অন্য জিনিস ঠিকমতো জীবাণুমুক্ত করা কি না, খেয়াল রাখতে হবে সেই দিকে।

Advertisement
আরও পড়ুন