Sydney Bondi Beach Attack

সিডনিকাণ্ড ভুলিয়ে দিল অ্যাশেজ়ের দ্বৈরথ! যৌথ বিবৃতি অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড বোর্ডের, রক্তদানের আর্জি অসি অধিনায়ক কামিন্সের

অ্যাডিলেডে নামার আগে আপাতত একে অপরকে হুঁশিয়ারি দেওয়া নয়, বরং একে অপরের পাশে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। সিডনিকান্ডে একযোগে বার্তা দিয়েছে দুই দল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:০৮
cricket

বন্ডি সৈকতে হত্যাকাণ্ডে আতঙ্কিত প্যাট কামিন্স। —ফাইল চিত্র।

অ্যাশেজ়ের প্রতি টেস্টের আগে চলে বাগ্‌যুদ্ধ। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড, দু’দেশের বর্তমান ও প্রাক্তন ক্রিকেটার, সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে বোর্ড, সকলে জড়িয়ে পড়ে এই লড়াইয়ে। কিন্তু অ্যাডিলেডে নামার আগে ছবিটা আলাদা। একে অপরকে হুঁশিয়ারি দেওয়া নয়, বরং একে অপরের পাশে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল। সিডনিকান্ডে একযোগে বার্তা দিয়েছে দুই দল।

Advertisement

সিডনির বন্ডি সমুদ্রসৈকতে দুই আততায়ীর নির্বিচারে গুলি চালানোয় ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত হয়েছেন এক আততায়ী। সেই ঘটনার পর যৌথ বিবৃতি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। তাতে লেখা, “বন্ডি সমুদ্রসৈকতে যে ভয়ঙ্কর হত্যালীলা চলেছে তাতে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড আতঙ্কিত। যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। কঠিন সময়ে ইহুদি সম্প্রদায় ও অস্ট্রেলিয়ার জনগণের পাশে আমরা রয়েছি।”

অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের বাড়ি সিডনিতে। তিনি এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এখনও ২৭ জন হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে রক্তের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সকলকে রক্তদানের আর্জি জানিয়েছেন কামিন্স। তিনি এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, “বন্ডিতে যা ঘটেছে তাতে আতঙ্কিত। বন্ডির সাধারণ মানুষ, ইহুদি সম্প্রদায় ও মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। পারলে দয়া করে রক্তদান করুন। এখন রক্তের খুব দরকার।”

এই ঘটনার পর অ্যাডিলেডের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। মাঠে ঢোকার সময় বেশ কয়েক বার তল্লাশি হবে দর্শকদের। মাঠের ভিতরেও নিরাপত্তারক্ষী বেশি থাকবে। টেস্ট চলাকালীন অ্যাডিলেডে দু’দেশের পতাকা অর্ধনমিত থাকবে বলেও জানানো হয়েছে। কালো আর্মব্যান্ড পরে খেলবেন ক্রিকেটারেরা। বুধবার খেলা শুরুর আগে শ্রদ্ধা জানানো হবে নিহতদের।

রবিবার বন্ডি সমুদ্রসৈকতে ইহুদিদের হানুকা উৎসব চলছিল। ভিড়ে ঠাসা সেই সৈকতে ১০ মিনিট ধরে নির্বিচারে গুলি চালান দুই বন্দুকধারী। তাতে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। বন্দুকবাজ এক জনকেও গুলি করে মেরেছে পুলিশ। অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ সোমবার সকালে জানিয়েছে, বন্দুকবাজ দু’জন সম্পর্কে পিতা ও পুত্র। বন্ডি সৈকতের ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হামলার তকমা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। পুলিশ জানিয়েছে, বন্দুকবাজ পিতা সাজিদ আক্রম (৫০)। তাঁর নামে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ছিল। তাঁকে সঙ্গ দেন তাঁর ২৪ বছরের পুত্র নবিদ। সৈকতেই পুলিশের গুলিতে প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে। হামলাকারী পুত্র গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁকে পুলিশি প্রহরায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া, আরও ৪০ জন জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। তাঁদের মধ্যে দু’জন পুলিশ আধিকারিকও রয়েছেন। চোট গুরুতর হলেও তাঁদের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।

পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার বন্ডি সৈকতের উৎসবে অন্তত ১০০০ জন শামিল হয়েছিলেন। সৈকতের একটি অংশে উৎসব চলছিল। ফলে সেই জায়গাটি ভিড়ে ঠাসা ছিল। আচমকা সেখানে বন্দুক নিয়ে ঢুকে পড়েন দু’জন আততায়ী। নির্বিচারে গুলি চালান। যাঁকে সামনে পেয়েছেন, মেরেছেন তাঁরা। মহিলা, শিশু বা বয়স্কদেরও রেয়াত করা হয়নি। নিহত ১৫ জনের মধ্যে ১০ থেকে ৮৭ বছর বয়সিরা রয়েছেন।

সমাজমাধ্যমে হামলার সময়ের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, এক যুবক খালি হাতে এগিয়ে বন্দুকবাজকে পিছন দিক থেকে জাপটে ধরেন এবং তাঁর হাত থেকে বন্দুক কেড়ে নেন। তার পরেই তাঁকে ধরা সম্ভব হয়েছে। এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি, ওই যুবকের নাম আহমেদ আল আহমেদ। তিনি বন্ডি সৈকতে ফল বিক্রি করেন। ঘটনায় তিনিও আহত হয়েছেন এবং হাসপাতালে রয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, বন্ডি সৈকতের কাছে দু’টি বোমা সক্রিয় অবস্থায় রাখা ছিল। সেগুলিকে চিহ্নিত করে পরে নিষ্ক্রিয় করা হয়। জানা গিয়েছে, নিহত বন্দুকবাজ প্রৌঢ়ের কাছে ছ’টি বন্দুক ছিল। সেগুলিই হামলায় ব্যবহার করা হয়েছিল। কী ভাবে তিনি তার লাইসেন্স পেলেন, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগে থেকে পুলিশের খাতায় এই পিতা-পুত্রের নাম ছিল কি না, তা-ও স্পষ্ট করেনি পুলিশ।

Advertisement
আরও পড়ুন