Prostate Cancer Diagnosis

চল্লিশের পরে প্রস্টেট ক্যানসার বড় ঝুঁকি, আগে থেকে কী কী স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে রাখা জরুরি?

চল্লিশের পর থেকে অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে পুরুষদের। ওই বয়সের পরেই প্রস্টেটে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। কয়েকটি নিয়মমাফিক পরীক্ষায় ক্যানসার সহজেই চিহ্নিত করা যায়। অথচ ওই বয়সে গিয়ে কী কী স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত, তা জানেন না অনেকেই।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৫ ০৮:৫৮
These are the must do Medical Tests for Men over 40 to detect Prostate Cancer Early

৪০-৫০ বছরে কী কী স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়ে রাখলে বিপদ কমবে? ফাইল চিত্র।

আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রস্টেট ক্যানসার ধরা পড়েছে কিছু দিন আগেই। প্রস্টেট ক্যানসার বিষয়ে সচেতনতা বেশির ভাগ পুরুষেরই নেই। ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে এই ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। কয়েকটি নিয়মমাফিক পরীক্ষায় ক্যানসার সহজেই চিহ্নিত করা যায়। অথচ ওই বয়সে গিয়ে কী কী স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত, তা জানেন না অনেকেই। তার থেকেও বড় কথা, রোগের লক্ষণ দেখা দিলেও তা এড়িয়ে যান বেশির ভাগই। ফলে ক্যানসার দ্রুত ডালপালা মেলে স্টেজ ৩ বা স্টেজ ৪-এ পৌঁছে যায়।

Advertisement

প্রস্টেট ক্যানসার কেন হয়?

পুরুষদের মূত্রথলির নীচে প্রস্টেট গ্ল্যান্ড রয়েছে। ওই গ্ল্যান্ড থেকে হরমোন নির্গত হয়। হরমোনের গোলমাল হলে মূত্রনালিতে সমস্যা হয়। সেখানে একধরনের ক্যানসারের আশঙ্কা থাকে, যাকে প্রস্টেট ক্যানসার বলে। এই বিষয়ে ইউরোলজিস্ট ও রোবটিক সার্জন কুমার গৌরব জানিয়েছেন, এই ক্যানসারের একটি বড় সমস্যা রয়েছে। সেটি হল এই ধরনের ক্যানসার পুরুষদের শরীরে নীরবে বাসা বেঁধে থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই লক্ষণ আগে থেকে বোঝা যায় না। তবে কিছু ক্ষেত্রে উপসর্গ প্রকাশ পেতে থাকে। যেমন প্রস্রাবের সময়ে জ্বালাযন্ত্রণা হবে, বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বার হতে পারে, প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের আকার অস্বাভাবিক বড় হয়ে যাবে। আরও একটি সমস্যা দেখা দেয়, তা হল ক্যানসার কোষ এত দ্রুত বিভাজিত হতে থাকে যে, তা মেরুদণ্ড অবধি ছড়িয়ে পড়ে। তখন পিঠ ও পেলভিক এলাকায় ব্যথা শুরু হয়। হাড় দুর্বল হতে থাকে। হাড় ভঙ্গুরও হয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে পক্ষাঘাত হওয়ার ঝুঁকিও থাকে।

প্রস্রাব নির্গত হওয়ার পথে অনেক সময়ে টিউমার তৈরি হয়। তবে সব ক্ষেত্রে যে তা, ক্ষতিকর তেমন নয়। কিছু টিউমার বিনাইন। আবার কয়েকটি ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে অনেক সময় কিডনির সমস্যা থেকেও বিনাইন টিউমার তৈরি হয়েছে। অন্য টিউমার হল ম্যালিগন্যান্ট টিউমার। পরীক্ষায় ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রাথমিক ভাবে ক্যানসার হয়েছে ধরে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হয়।

কোন কোন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে রাখতে হবে?

প্রস্রাব করার সময়ে জ্বালা বা মূত্রথলিতে সমস্যা হলে অনেকে ক্যানসার ভেবে ভয় পান। সত্যিই ক্যানসার হচ্ছে কি না, তা ধরার জন্য চল্লিশের পর থেকেই কয়েকটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে রাখতে বলছেন চিকিৎসক। সেগুলি কী কী?

আলট্রা সোনোগ্রাফি (ইউএসজি)

প্রথমেই যে পরীক্ষাটি করাতে হবে তা হল, আলট্রা সোনোগ্রাফি (ইউএসজি)। এই পরীক্ষায় প্রস্টেটের মাপ বোঝা যাবে। বোঝা যাবে, প্রস্টেটটি বড় হয়েছে কি না। যদি দেখা যায় প্রস্টেটটি অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গিয়েছে, তা হলে পরের ধাপে হিস্টোপ্যাথোলজিক্যাল পরীক্ষা শুরু করা হবে।

হিস্টোপ্যাথোলজিক্যাল টেস্ট

এই পরীক্ষাটিও এক ধরনের আলট্রা সোনোগ্রাফি। একে বলা হয় ট্রান্স-রেক্টাল আন্ডার সাউন্ড (ট্রাস)টেস্ট। এ ক্ষেত্রেও প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের মাপ দেখা হয়। সেটির আকার বড় হতে শুরু করলে সেখান থেকে কোষের নমুনা নিয়ে তা বায়োপসি করে দেখা হয়, কোষের অনিয়মিত বিভাজন শুরু হয়েছে কি না। এই পরীক্ষা থেকে বোঝা যায়, প্রস্টেট ক্যানসারের আশঙ্কা আছে কি না।

পিএসএ টেস্ট

প্রস্টেট ক্যানসার চিহ্নিত করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হল পিএসএ বা ‘প্রস্টেট-স্পেসিফিক অ্যান্টিজেন টেস্ট’। রক্তের মধ্যে এই ধরনের অ্যান্টিজেনের খোঁজ করা হয়। পিএসএ অ্যান্টিজেনের মাত্রা প্রতি মিলিলিটার রক্তে যদি ৪.০ ন্যানোগ্রামের বেশি হয়, তা হলে অস্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে বায়োপসি করে দেখা হয়, কোষের অনিয়মিত বিভাজন হচ্ছে কি না বা ক্যানসার কোষ কত দূর অবধি ছড়িয়েছে।

লিভার ও কিডনি ফাংশন টেস্ট

লিভার ও কিডনির অবস্থা কেমন, তা পরীক্ষা করিয়ে নিলে ক্যানসার চিহ্নিত করা সহজ হয়।

কোলন ও অ্যাবডোমিন্যাল স্ক্রিনিং টেস্ট

চল্লিশের পরে কোলোনোস্কোপি করিয়ে রাখা খুব জরুরি। অ্যাবমিডোন্যাল আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষাতেও প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে।

বোন ডেনসিটি

অস্টিয়োপোরোসিস কেবল মহিলাদের সমস্যা নয়, চল্লিশের পরে হাড় ভঙ্গুর হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে পুরুষদেরও। যাঁরা ধূমপান বেশি করেন এবং স্টেরয়েড নেন, তাঁদের বোন ডেনসিটি বা ‘ডিইএক্সএ স্ক্যান’ করিয়ে রাখা জরুরি।

Advertisement
আরও পড়ুন