Natural Alternatives for Medicines

ওষুধ না খেয়েও রোগের প্রতিকার হতে পারে! থাইরয়েড, কোলেস্টেরল, ব্যথার ওষুধের বিকল্প কী কী?

অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণ, যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজ়িস্ট্যান্স’ বা ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজ়িস্ট্যান্স’ থেকে বাঁচতে হলে মুঠো মুঠো ওষুধ নয়, বরং ওষুধের বিকল্প কিছু উপায় জেনে রাখা ভাল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৫ ১২:৩০
These are the natural remedies for every Illness and common medications

চেনা ওষুধগুলিরও বিকল্প আছে, সেগুলি কী কী জানেন? ছবি: ফ্রিপিক।

দু’দিনের জ্বর সারাতে দোকান থেকে চেনা অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খেয়ে ফেলেন অনেকেই। পেটের অসুখ হলেই যথেচ্ছ ব্যবহার হয় জনপ্রিয় মেট্রোনিডাজ়োল গোত্রের ওষুধ। এ ভাবেই কি সাধারণ অসুখবিসুখের সঙ্গে লড়তে কড়া ডোজ়ের অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে যাচ্ছেন বছরের পর বছর? শুধু নিজেই খাচ্ছেন না, বাড়ির শিশু ও বয়স্কদের চিকিৎসাও অ্যান্টিবায়োটিকের ডোজ়ে সেরে ফেলছেন নিজেই। পছন্দের বড়ি নিরাপদ মনে করে যথেচ্ছ খেয়ে ফেলার এই অভ্যাসই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে দিনের পর দিন। আর তাতেই দেখা দিচ্ছে ‘অ্যান্টিমায়োক্রোবিয়াল রেজ়িস্ট্যান্স’। বিশ্ব জুড়ে এই সমস্যা নিয়েই এখন মাথাব্যথা শুরু হয়েছে। কারণ, চেনা ওষুধগুলি আর ঠিকমতো কাজই করছে না।

Advertisement

অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণ, যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজ়িস্ট্যান্স’ বা ‘অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজ়িস্ট্যান্স’ থেকে বাঁচতে হলে মুঠো মুঠো ওষুধ নয়, বরং ওষুধের বিকল্প কিছু প্রাকৃতিক উপায় জেনে রাখা ভাল।

চেনা ওষুধেরও বিকল্প আছে

অ্যান্টি-ডিপ্রেস্যান্ট ওষুধ

অবসাদ, উদ্বেগ কমাতে এসএসআরআই (সিলেক্টিভ সেরোটোনিন রিউপটেক ইনহিবিটর) গোত্রের ওষুধ যথেচ্ছ পরিমাণে খেতে শুরু করলে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নানা রকম হবে। এই ধরনের ওষুধের বিকল্প হতে পারে ল্যাভেন্ডার অয়েল বা জিঞ্জার এসেনশিয়াল অয়েল। কিছু ক্ষেত্রে ফোলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট, ভিটামিন ডি কাজে আসতে পারে। কড়া ওষুধ খাওয়ার বদলে ‘কগনিটিভ বিহেভিয়োরাল থেরাপি’ (সিবিটি) কাজে আসতে পারে।

কোলেস্টেরলের ওষুধ

খারাপ কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কড়া ওষুধ খাওয়ার বদলে দানাশস্য ও ফাইবার জাতীয় খাবার খাওয়া ভাল, যেমন ওট্‌স, চিয়া বীজ, ছোট মাছ। ঈষদুষ্ণ জলে লেবুর রস মিশিয়ে খালি পেটে কিছু দিন খেয়ে দেখতে পারেন। লেবুর রসে থাকা ভিটামিন সি কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল রোগীদের উচিত অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করা। জিমে না গেলেও চলবে। বাড়িতেই কিছু যোগাসন করতে পারেন। সাইকেল চালালেও উপকার পাবেন। ইচ্ছে করলেও সকালের জলখাবারে লুচি-পরোটার বদলে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। এ ক্ষেত্রে বাদাম, ফল, ডালিয়া শরীরের যত্ন নেবে।

ব্যথানাশক ওষুধ

আইবুপ্রোফেনের মতো ব্যথানাশক ওষুধের বদলে কাঁচা হলুদের মতো অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান ভাল। রোজমেরি তেল মাথাব্যথা, পেশি ও হাড়ের ব্যথা এবং খিঁচুনি নিরাময়ে সহায়তা করতে পারে। গোটা গোলমরিচের মধ্যে থাকা ক্যাপসাইসিন উপাদানটিও প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে। আদারও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণ আছে।

সুগারের ওষুধ

তুলসীপাতা, শালগমের পাতা, জলপাই গাছের পাতায় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণ এতটাই বেশি যে, তা রক্তে শর্করার মাত্রাকে স্থিতিশীল অবস্থা রাখতে যাহায্য করে। যাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ ওঠানামা করে, তাঁরা এই সব পাতার নির্যাস খেলে উপকার পাবেন। রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করতে দারচিনিও উপকারী। তা ছাড়া হাঁটাহাঁটি করলেও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এই নিয়ে আইসিএমআরের একটি গবেষণাপত্র আছে। সেখানে বলা হয়েছে, গড়ে ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটার বেগে এক ঘণ্টা হাঁটতে পারলে টাইপ ২ ডায়াবিটিসের ঝুঁকি ৪০ শতাংশ কমে যাবে। যদি ঘণ্টায় ৩ থেকে ৫ কিলোমিটার বেগে হাঁটা যায়, তা হলে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমবে প্রায় ২৪ শতাংশ।

ঘুমের ওষুধ

ঘুমোনোর দু’ঘণ্টা আগে গরম জলে স্নান করার অভ্যাস করতেই পারেন। গরম জল শরীরের ক্লান্তি দূর করে, স্নায়ুর কার্যকারিতা বাড়ায়। দেহের তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রিত হয় এই স্নানের মাধ্যমে। ফলে ঘুম আসবে সহজেই। গরম দুধে মধু মিশিয়ে সেই পানীয় খেলেও ঘুমের সমস্যা মেটে। দুধে থাকা ট্রাইটোফ্যান স্নায়ু ও কোষকে শিথিল করে ঘুম আসতে সাহায্য করে। তা ছাড়া ক্যামোমাইল চা-ও অনিদ্রার সমস্যা দূর করতে পারে।

থাইরয়েডের ওষুধ

অশ্বগন্ধা থাইরয়েডের সমস্যার সমাধান করতে পারে। এমন খাবার খেতে হবে, যাতে বেশি পরিমাণে আয়োডিন, সেলেনিয়াম ও জিঙ্ক আছে। মাশরুম, কালো আঙুর, পেঁয়াজ, ব্রাউন রাইসে সেলেনিয়াম পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। বিভিন্ন রকম সামুদ্রিক মাছ, চিংড়িতেও সেলেনিয়াম আছে।

Advertisement
আরও পড়ুন