Gut Health

অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পর খিদে উধাও! পেটেও অস্বস্তি হচ্ছে কি? কী করলে শরীর আবার চাঙ্গা হবে?

অ্যান্টিবায়োটিক খেলে কারও কারও পেটের সমস্যা হয়। হজমের গন্ডগোলের পাশাপাশি পেটখারাপও হয়। এর কারণ কী? সমাধানই বা কী করে সম্ভব?

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৫ ১৪:৫৮
অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরে পেটে অস্বস্তি, বদহজম? কেন হয় এমন?

অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরে পেটে অস্বস্তি, বদহজম? কেন হয় এমন? ছবি: সংগৃহীত।

জ্বর, অসুস্থতা, সর্দিকাশি? চিকিৎসকের পরামর্শেই অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছেন। কিন্তু ওষুধ শুরু হতেই খিদে উধাও? পেটেও কেমন যেন অস্বস্তি হচ্ছে? এমন সমস্যা শুধু আপনারই নয়, হয় অনেকেরই। টানা অ্যান্টি বায়োটিক খাওয়ার পরে কারও কারও পেট খারাপের সমস্যা হয়, কারও আবার কোষ্ঠকাঠিন্যও দেখা দেয়। পেট ফাঁপা, বদহজমের মতো লক্ষণও দেখা দেয়। মনে হতেই পারে, ওষুধ তো ভালর জন্য। অসুখ কমানোর জন্য, তা হলে এমনটা হওয়ার কারণ কী?

Advertisement

তারই উত্তর দিলেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী। শরীর ভাল রাখতে হলে ‘গাট হেল্‌থ’ ভাল রাখা প্রয়োজন। গাট হল গ্যাসট্রোইনটেসটিনাল ট্র্যাক্ট, যেখানে পরিপাক এবং হজমের কাজটি হয়। পাকস্থলি, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদন্ত্র নিয়ে তৈরি গাট। সহজ ভাবে বলতে গেলে ‘গাট হেল্থ’ হল অন্ত্র বা পেটের স্বাস্থ্য। সুবর্ণ বলছেন, ‘‘আমাদের অন্ত্রে যেমন খারাপ ব্যাক্টেরিয়া থাকে তেমনই কিছু ভাল ব্যাক্টেরিয়া থাকে, যেগুলি খাবার পরিপাকে, পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে। অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ হল ব্যাক্টেরিয়া ধ্বংস করা। ওষুধ বুঝতে পারে না, সেটি ভাল ব্যাক্টেরিয়া মারছে না খারাপ। অ্যান্টিবায়োটিক সব রকম ব্যাক্টেরিয়া মেরে ফেলে। এর ফলে পেটে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা কমে যায়। যার প্রভাব পড়ে পেটের স্বাস্থ্যে। সেই কারণে দীর্ঘ সময় ধরে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে কারও কারও সমস্যা দেখা দেয়।’’

অসুখ হলে ওষুধ খেতেই হবে। ক্ষেত্রবিশেষে অ্যান্টিবায়োটিকও জরুরি। তবে চিকিৎসক জানাচ্ছেন, অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কথায় কথায় অ্যান্টিবায়োটিক কিনে খান। কখনও -কখনও তাঁরা কোর্স সম্পূর্ণ করেন না। তার ফলে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়। এ দেশে এমন প্রবণতা যথেষ্ট উদ্বেগের। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স তৈরি হলে সেই ওষুধ আর কাজ করতে চায় না।

তবে দীর্ঘ দিন অ্যান্টিবায়োটিক খাওযার ফলে শরীরে যে সমস্যা হয় তা সমাধানের সহজ উপায় আছে।

১। ল্যাক্টোব্যাসিলাস হল উপকারী ব্যাক্টেরিয়া যা পেটের জন্য ভাল। টক দইয়ে তা মেলে। তাই অ্যান্টিবায়োটিক খাবার সঙ্গে সঙ্গে যদি একটু করে টক দই বা গ্রিক ইয়োগার্ট খাওয়া যায়, তা হলে পেটের স্বাস্থ্য ভাল খাকবে। এ ছাড়া ঘোল, লস্যিও খাওয়া যাবে। তবে চিনি খাওয়ার প্রবণতা যথাসম্ভব এড়ানো দরকার।

২। মজিয়ে নেওয়া বা ফারমেন্টেড খাবারেও উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বেড়ে যায়। কিমচি, কেফিরের মতো খাবার খাওয়া যায়। এ ছাড়া ইডলি, দোসার মতো খাবারও ভাল।

৩। প্রোবায়োটিক ওষুধও বাজারে মেলে। ক্যাপসুল বা গুঁড়োর আকারে তা পাওয়া যায়। চিকিৎসকেরা অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার পাশাপাশি এগুলিও খেতে দেন।

৪। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য জল খাওয়া খুব জরুরি। শুধু পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতেই নয়, শারীরবৃত্তীয় একাধিক কার্যাবলি সামলাতেও জলের দরকার হয়।

তবে চিকিৎসক সতর্ক করছেন, প্রোবায়োটিকের মোড়কে যে সব বাজারচলতি পানীয় বা সাপ্লিমেন্ট পাওয়া যায় সেগুলি এড়িয়ে চলার। কারণ, এতে কৃত্রিম গন্ধ, স্বাদ এবং চিনি যোগ করা হয় কখনও কখনও। তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতি হতে পারে বেশি।

Advertisement
আরও পড়ুন