Pulmonary Hypertension

সাধারণ সর্দি-কাশি নয়, ‘পালমোনারি হাইপারটেনশন’ যন্ত্রণাদায়ক, কী এই রোগ যার প্রকোপ বাড়ে শীতে

শীতে নানা অসুখবিসুখ ভোগায়। তার মধ্যেই একটি হল পালমোনারি হাইপারটেনশন। সাধারণ সর্দি-কাশি বা শ্বাসকষ্ট নয়, এই রোগ আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে তা প্রাণঘাতীও হতে পারে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ১১:৫৮
What is Pulmonary Hypertension disease, causes and Prevention tips

পালমোনারি হাইপারটেনশন থেকে সাবধান। ছবি: ফ্রিপিক।

শীতের সঙ্গে ফুসফুসের বৈরিতা চিরকালীন। শীতের শুষ্কতা ও দূষণে পাল্লা দিয়ে বাড়ে হাঁপানি, সিওপিডি-র মতো ক্রনিক ফুসফুসের অসুখ। ফাইব্রোসিস, পালমোনারি হাইপারটেনশন বা অকুপেশনাল লাং ডিজ়িজ় যাঁদের রয়েছে, তাঁদের পক্ষেও এই সময়টা সুখকর নয়। পালমোনারি হাইপারটেনশন শীতের সময়ে খুবই কষ্টকর এক অসুখ। হাঁপানি, সিওপিডির সমস্যা থাকলে বা ফুসফুসের অন্য কোনও অসুখ থাকলে পালমোনারি হাইপারটেনশনের কবলে পড়তে হতে পারে।

Advertisement

ফুসফুসের ক্রনিক অসুখ নানা প্রকার হয়। তার মধ্যে একটি পরিচিত নাম হয়, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজ়িজ় বা সিওপিডি এবং অন্যটি স্বল্প পরিচিত পালমোনারি হাইপারটেনশন। হাইপারটেনশন মানেই রক্তচাপ বৃদ্ধি। এই রক্তচাপের হেরফের হয় ফুসফুসের ধমনিতে। ফলে বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, প্রবল কাশিতে ভুগতে থাকেন রোগী।

কেন হয় পালমোনারি হাইপারটেনশন?

ফুসফুসের এই অসুখ বছরের যে কোনও সময়েই হতে পারে। তবে শীতে এর প্রকোপ বাড়ে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে ‘পালমোনারি আর্টেরিয়াল হাইপারটেনশন’। ফুসফুসের রক্তবাহী নালিগুলি সরু হয়ে যায়, ফলে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এক সময়ে রক্তপ্রবাহ বন্ধও হয়ে যেতে পারে। ফলে, ফুসফুসের ধমনীতে রক্তচাপ বাড়তে থাকে। হৃদ্‌যন্ত্রকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করে ফুসফুসে রক্ত পাঠাতে হয়। ফলে হার্টের পেশিও দুর্বল হতে থাকে। এতে হার্টের উপরেও চাপ বাড়ে।

অতিরিক্ত ঠান্ডায় শরীরের রক্তনালিগুলি সংকুচিত হয়ে যায়। এর ফলে ফুসফুসের ধমনীতে রক্ত চলাচলের পথ আরও সরু হয়ে যায়। ফলে ধমনীতে রক্তচাপ বাড়তে থাকে। অনেক সময়ে ফুসফুসের ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধেও বিপদ ঘনাতে পারে। এতে যেমন ফুসফুস বিকল হতে পারে, তেমনই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বাড়তে পারে।

কতটা ভয়াবহ?

এই অসুখটির উপসর্গ দেখা দেয় ধীর গতিতে। প্রথমে ভারী কাজ করতে গিয়ে বা সিঁড়ি ভাঙতে গিয়ে বুক ধড়ফড় করে। রাতে শুয়ে হালকা শ্বাসকষ্ট হয়। পরে বিশ্রাম নেওয়ার সময়েও শ্বাসকষ্ট হতে থাকে। হয়তো রোগী শুয়ে বা বসে আছেন, তখনও বুক ধড়ফড় করবে, হৃৎস্পন্দনের হার বাড়বে, শ্বাস নিতে কষ্ট হবে। সেই সঙ্গে বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা, অসম্ভব ক্লান্তি থাকবে। ক্ষেত্র বিশেষে এই রোগে পা ফুলতে থাকে। গোড়ালি ফেটে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। পেটে জল জমতে পারে রোগীর। অক্সিজেনের অভাবে হাত ও পায়ের নখ, ঠোঁট নীলচে বর্ণ ধারণ করতে পারে। রোগী আচমকা জ্ঞানও হারাতে পারেন। শীতে সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জার সংক্রমণ বাড়ে। এই সব অসুখের কারণেও পালমোনারি হাইপারটেনশনের আশঙ্কা বাড়তে পারে।

প্রতিকারের উপায় কী?

ঘন ঘন শ্বাসকষ্ট, বিশ্রামের সময়েও বুক ধড়ফড় করার লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

রোগীর শ্বাসকষ্ট বেশি হলে অক্সিজেন থেরাপি করেন চিকিৎসকেরা। ওষুধের কাজ না হলে অস্ত্রোপচারের পথেও যেতে হতে পারে। তবে নিজে থেকে সতর্ক হতে নিয়মিত শ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে। ডিপ ব্রিদিং, অনুলোম-বিলোম, প্রাণায়াম উপকারে আসতে পারে। খুব বেশি ঠান্ডা লাগানো যাবে না, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও নিউমোনিয়া থেকে বাঁচতে টিকা নিয়ে রাখাও জরুরি।

Advertisement
আরও পড়ুন