ছবি : সংগৃহীত।
রুটি বা পরোটা বানানোর সময় যখন আটা মাখেন, তখন তার সঙ্গে মিশিয়ে নিতে পারেন খানিকটা বেসন। তাতে কেবল রুটি বা পরোটার স্বাদ বৃদ্ধি হবে তা নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী হবে। বিশেষ করে শীত কালে এই ধরনের রুটি খাবারের তালিকায় রাখা যেতে পারে। কারণ উত্তর ভারতের কড়া ঠান্ডায় এমন রুটি খান সেখানকার বাসিন্দারা। আটা এবং বেসন একসঙ্গে মিশিয়ে তা দিয়ে বানানো ওই রুটিকে বলা হয় ‘মিসসি রুটি’। শীত কালে উত্তর ভারতের পাহাড়ি এলাকায় ওই মিসসি রুটি খাওয়া হয় কারণ, তা শরীরে উষ্ণতা জোগাতে এবং রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
১. শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে
বেসন প্রকৃতিগত ভাবে কিছুটা উষ্ণ। শীতের ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীরকে তা ভেতর থেকে গরম রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেও বেসন বেশ কার্যকরী। শীতকালে যে সাধারণ সর্দি-কাশি-জ্বর হয়, তা থেকেও শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে বেসন।
২. দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে
বেসনে গমের আটার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে প্রোটিন এবং ফাইবার থাকে। ফলে আটার সঙ্গে বেসন মিশিয়ে তা দিয়ে রুটি বা পরোটা বানিয়ে খেলে তা যেমন শরীরে কিছু বাড়তি প্রোটিনের জোগান দেয়, তেমনই পেটও ভরিয়ে রাখে দীর্ঘক্ষণ। ফলে খিদে কম পায়। যাঁরা শীতে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমাতে চান, তাঁদের জন্য এই রুটি উপযুক্ত।
৩. ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
বেসনের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স আটার তুলনায় অনেক কম। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়তে দেয় না। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সাধারণ
রুটির চেয়ে বেসন মেশানো রুটি বা পরোটা অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। এছাড়া এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে।
৪. পেশি ও হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি
বেসনে রয়েছে আয়রন, ফোলেট এবং ম্যাগনেশিয়ামের মতো পুষ্টিগুণ। এতে থাকা প্রোটিন শরীরের পেশি গঠনে এবং হাড় মজবুত করতেও সাহায্য করে। শীতে শরীরে এক ধরনের আলস্য আসে। বেসন সেই আলস্য কাটিয়ে কাজের শক্তি জোগাতে কার্যকরী।
৫. গ্লুটেনের পরিমাণ হ্রাস
অনেকেই গ্লুটেন খেতে পারেন না। খেলে সমস্যা হয়। আটার রুটি খেলে গ্যাস-অম্বলও হয় অনেকের। আটার সঙ্গে বেসন মিশিয়ে নিলে মিশ্রণটিতে গ্লুটেনের ঘনত্ব কমে যায়, হজম প্রক্রিয়াও অনেক সহজ হয়ে যায়। ফলে পেট ফাঁপা বা অ্যাসিডিটির সমস্যা দূরে থাকে।
কী ভাবে বানাবেন?
সাধারণত ৩ ভাগ আটার সঙ্গে ১ ভাগ বেসন মিশিয়ে মাখলে রুটি বা পরোটা নরম ও সুস্বাদু হয়। পরোটায় স্বাদ এবং পুষ্টির মাত্রা বৃদ্ধি করতে বেসনের সঙ্গে জোয়ান, পেঁয়াজ, মেথিপাতা, ধনেপাতা ইত্যাদিও মেশাতে পারেন।