কর্টিসলের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে কি? ছবি: সংগৃহীত।
মানসিক চাপ হয়তো অদ়ৃশ্য এক অনুভূতি, কিন্তু দেহের বাহ্যিক অংশে একাধিক রূপে দৃশ্যমান হতে পারে। তার বড় কারণ হল, মানসিক চাপের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত থাকে হরমোন। গত এক-দু’বছরে ‘কর্টিসল ফেস’ শব্দবন্ধের প্রচলনও তৈরি হয়েছে সে কারণেই। কর্টিসল হল একটি স্টেরয়েড হরমোন যা কিডনির উপরের অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি থেকে তৈরি হয় এবং এটি ‘স্ট্রেস হরমোন’ নামেও পরিচিত। এই হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলে মুখে নানা রকম ছাপ পড়ে। মানসিক চাপ বেড়ে গেলে শরীরে অতিরিক্ত কর্টিসল হরমোন নিঃসরণ হয়। ফলে শরীরের ভিতরে একাধিক পরিবর্তনের পাশাপাশি ত্বকেও তার প্রভাব পড়ে।
দৈনন্দিন কাজের জন্য কর্টিসল অর্থাৎ স্ট্রেস হরমোনের প্রয়োজনীয়তা অঢেল। কিন্তু যখন দীর্ঘ দিন ধরে কোনও ব্যক্তি মানসিক চাপে থাকেন, ঘুমের অভাব হয়, শরীর খারাপ থাকে, বা অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করে থাকেন, তখন শরীরে কর্টিসলের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে। তখনই ‘কর্টিসল ফেস’ তৈরি হতে পারে। কর্টিসলের মাত্রা দীর্ঘ দিন ধরে বেশি থাকলে মুখে নানা রকমের লক্ষণ দেখা দেয়, তখনই ‘কর্টিসল ফেস’ দেখা দেয়।
কর্টিসল অর্থাৎ স্ট্রেস হরমোন। ছবি: সংগৃহীত।
মুখে কর্টিসলের প্রভাবের লক্ষণগুলি কী কী?
১. নিস্তেজ ত্বক: কর্টিসলের অতিরিক্ত মাত্রা কোষের পরিবর্তনকে ধীর করে দিতে পারে। ফলে ত্বক ক্লান্ত, খসখসে এবং দীপ্তিহীন দেখাতে পারে।
২. ফোলাভাব: দীর্ঘ দিন ধরে মানসিক চাপে ভুগলে মুখ ফোলা দেখাতে পারে। ত্বক তরল জমিয়ে রাখতে শুরু করে বলে ফুলে যেতে পারে চোখ-মুখ।
৩. লালচে ভাব: মানসিক চাপ ত্বকের বাইরের আস্তরণকে দুর্বল করে দিতে পারে। ফলে বাজারজাত পণ্য, আবহাওয়া এবং অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে এলেই ত্বকে লালচে ভাব দেখা দেয়।
৪. ব্রণ: কর্টিসল মুখে সিবাম উৎপাদন বাড়ায়, যার ফলে ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে মুখে ব্রণ এবং প্রদাহ হতে পারে।
৫. রুক্ষতা: মানসিক চাপের ফলে লিপিড উৎপাদন কমে যেতে পারে এবং আর্দ্রতা হ্রাস পায়। এর ফলে ত্বক রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। জ্বালা ধরার মতো অস্বস্তিও হতে পারে ত্বকে।
৬. চোখের তলার ত্বকে প্রভাব: প্রদাহ এবং কম ঘুমের কারণে চোখের তলায় কালি পড়া, বলিরেখা দেখা দেওয়া বা ফোলা ভাব সৃষ্টি হতে পারে।
এই ধরনের লক্ষণ মুখে দেখতে পেলে নিছক ত্বকের সমস্যা বলে এড়িয়ে যাবেন না। কর্টিসলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলেও এই উপসর্গগুলি দেখা দিতে পারে। এমন সময়ে নানা রকমের উপায়ে কর্টিসলের মাত্রা কমানো যেতে পারে।