— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
গঙ্গার জলবণ্টন চুক্তির পুনর্নবীকরণ নিয়ে চলতি সপ্তাহেই আলোচনায় বসতে চলেছে ভারত-বাংলাদেশ। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে দু’দেশের যৌথ নদী কমিশনের সদস্যেরা বৈঠকে বসবেন। আলোচনার উদ্দেশ্য মূলত গঙ্গা-পদ্মা জলবণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা করা এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করা। তা ছাড়া, আগামী বছরের ডিসেম্বরে মেয়াদ শেষ হচ্ছে গঙ্গা জলচুক্তির। তাই চুক্তি পুনর্নবীকরণের বিষয়টিও উঠতে পারে মঙ্গলবারের বৈঠকে।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সে দেশের নদী কমিশনের সদস্য আবুল হোসেনের নেতৃত্বে সোমবারই ঢাকা থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে ১০ সদস্যের এক প্রতিনিধি দলের। শুরু হয়ে গিয়েছে তার প্রস্তুতিও। ওই দিনই দিল্লি পৌঁছবেন তাঁরা। আবুল জানিয়েছেন, এটি যৌথ কমিশনের আর পাঁচটা বৈঠকের মতোই একটি নিয়মমাফিক বৈঠক। মূলত গঙ্গা জলচুক্তির সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা দেখা হয় এই বৈঠকে। সব দিক খতিয়ে দেখতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের ফরাক্কা ব্যারাজে থাকেন। প্রতিদিন চার বার করে জল ছাড়ার পরিমাণ খতিয়ে দেখেন তাঁরা। তার পর ১০ দিনের গড় হিসাবে দুই দেশ কতটা জল পেল, তা নির্ণয় করা হয়।
গঙ্গার জলবণ্টন ছাড়াও তিস্তা এবং অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত নদীগুলির বিষয়েও বৈঠকে কথাবার্তা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে বয়ে গিয়েছে ৫৪টি নদী। এই সব নদী চুক্তির বিষয়টি দেখে যৌথ নদী কমিশন। তবে বাংলাদেশের অভিযোগ, শুষ্ক মৌসুমে ফরাক্কা ব্যারাজ থেকে তারা পর্যাপ্ত জল পায় না। গড়াই নদীতেও প্রবাহ কমে যায়, জলের অভাব দেখা দেয় বাংলাদেশের সুন্দরবনেও। যদিও ভারতের দাবি, জলপ্রবাহের স্বাভাবিক ওঠানামার কারণে অনেক সময় জলের পরিমাণ কমবেশি হয়। মঙ্গলবারের বৈঠকে সেই বিষয়গুলি ফের খতিয়ে দেখা হতে পারে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, গঙ্গা জলচুক্তির পুনর্নবীকরণের সময় গড়ে ৪০ হাজার কিউসেক জল চাইতে পারে বাংলাদেশ। পাশাপাশি, চুক্তিটি দীর্ঘমেয়াদি করার পরিকল্পনাও রয়েছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের।
১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা-পদ্মা জলবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। গঙ্গার জল নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ৩০ বছরের চুক্তি করেছিল কেন্দ্রের এইচডি দেবগৌড়ার যুক্তফ্রন্ট সরকার। তখন ঢাকায় শেখ হাসিনার সরকার ছিল। ’৯৬ এর সেই চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হচ্ছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গলবারের বৈঠকে নতুন করে উঠে আসতে পারে বেশ কিছু পর্যালোচনা এবং সংশোধন। সূত্রের খবর, বৈঠকে ধরলা, দুধকুমার, গোমতী, খোয়াই, মনু-সহ ১৪টি নদীর জলবণ্টন চুক্তির বিষয়েও প্রস্তাব করতে পারে বাংলাদেশ।