Patna Hospital Murder

হাসপাতালে আইসিইউয়ে ঢুকে গুলি, বেরিয়ে বন্দুক উঁচিয়ে দুষ্কৃতীদের উল্লাস! পটনা-কাণ্ডে সিসিটিভির আরও ছবি প্রকাশ্যে

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, হাসপাতাল সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ছিল তৌসিফ। কোথা দিয়ে বিনা বাধায় হাসপাতালে ঢোকা যাবে, তা সে জানত।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৫ ১৩:১৯
(বাঁ দিকে) হাসপাতালে ঢুকছে দুষ্কৃতীরা। একেবারে সামনে তৌসিফ বাদশাহ। (ডান দিকে) খুনের পর উল্লাস। ছবি: সংগৃহীত।

(বাঁ দিকে) হাসপাতালে ঢুকছে দুষ্কৃতীরা। একেবারে সামনে তৌসিফ বাদশাহ। (ডান দিকে) খুনের পর উল্লাস। ছবি: সংগৃহীত।

পাঁচ জন এল। চার জন টুপি পরা, এক জন খালি মাথায়। কোমর থেকে পিস্তল বার করল সকলেই। তার পর এক এক করে ঢুকে পড়ল আইসিইউতে। হাসপাতালের করিডর শুনশান। বিনা বাধাতেই আইসিইউতে ঢুকে পড়ল দুষ্কৃতীরা। মাত্র ৩০ সেকেন্ড। পর পর গুলির আওয়াজ। তার পরই টুপি পরা চার দুষ্কৃতী দরজা খুলে বারান্দা দিয়ে ছুটে বেরিয়ে গেল। কয়েক সেকেন্ড পর আর এক জনকে বেরোতে দেখা গেল। একেবারে ফিল্মি কায়দায় বারান্দা দিয়ে ধীরে ধীরে হেঁটে বেরিয়ে গেল। সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আসতেই ওই দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করে পুলিশ। নাম তৌসিফ বাদশাহ।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, যাকে খুন করা হয়েছে, ঘটনাচক্রে সে-ও একজন দুষ্কৃতী। সম্প্রতি প্যারোলে ছাড়া পেয়ে অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। নাম চন্দন মিশ্র। তার বিরুদ্ধে ২৪টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তার মধ্যে ১২ খুনের মামলা। পুলিশের নিরাপত্তায় হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল চন্দনের। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টায় দুষ্কৃতীরা হাসপাতালে ঢোকে। তার পর চন্দনকে গুলি করে খুন করার পর হাসপাতাল ছাড়ে। দুষ্কৃতীরা সংখ্যায় ছ’জন ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। পাঁচ জন হাসপাতালে ঢোকে, এক জন হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষা করছিল।

গুলির আওয়াজে হাসপাতালে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি পড়ে গেলে সেই সুযোগে ভিড়ে মিশে হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে এসেছিল পাঁচ দুষ্কৃতী। চন্দনকে খুনের পর হাসপাতালের বাইরে বন্দুক উঁচিয়ে উল্লাস করে তারা। তার পর দু’টি বাইকে ছ’জন মিলে চম্পট দেয়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ছ’জনকেই চিহ্নিত করেছে পুলিশ। তবে এই হামলার মূল চক্রী তৌসিফকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, হাসপাতাল সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল ছিল তৌসিফ। কোথা দিয়ে বিনা বাধায় হাসপাতালে ঢোকা যাবে, তা সে জানত। চন্দনকে খুনের আগে রেকিও করা হয়েছিল হাসপাতালে। তার পরই পুরো পরিকল্পনা করে হাসপাতালে ঢুকে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। তৌসিফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি পাঁচ জনের খোঁজ চলছে। হাসপাতালে ঢুকে এক রোগীকে খুনের ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা এবং হাসপাতালে রোগীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক আক্রমণও শুরু হয়েছে। আরডেজি নেতা তথা বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী লালুপুত্র তেজস্বী যাদব বলেন, ‘‘অপরাধীদের নিরাপত্তা দিচ্ছে সরকার। হাসপাতালে দুষ্কৃতীরা ঢুকল, রোগীকে খুন করে আবার চম্পটও দিল! বিহারে কি কেউ আর নিরাপদ? এ ধরনের ঘটনা আরজেডির শাসনকালে কেউ দেখেছেন?’’

Advertisement
আরও পড়ুন