Manipur Unrest

মণিপুরের সংঘর্ষে ইন্ধন দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী বীরেন? ফরেন্সিক রিপোর্ট চাইল শীর্ষ আদালত

গত বছরের শেষে অভিযোগ ওঠে, মণিপুরের গোষ্ঠীসংঘর্ষে মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের ইন্ধন রয়েছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে সেই ‘স্বীকারোক্তি’র অডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কুকিদের একটি গোষ্ঠী।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:৪৯
মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। — ফাইল চিত্র।

মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহই কি গত বছর মণিপুরের গোষ্ঠীহিংসায় ইন্ধন জুগিয়েছিলেন? দীর্ঘ দিন ধরেই এমন নানা প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে। একটি অডিয়ো টেপ ঘিরে চাঞ্চল্যও ছড়ায় (যদিও ওই অডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। কুকিদের দাবি, ওই টেপে বীরেনের নিজমুখে ‘স্বীকারোক্তি’ রয়েছে। সেই অডিয়ো টেপ নিয়েই এ বার পদক্ষেপ করল শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, টেপটি পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে সরকারি ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (সিএফএসএল)-কে।

Advertisement

সোমবার বিচারপতি পিভি সঞ্জয় কুমার এবং প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি হয়েছে। শুনানির শুরুতেই বিচারপতি কুমার বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে আসার পরেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের নিমন্ত্রণে তাঁর বাড়িতে নৈশভোজে যোগ দিয়েছিলাম। আমি কি শুনানি থেকে সরে দাঁড়াব?’’ মামলাকারীর আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ জানান, বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি হওয়া নিয়ে তাঁর আপত্তি নেই! শুনানি শুরু হতেই প্রশান্ত দাবি করেন, বেসরকারি সংস্থা ‘ট্রুথ ল্যাব্‌স’-এর করা ফরেন্সিক পরীক্ষায় ওই অডিয়ো টেপের কণ্ঠের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের কণ্ঠস্বরের শতকরা ৯৩ ভাগ মিল পাওয়া গিয়েছে। এর পরেই অডিয়ো টেপটি সরকারি পরীক্ষাগার সিএফএসএল-র হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দুই বিচারপতির বেঞ্চ। অডিয়োটির পুনরায় ফরেন্সিক পরীক্ষা করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে দ্রুত রিপোর্ট জমা দিতে হবে তাদের।

গত বছরের শেষে অভিযোগ ওঠে, মণিপুরের গোষ্ঠীসংঘর্ষে মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের ইন্ধন রয়েছে। খোদ মুখ্যমন্ত্রীর কণ্ঠে সেই ‘স্বীকারোক্তি’র অডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। এই বিষয়ে তদন্তের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কুকিদের একটি গোষ্ঠী। এর আগে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে ওই মামলার শুনানিও হয়েছে। সেখানে কুকিদের তরফে আইনজীবী প্রশান্ত দাবি করেন, ওই টেপে বীরেনের টেলি-কথোপকথন রেকর্ড করেছিলেন এক ‘হুইসলব্লোয়ার’। মুখ্যমন্ত্রী নাকি তাতে ‘স্বীকার’ করেছিলেন যে, তিনি সংঘর্ষে ইন্ধন দিয়েছেন এবং যারা অস্ত্র লুট করেছিল তাদের আশ্রয় দিয়েছেন! এই দাবির সপক্ষে কুকি সংগঠনটিকে অডিয়ো টেপ-সহ উপযুক্ত প্রমাণ জমা দিতে বলে শীর্ষ আদালত।

২০২৩ সালের মে মাস থেকে মেইতেই এবং কুকি-জো সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসা ঘিরে উত্তপ্ত মণিপুর। মাঝে কিছু দিন বিরতির পর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একাধিক বাড়িঘর। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে মণিপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্যের বেশ কয়েক জন বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালায় উন্মত্ত জনতা। রাজ্যের পাঁচ জেলায় জারি করা হয় কার্ফু। ইন্টারনেট পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত ডিসেম্বরেও মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের বাড়ির অদূরে বোমা পাওয়া গিয়েছে! আঁটসাঁট করা হয়েছে বীরেনের নিরাপত্তা।

Advertisement
আরও পড়ুন