Coal Smuggling Case

ঝাড়খণ্ডের সিএ-র সূত্রে ‘প্রভাবশালী’ যোগ-তদন্ত

২০২২-এর জুলাইয়ে প্রভাবশালী সিএ এবং দুই রাজ‍্যের কয়লা মাফিয়া, এ রাজ‍্যের প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের একটি বৈঠকের কথা তদন্তকারীদের সূত্রে উঠে আসছে। তখনই কয়লা পাচারের নতুন ‘রুট ম্যাপ’ তৈরি হয় বলে দাবি।

শুভাশিস ঘটক
শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৫০

—প্রতীকী চিত্র।

ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহল এবং প্রশাসনের শীর্ষ স্তরের একাংশের ঘনিষ্ঠদের সমন্বয়ে ২০২৩ সালের পরে ফের কয়লা পাচার চক্রের সিন্ডিকেট তৈরি করা হয় বলে দাবি ইডির। তদন্তকারীদের কথায়, ২০২০তে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে বেশ কয়েক জন কয়লা মাফিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর পরে আসানসোল, দুর্গাপুর, বীরভূম, পুরুলিয়ায় ইস্টার্ন কোলফিল্ডের বিভিন্ন কোলিয়ারি থেকে বেআইনি ভাবে কয়লা তোলা এবং পাচার কার্যত বন্ধ হয়।

ইডির এক কর্তা বলেন, ‘‘২০২২-এর পর থেকে কয়লা পাচারের ‘রুট-ম্যাপ’ বদল করা হয়। ঝাড়খণ্ডে বিভিন্ন কয়লা মাফিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে এ রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের একাংশের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী এবং কয়লা মাফিয়া। ঝাড়খণ্ড প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ এক চাটার্ড অ্যাকাউন্ট‍্যান্ট, এ রাজ্যের প্রভাবশালী-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী এবং আইনজীবীর গাঁটছড়া জমে ওঠে।”

২০২২-এর জুলাইয়ে ওই প্রভাবশালী সিএ এবং দুই রাজ‍্যের কয়লা মাফিয়া, এ রাজ‍্যের প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের একটি বৈঠকের কথা তদন্তকারীদের সূত্রে উঠে আসছে। তখনই কয়লা পাচারের নতুন ‘রুট ম্যাপ’ তৈরি হয় বলে দাবি। জানা গিয়েছে, ২০২২-এর পরে ফের দুই রাজ্যের প্রভাবশালীদের যোগসাজশে ঝাড়খণ্ডের বিসিসিএলের ৩০-৪০টি কোলিয়ারি থেকে কয়লা পাচার হয়েছে। সেই কয়লার প্রায় ৯০ শতাংশ এ রাজ‍্যে পাচারের প্রাথমিক তথ্যপ্রমাণ মিলেছে বলেও ইডির দাবি। ইডির তদন্তকারীদের কথায়, “২০২২-এর নভেম্বরের পর থেকে এ রাজ্যে দিনে ২০০-২৫০ কয়লা বোঝাই লরি বেআইনি ভাবে ঢুকছিল। ২০২৪-এ তা বেড়ে হাজার দেড়েক লরিঢুকতে থাকে।”

ইডির এক কর্তা বলেন, “তদন্তে পাওয়া নথির ভিত্তিতে ঝাড়খণ্ডের ওই সিএ-র একাধিক অফিস ও বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। তাঁকে ঘণ্টা দশেক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁর দু’টি মোবাইল ফোন, একাধিক ল্যাপটপ, অফিসের ডেস্কটপের সিপিইউ বাজেয়াপ্ত করে তথ‍্য যাচাই করা হয়েছে। এর পরে তাঁর পশ্চিমবঙ্গে প্রভাবশালী যোগ এবং কয়লা পাচারের নতুন সিন্ডিকেটের ছবিটা স্পষ্ট হচ্ছে।”

ইডির আর এক কর্তা বলেন, “২০২৪-এ দিল্লি সদর দফতরে ইসিআইআর (এনফোর্সমেন্ট কেস ইনফর্মেশন রিপোর্ট) দায়ের করে কয়লা পাচারের নতুন মামলা শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু তথ্য যাচাইয়ের পরে তদন্তের পরিধি অনেকটাই বেড়েছে। সম্প্রতি সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের অফিসে কয়লা পাচারের নতুন আর একটি ইসিআইআর দায়ের করা হয়েছে। এ রাজ্যের কয়লা পাচারে জড়িত ব্যবসায়ী, পুলিশকর্তা এবং প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ওই নতুন মামলায় কলকাতায় ইডির অফিসারেরা তদন্ত করছেন। ঝাড়খণ্ডেও আর একটি ইসিআইআর দায়ের করা হচ্ছে। সেখানকার অফিসারেরাও তদন্তশুরু করবেন।

আরও পড়ুন