Polyandry Tradition in Himachal Pradesh

হিমাচলে দুই ভাইকে বিয়ে এক তরুণীর, হাত্তি সম্প্রদায়ে হাজার বছরের প্রথা কেন চালু হয়েছিল

রীতি মেনে বসেছিল বিয়ের আসর। লোকসঙ্গীত, লোকনৃত্যও পরিবেশন করা হয়েছিল। এই ‘জোড়িদার’ প্রথাকে স্বীকৃতি দিয়েছে হিমাচল প্রদেশের রাজস্ব আইন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৫ ১৬:২৬
দুই ভাইয়ের সঙ্গে কনে সুনীতা।

দুই ভাইয়ের সঙ্গে কনে সুনীতা। ছবি: সংগৃহীত।

এক তরুণীর সঙ্গে বিয়ে হয়েছে দুই ভাইয়ের। হিমাচল প্রদেশের হাত্তি সম্প্রদায়ের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই আলোচনা শুরু হয়েছে। এ দেশে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ। তার পরেও কী করে এই বিয়ে হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাত্তি সম্প্রদায়ের মধ্যে একই মহিলার সঙ্গে একাধিক পুরুষের (যাঁরা সম্পর্কে ভাই) বিয়ের ঘটনা কিন্তু নতুন নয়। হাজার হাজার বছর ধরে এই রীতি প্রচলিত রয়েছে তাঁদের মধ্যে। একে বলে ‘জোড়িদার’। কেন এই প্রথা প্রচলন করা হয়েছিল, তা জানিয়েছেন ওই সম্প্রদায়েরই এক ব্যক্তি।

Advertisement

গত ১২ জুলাই হিমাচল প্রদেশের সিরমৌর জেলার শিল্লাই গ্রামে বসেছিল বিয়ের আসর। পাত্র— দুই ভাই কপিল নেগি এবং প্রদীপ নেগি। পাত্রী সুনীতা চৌহান। বিয়ের সেই ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, রীতি মেনে বসেছিল বিয়ের আসর। লোকসঙ্গীত, লোকনৃত্যও পরিবেশন করা হয়েছিল। এই ‘জোড়িদার’ প্রথাকে স্বীকৃতি দিয়েছে হিমাচল প্রদেশের রাজস্ব আইন। ২০২২ সালে এই হাত্তি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতির তকমা দেওয়া হয়েছে। তফসিলি উপজাতি অধ্যুষিত কিন্নর, জৌনসর বাবরেও এই প্রথা রয়েছে।

কেন শুরু হয়েছিল এই প্রথা?

এই ‘জোড়িদার’ প্রথায় কনে বরের বাড়িতে যান। সেখানেই বসে বিয়ের আসর। সেখানে পুরোহিত স্থানীয় ভাষায় মন্ত্র পড়েন। এই রীতিকে বলে ‘সিঞ্জ’। কেন এই প্রথা প্রচলন করেছিলেন হাত্তি সম্প্রদায়ের লোকজন? কেন্দ্রীয় হাত্তি সমিতির সাধারণ সম্পাদক কুন্দন সিংহ শাস্ত্রী জানিয়েছেন, পাহাড়ি এলাকায় পূর্বপুরুষের কৃষিজমি যাতে বেশি ভাগাভাগি না হয়ে যায়, সে কারণেই এই প্রথা শুরু করা হয়েছিল। পিটিআইকে তিনি বলেন, ‘‘হাজার হাজার বছর আগে এই প্রথা শুরু হয়েছিল। পরিবারের কৃষিজমি যাতে বার বার ভাগাভাগি না হয়, তাই এই প্রথা চালু করা হয়েছিল।’’ তিনি জানান, এর ফলে ভাইয়ে ভাইয়ে, এমনকি সৎ ভাইদের মধ্যেও ঐক্য বজায় থাকত। পরিবারে পুরুষের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেত। তাঁর কথায়, ‘‘খুব বড় পরিবার হলে তাতে পুরুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেত। এর ফলে জনজাতি সমাজে সেই পরিবার আরও নিরাপদ হয়ে ওঠে।’’

তবে শিক্ষার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গেই হিমাচলে জনজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যে এই প্রথা ক্রমে লোপ পাচ্ছে। যদিও সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট বলছে, গত ছ’বছরে সিরমৌর জেলার বধনা গ্রামে এই ধরনের পাঁচটি বিয়ে হয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন