West Bengal SIR

এসআইআর শুনানির নোটিস বিলি অর্ধসমাপ্ত রেখেই কাটোয়ায় নিখোঁজ বিএলও! পুলিশের দ্বারস্থ পরিবার

পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ বিএলও-র নাম অমিতকুমার মণ্ডল। তিনি কাটোয়া-১ ব্লকের খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের বিকিহাট এলাকার বাসিন্দা। পেশায় শিক্ষক অমিত মঙ্গলবার সকাল থেকে নিখোঁজ।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:৫৪
দুঃচিন্তায় নিখোঁজ বিএলও-র (ইনসেটে) পরিবার।

দুঃচিন্তায় নিখোঁজ বিএলও-র (ইনসেটে) পরিবার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) জনশুনানির ঠিক আগেই নিখোঁজ হয়ে গেলেন এক বিএলও। গত দু’দিন ধরে তাঁর কোনও খোঁজ না-মেলায় পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বাড়িতেই পড়ে রয়েছে ওই বিএলওর পরিচয়পত্র, মোবাইল ফোন ও এসআইআর সংক্রান্ত একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নথি। ঘটনার জেরে শুরু হয়েছে প্রশাসনিক তৎপরতা।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, নিখোঁজ বিএলওর নাম অমিতকুমার মণ্ডল। তিনি কাটোয়া-১ ব্লকের খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের বিকিহাট এলাকার বাসিন্দা। পেশায় শিক্ষক অমিত কেতুগ্রামের উদ্ধারণপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত। তিনি কাটোয়া বিধানসভার ২৩ নম্বর বুথের বিএলওর দায়িত্বে রয়েছেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ বাজার থেকে বাড়ি ফিরে মোটরবাইক রেখে অমিত জানান, বিএলও সংক্রান্ত একটি বৈঠক রয়েছে। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরোনোর পর আর ফেরেননি তিনি। বিকেল গড়িয়ে গেলেও যোগাযোগ না হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পরিবার। খোঁজ শুরু করতে বাড়ির মধ্যেই পাওয়া যায় তাঁর মোবাইল ফোন, বিএলও পরিচয়পত্র এবং এসআইআর সংক্রান্ত কাগজপত্র।

পরিবারের তরফে আত্মীয়স্বজন ও পরিচিত নানা জায়গায় খোঁজ করা হলেও সন্ধান মেলেনি। ফলে মঙ্গলবার রাতেই কাটোয়া থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে ‘মিসিং ডায়েরি’ করা হয়। কিন্তু তিন দিন পরেও অমিতের কোনও হদিস মেলেনি। কী কারণে তিনি নিখোঁজ হলেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় পরিবার থেকে প্রশাসন সবাই। পরিবারের সদস্যদের দাবি, বিএলওর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই মানসিক চাপে ছিলেন অমিত। সূত্রের খবর, তাঁর দায়িত্বে থাকা ২৩ নম্বর বুথে মোট ৬৪১ জন ভোটার রয়েছেন। জনশুনানির জন্য তিনি ৩৩ জন ভোটারকে নোটিস বিলি করেছিলেন। আগামী দু’দিনের মধ্যেই জনশুনানি শুরু হওয়ার কথা, যেখানে বিএলওর উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। তার আগেই তাঁর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় প্রশাসনও সমস্যায় পড়েছে। এ প্রসঙ্গে কাটোয়া মহকুমা শাসক অনির্বাণ বসু জানান, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিএলও নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাটোয়ায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির জেলা নেত্রী সীমা ভট্টাচার্য বলেন, “এই ঘটনায় আমরা বিশেষ চিন্তিত নই। হতে পারে শাসক দলের চাপে ওই বিএলও অনেক নাম শুনানিতে ডাকতে বাধ্য হয়েছেন। সেই কারণেই এখন গা ঢাকা দিয়েছেন। কাটোয়ার প্রশাসন যদি সিসিটিভি নিয়ে এতটাই আত্মবিশ্বাসী হয়, তা হলে তারা দ্রুত তাঁকে খুঁজে বের করুক।” অন্য দিকে, তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত চাপে বিএলও-রা দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। এই খবর শুনে আমরাও অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। আমরা আমাদের মতো করে খোঁজ চালাচ্ছি এবং প্রশাসনকেও অনুরোধ করছি যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে খুঁজে বার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। এটা মূলত নির্বাচন কমিশনের চাপেরই ফল।”

Advertisement
আরও পড়ুন