Sahyog Portal

‘অরাজকতার স্বাধীনতা পেতে পারে না সমাজমাধ্যম’! কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এক্স-এর আর্জি খারিজ আদালতে

তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৭৯(৩-বি) ধারায় ‘কন্টেন্ট’ অপসারণের নির্দেশ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের ‘সহযোগ পোর্টাল’-এর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এক্স (সাবেক টুইটার) কর্পোরেশনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে কর্নাটক হাই কোর্ট।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৫ ১৪:৪০
Karnataka High Court dismissed X Corporation’s plea against Government order to take down content

—প্রতীকী চিত্র।

সমাজমাধ্যমে কোনও পোস্টের বিষয়বস্তু (কন্টেন্ট) যাচাই এবং নিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে কেন্দ্রের। রয়েছে ‘আপত্তিকর’ বিষয়বস্তু চিহ্নিত করার ক্ষমতা। কর্নাটক হাই কোর্ট কার্যত এ বার তা মেনে নিল। তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) আইনের ৭৯(৩-বি) ধারায় ‘কন্টেন্ট’ অপসারণের নির্দেশ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রের ‘সহযোগ পোর্টাল’-এর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে এক্স (সাবেক টুইটার) কর্পোরেশনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতি এম নাগপ্রসন্নের বেঞ্চ।

Advertisement

বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ‘‘সমাজমাধ্যমকে অরাজকতার স্বাধীনতা দেওয়া সম্ভব নয়।’’ এই মামলার শুনানিতে এক্স কর্পোরেশনের আইনজীবী কেজি রাঘবন ‘সহযোগ পোর্টাল’-কে ‘সেন্সরশিপ পোর্টাল’ বলে চিহ্নিত করে কেন্দ্রের পদক্ষেপকে ‘বাক্‌স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, এ ধরনের নির্দেশ তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ‘৬৯এ’ ধারা মেনে জারি করা উচিত। ধারা ৭৯ (৩বি) ধারার অধীনে নয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তোলা এক্স কর্পোরেশনের উদ্দেশে বিচারপতি নাগপ্রসন্নের বেঞ্চ বলেছে, ‘‘এমনটা নয় যে, ভারতীয় বাজার নিছক একটি খেলার মাঠ যেখানে আইন অমান্য করে তথ্য প্রচার করা যেতে পারে।’’

কর্নাটক হাই কোর্টে এই মামলার শুনানিতে অবশ্য কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল, তারা সরাসরি কোনও কন্টেন্ট অপসারণের আদেশ দেয় না, বরং কোনও আপত্তিকর কন্টেন্ট চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে তা জানানো হয়। চলতি পদ্ধতি অনুযায়ী, সাধারণ ভাবে সমাজমাধ্যমে নাগরিকেরা যা লেখেন বা তুলে দেন, সেগুলি ঠিক না ভুল, সত্য না মিথ্যা, সেই বিষয়ে তদারকি করা এবং যথাযথ না হলে প্রত্যাহার করা (প্রয়োজনে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা) হবে বলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার তরফে সতর্কবাণী যোগ করা হয়। কিন্তু এই নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাটি ষোলো আনা কার্যকর, এমন দাবি কোনও সংবাদমাধ্যমের পরিচালকেরাও কখনও করতে পারেননি।

কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, নজরদারির ফাঁক গলে নানা মিথ্যা, এমনকি বিপজ্জনক মন্তব্য ও ছবি সমাজমাধ্যমে অহরহ প্রচারিত ও পুনঃপ্রচারিত হয়ে থাকে। তাই ‘আপত্তিকর কন্টেন্ট’ চিহ্নিত করার জন্য বহুমাত্রিক পদ্ধতি নেওয়া প্রয়োজন। বস্তুত, এই উদ্দেশ্যেই ২০২৪ সালে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ‘সহযোগী পোর্টালে’র মাধ্যমে আপত্তিকর কন্টেন্ট চিহ্নিত করার প্রচেষ্টা শুরু করেছিল। গড়া হয়েছিল, ‘ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কো-অর্ডিনেশন সেন্টার’। এ বার কার্যত তাতে সম্মতির সিলমোহর দিল আদালত। এক্স কর্পোরেশনের পাশাপাশি এই মামলায় ‘ডিজিপাব নিউজ় ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন’-এর আইনজীবী আদিত্য সোঁধীও ‘বাক্‌স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপে’র প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু সেই যুক্তি মানেনি আদালত।

Advertisement
আরও পড়ুন