বিমান দুর্ঘটনার পরের ছবি। ছবি: সংগৃহীত।
গুজরাতের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার কানন দেশাই নিশ্চিত করেছেন, বিমান দুর্ঘটনায় অন্তত ২৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সংবাদ সংস্থা এএনআই হোয়াইট হাউসকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, বিমান দুর্ঘটনার খবরে শোক প্রকাশ করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘‘ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। আমাদের কিছু করার আছে কি না তা জানতে চেয়েছি।’’ ভারতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার পরবর্তী পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘‘ আমি নিশ্চিত বড় ও শক্তিশালী দেশ এই পরিস্থতিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে। তাও বলেছি আমরা সব কিছু করতে ও এক্ষুণি সেখানে পৌঁছে যেতে পারি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ঠিক কী হয়েছে সেই সম্পর্কে কারোরই জানা নেই। বিমানটি ভাল ভাবেই উড়ছিল। কোনও বিস্ফোরণ হয়েছে বলে মনে হয়নি। ইঞ্জিনগুলি সম্ভবত শক্তি হারিয়ে ফেলেছিল।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘বিমান চলাচলের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ দুর্ঘচনাগুলির মধ্যে এটি অন্যতম।’’
সূত্রের খবর, শুক্রবার অহমদাবাদে যেতে পারেন মোদী। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে পারেন বলে খবর।
এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটি বিজে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের উপর ভেঙে পড়ে। বিস্ফোরণও হয়। তাতে বহুতলটিই প্রায় সম্পূর্ণ ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাঁচ জন চিকিৎসকেরও মৃত্যু হয়েছে। ওই হস্টেলটি পুনর্নির্মাণে টাটা গোষ্ঠী সাহায্য করবে বলেও জানিয়েছেন চন্দ্রশেখরণ।
অহমদাবাদে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়ে দিলেন টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এন চন্দ্রশেখরণ। তিনি জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় যাঁরা জখম হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসার খরচও বহন করবে টাটা গোষ্ঠী।
অহমদাবাদে ঘটনাস্থলে পৌঁছোলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ।
অহমদাবাদের পুলিশ কমিশনার জিএস মালিক এএনআইকে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানে সওয়ার এক জনের প্রাণ বেঁচেছে। তিনি ১১এ আসনে বসেছিলেন। তবে মৃতের সংখ্যার বিষয়ে তিনি কিছু জানাননি।
অহমদাবাদ থেকে ওড়ার পর মুহূর্তে দুর্ঘটনার কবলে পড়া এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে সওয়ার ২৪২ জনই নিহত। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়ে দিলেন অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রী রামমোহন নাইডু।
গুজরাতের স্বাস্থ্য দফতরের অতিরিক্ত সচিব জানিয়েছেন, বিমানটি যে এলাকায় ভেঙে পড়েছে, সেখানে রয়েছে হস্টেল, হাসপাতালের কর্মীদের কোয়ার্টার এবং বহুতল। এই ঘটনায় আহত ৫০ জনকে অহমদাবাদের সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিমান দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। ভারতের সরকার এবং জনগণের পাশে রয়েছে বাংলাদেশ বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রয়টার্স বলছে, অহমদাবাদের একটি হাসপাতালে ১০০ জনের দেহ আনা হয়েছে। তারা এক পুলিশ আধিকারিককে উদ্ধৃত করেছে।
গুজরাতে পৌঁছে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ।
বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে অহমদাবাদের সিভিল হাসপাতালে পৌঁছোলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল।
কী ভাবে বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ল, তা তদন্ত করে দেখবে এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি)।
ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিকেল ৪টে ৫ মিনিট থেকে ফের বিমান পরিষেবা চালু হয়েছে অহমদাবাদের সর্দার বল্লভভাই পটেল বিমানবন্দরে। যাত্রীদের সংশ্লিষ্ট বিমান সংস্থার ওয়েবসাইটে নজর রেখে বিমানবন্দরে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
কী ভাবে বিমানটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ল, তা স্পষ্ট নয়। তবে বিমানের ‘ব্ল্যাকবক্স’-এ থাকা তথ্য হাতে এলে দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ জানা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
অহমদাবাদে বিমান ভেঙে পড়ার আগে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-কে বিপদবার্তা পাঠিয়েছিল (মে ডে কল)। ফ্লাইটরাডা২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, পাইলটের কাছ থেকে বিপদবার্তা পেয়ে এটিসি যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু আর যোগাযোগ করা যায়নি। তার পরই বিমান ভেঙে পড়ার খবর জানা যায়।
কী এই ‘মে ডে কল’?
বিমান পরিষেবার পরিভাষায় এটিকে ‘বিপদসঙ্কেত’ বলা হয়। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে পাইলট যখন কোনও বিপদের আঁচ পান, তখন এই শব্দবন্ধটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফরাসি শব্দ ‘মেইডার’ থেকে ‘মে ডে’ শব্দটি এসেছে। যার অর্থ ‘আমাকে সাহায্য করুন’। সাধারণত এটিসি এবং ওই এটিসি-র আওতায় থাকা আকাশপথে কোনও বিমানের মধ্যে রেডিয়ো যোগাযোগকে ‘মে ডে কল’ বলে। এই শব্দবন্ধের মাধ্যমে দ্রুত সাহায্যের বার্তা পাঠানো হয়।
স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বিমানটি ট্যাক্সিওয়ে থেকে রানওয়েতে আসে। উড়তে শুরু করার পর হঠাৎই বিমানটি বাঁ দিকে বাঁকতে শুরু করে। এর পরেই বিমানের পিছনের দিকটি নীচের দিকে নেমে গিয়ে বিমানবন্দর চত্বরের ভিতরে ‘জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেন্টার’ নামক একটি বহুতলের কাছে একটি হস্টেলের উপর ভেঙে পড়ে। প্রসঙ্গত, ট্যাক্সিওয়ে হল বিমানবন্দরের টার্মিনাল এবং রানওয়ের সংযোগরক্ষাকারী রাস্তা। অবতরণ করার পর কোনও বিমান রানওয়ে থেকে ট্যাক্সিওয়ে ধরেই টার্মিনালে পৌঁছোয়। সেখানেই যাত্রীরা বিমান থেকে নামেন।
এটি বোয়িং সংস্থার বি৭৮৭ ড্রিমলাইনার বিমান ছিল। এই ধরনের একটি বিমানে সর্বোচ্চ ২৯০ থেকে ৩০০ জন যাত্রী থাকতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।
অহমদাবাদ বিমানবন্দরের কাছে এয়ার ইন্ডিয়ার যে বিমানটি ভেঙে পড়েছে, তাতে গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী ছিলেন। কয়েকটি সূত্রে তেমনটাই দাবি করা হচ্ছে। বিমানের যাত্রীদের তালিকায় তাঁর নাম ছিল। তাঁর ঘনিষ্ঠ প্রশান্ত ভালা আনন্দবাজার ডট কমকে জানিয়েছেন, তিনি বিজয়কে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিয়ে এসেছেন। ওই বিমানে লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। যাত্রীদের বিমান পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার বাসেও উঠেছিলেন বিজয়। তবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি।
২০১৬ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন বিজয়। রাজকোট পশ্চিমের বিধায়কও ছিলেন।