—প্রতীকী চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সভাপতি পদে একমাত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিলেন সাত বারের সাংসদ, কুর্মি নেতা পঙ্কজ চৌধুরী। আগামিকাল রাজ্য বিজেপি সভাপতি হিসেবে কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী, ওবিসি নেতা পঙ্কজের নাম ঘোষণা এখন সময়ের অপেক্ষা। পৌষ মাসের আগে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সভাপতির নাম ঘোষণা হয়ে গেলেও, পরিস্থিতি যা তাতে আগামী এক-দু’দিনের মধ্যে সর্বভারতীয় সভাপতির নাম ঘোষণা হওয়া কঠিন। সে ক্ষেত্রে সংক্রান্তির পরেই তা হবে।
গত লোকসভা নির্বাচনে যাদব ভোটের পাশাপাশি ওবিসি সমাজের অন্যান্য শ্রেণির ভোট কেটেছিলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব। গত চার বছরের বেশি সময় ধরে রাজ্যে ক্ষমতা কুক্ষিগত ছিল ঠাকুর সমাজের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও জাঠ সমাজের রাজ্য সভাপতি ভূপেন্দ্র চৌধুরীর হাতে। যা নিয়ে মূলত অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল ওবিসি সমাজের মধ্যে। যা কাজে লাগান অখিলেশ। আগামী ২০২৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখে, টানা তিন বার বিজেপির জয় নিশ্চিত করতে পঙ্কজের উপরেই ভরসা করছে দল। অবশ্য পঙ্কজের প্রথম পরীক্ষা হতে চলেছে এ বছরে পঞ্চায়েত নির্বাচনে।
রাজ্যের ওবিসি জনসংখ্যার প্রায় ৮ শতাংশ কুর্মি সমাজের। যে ভোটের বড় অংশ গত লোকসভায় বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করে অখিলেশের পাশে গিয়েছিল। রাজনীতিকদের মতে, সাংগঠনিক দক্ষতা, জাতপাতের সমীকরণের কথা মাথায় রেখে পঙ্কজের নামে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে দল। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন, এর ফলে কুর্মি সমাজের পাশাপাশি অন্যান্য ওবিসি সমাজের ভোট টানবে দল। সমাজবাদী পার্টির পিছড়া-দলিত-সংখ্যালঘুর সমীকরণের পাল্টাদেওয়া যাবে।
আশির দশক থেকে বিজেপির সক্রিয় কর্মী পঙ্কজ। ১৯৯০ সালে গোরক্ষপুর পুরসভার ডেপুটি মেয়র হন তিনি। ১৯৯১ সালে ২৭ বছর বয়েসে মহারাজগঞ্জ থেকে লোকসভায় জিতে সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশ। অমিত শাহ তাঁকে মনে করেন, বর্তমান সময়ের অন্যতম অভিজ্ঞ সাংসদ। ২০২৩ সালে গোরক্ষপুরে প্রচারে গিয়ে পঙ্কজের বাড়িতে হেঁটে দেখা করতে যান প্রধানমন্ত্রী।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বি এল বর্মা, সাধ্বী নিরঞ্জনা জ্যোতির মতো পিছিয়ে থাকা সমাজের বেশ কিছু নেতা এ বার সভাপতির দৌড়ে ছিলেন। কিন্তু পঙ্কজ এক দিকে যেমন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ তেমনি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে। তাঁর নাম প্রস্তাব করেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, যা সমর্থন করেন উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য ও ব্রিজেশ পাঠক। সমর্থন জানান প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, স্বতন্ত্র দেও সিংহ, সূর্য প্রতাপ শাহিরা। আজ দুপুরে লখনউ পৌঁছে মনোনয়ন পেশ করেন পঙ্কজ। আর কোনও প্রার্থী মনোনয়ন না দেওয়ায় আগামিকাল তাঁর নাম রাজ্য সভাপতি হিসেবে ঘোষণা করতে চলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল।