Rammohan Roy

রামমোহন রায় ব্রিটিশদের দালাল: মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকারের শিক্ষামন্ত্রী! ‘ভুয়ো সমাজ সংস্কারক’ বলেও মন্তব্য

বিরসা মুন্ডার সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন ইন্দর। সেখানে আদিবাসী নেতা বিরসা মুন্ডার মাহাত্ম্য তুলে ধরতে গিয়ে টেনে আনেন রামমোহন রায়ের মতো সমাজ সংস্কারের কথা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ১১:২৯
Madhya Pradesh minister Inder Singh Parmar controversial comment on Raj Ram Mohan Roy

(বাঁ দিকে) মধ্যপ্রদেশের শিক্ষামন্ত্রী ইন্দর সিংহ পারমার এবং রামমোহন রায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

সমাজ এবং ধর্মীয় সংস্কারক হিসাবে বিশ্বজোড়া পরিচিতি তাঁর। বাঙালির উপর তো বটেই, গোটা দেশেই তাঁর প্রভাব অনস্বীকার্য। সেই রাজা রামমোহন রায়কে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের ‘দালাল’ বলে বিতর্কে জড়ালেন মধ্যপ্রদেশের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী ইন্দর সিংহ পারমার! তাঁর দাবি, ঔপনিবেশিক শাসনকালে ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে জনগণের বিশ্বাস পরিবর্তনের জন্য যাঁরা কাজ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রামমোহন।

Advertisement

বিরসা মুন্ডার সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন ইন্দর। সেখানে আদিবাসী নেতা বিরসা মুন্ডার মাহাত্ম্য তুলে ধরতে গিয়ে টেনে আনেন রামমোহনের মতো তৎকালীন সমাজ সংস্কারকের কথা। তাঁর মতে, ‘‘বাংলা এবং আশপাশের অঞ্চলে ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে সে সময় মানুষের বিশ্বাস পরিবর্তনের জন্য একটি চক্র কাজ কাজ করছিল। ব্রিটিশেরা বেশ কয়েক জন ভারতীয়কে ভুয়ো সমাজ সংস্কারক হিসাবে গড়ে তুলেছিলেন। রাজা রামমোহন রায় ছিলেন তাঁদের মধ্যে এক কজন, যিনি ব্রিটিশদের দালাল হিসাবে কাজ করতেন।’’

কেন তিনি এই কথা বলছেন, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘কেউ যদি তাঁদের (রামমোহন রায়) ধর্মান্তরণের চক্র বন্ধ করার সাহস করে থাকেন, তিনি হলেন বিরসা মুন্ডা। আদিবাসী সম্প্রদায়কে বাঁচিয়েছেন।’’

আধুনিক ভারতীয় নবজাগরণের জনক হিসাবে পরিচিত রামমোহন। সতীদাহ প্রথা বন্ধের নেপথ্যে কান্ডারি ছিলেন তিনি। তাঁর সাহসী পদক্ষেপ এখনও আলোচনার বিষয়। সেই রামমোহনকে ব্রিটিশদের ‘দালাল’ বলা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। ইন্দরের মন্তব্যকে ‘লজ্জাজনক’ বলে আক্রমণ শানান কংগ্রেসের মুখপাত্র ভূপেন্দ্র গুপ্ত। বিজেপি নেতা তথা মধ্যপ্রদেশের শিক্ষামন্ত্রীর ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞান নেই। ভূপেন্দ্রর প্রশ্ন, সতীদাহ প্রথা বিলোপ কি ‘ব্রিটিশ দালালি’র রূপ?

ইন্দরের মন্তব্য নিয়ে বিজেপিকে খোঁচা দিল বাংলার শাসকদল তৃণমূল। বিজেপিকে বাংলা-বিরোধী বলে কটাক্ষ তাদের। তৃণমূলের দাবি, শুধু একা ইন্দর নন, নানা সময়ে বিজেপি নেতা-মন্ত্রীরা বাংলা-বিরোধী মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে কলকাতায় রোড শো করেছিলেন শাহ। কলেজ স্ট্রিটে সেই কর্মসূচির সময়েই বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হয়েছিল। পুরো ঘটনার জন্য বিজেপিকে দায়ী করেছিল শাসক তৃণমূল। সেই অভিযোগ আবার তুলল তৃণমূল। এ ছাড়াও, বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জেপি নড্ডাকে নিশানা করেছে বাংলার শাসকদল।

ইন্দর অতীতেও এ হেন আলটপকা মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ান। এক সময়ে তিনি দাবি করেছিলেন, ভারত ভাস্কো-দা-গামা আবিষ্কার করেননি, করেছিলেন চন্দন নামে এক বণিক! ভুল ইতিহাস শেখানো হয়েছে। স্কুল শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন দেশের ইতিহাসবিদদের বিরুদ্ধে ইতিহাস বিকৃত করার অভিযোগ তুলেছিলেন।

Advertisement
আরও পড়ুন