(বাঁ দিকে) ভারতীয় সেনার কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
সিঁদুর অভিযান-পরবর্তী সময়ে কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে নিয়ে কুমন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ভর্ৎসনাও করেছিল তাঁকে। এ বার ফের বিতর্কে জড়ালেন মধ্যপ্রদেশের সেই মন্ত্রী বিজয় শাহ। এ বার মধ্যপ্রদেশ সরকারের মহিলা ভাতা প্রকল্প ‘লাড়লী বহনা’ নিয়ে মন্ত্রীর বক্তব্য ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
নতুন বছরে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদবকে সংবর্ধনা দিতে একটি সভা আয়োজনের পরিকল্পনা চলছে। সেই সভায় ‘লাড়লী বহনা’ প্রকল্পের সুবিধাপ্রাপক অন্তত ৫০ হাজার মহিলার জমায়েত চান আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী বিজয়। শনিবার রতলামে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন তিনি। ওই বৈঠকেই মহিলা ভাতার সুবিধাপ্রাপকদের প্রসঙ্গ উঠে আসে। দাবি করা হচ্ছে, ওই বৈঠকেই মন্ত্রী জানান, সরকার ‘লাড়লী বহনা’ প্রকল্পের আওতায় কোটি কোটি টাকা বিলি করছে। তাই এই মুখ্যমন্ত্রীকে সম্মান জানাতে এই প্রকল্পের সুবিধাপ্রাপকদের এগিয়ে আসা উচিত। যাঁরা তা করবেন না, প্রকল্পের জন্য তাঁদের আবেদন স্থগিত করে দেওয়া হতে পারে, এমন আভাসও মন্ত্রী দিয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। তা নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত।
জানা যাচ্ছে, রতলামে জেলা উন্নয়ন উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক চলাকালীন আধিকারিকদের কাছ থেকে মহিলা ভাতার সুবিধাপ্রাপকদের সংখ্যা জানতে চান মন্ত্রী। ওই সময়ে আধিকারিকেরা তাঁকে জানান, রতলাম জেলায় প্রায় আড়াই লক্ষ মহিলা রয়েছেন, যাঁরা এই প্রকল্পের সুবিধা পান। দাবি করা হচ্ছে, ওই সময়েই মন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রিত্বের পদে (মোহনের) দু’বছর পূরণ হচ্ছে। তাই তাঁকে সম্মান জানাতে আড়াই লক্ষ সুবিধাপ্রাপকের মধ্যে অন্তত ৫০ হাজার মহিলার এগিয়ে আসা উচিত।” তিনি আরও বলেন, “সরকার প্রতি মাসে ১৫০০ টাকা করে দিচ্ছে। তাই দুই বছরে অন্তত একবার ধন্যবাদ পাওয়া প্রাপ্য। আমরা খাবারের ব্যবস্থাও করব। যারা আসবে না, তাদের কী হয়, তা আমরা দেখব।”
এর পরে বিজয় আরও কিছু মন্তব্য করেন। তাঁর ওই মন্তব্যই মূলত বিতর্ককে উস্কে দেয়। অভিযোগ, ওই সভায় মন্ত্রী বলেন, “মহিলা ভাতা ২৫০ টাকা বাড়ানোর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। যদি কারও আধার লিঙ্ক করা না থাকে, তাঁর আবেদন স্থগিত রাখা হবে। ফলে নিজে থেকেই তা বন্ধ হয়ে যাবে। তখন সকলে চলে আসবে।” মন্ত্রীর এই বক্তব্য ঘিরেই বিতর্ক দানা বাঁধে। অনেকেই অভিযোগ করছেন, সভায় না-গেলে মহিলা ভাতা আটকে দেওয়া হবে, সে দিকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন মন্ত্রী।
শনিবারের ওই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক দানা বাঁধতেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিজয়ও। মন্ত্রীর দাবি, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের একাংশ তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করছে বলেও দাবি মন্ত্রীর। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য ধারাবাহিক ভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে আমাদের বোনেরা আত্মনির্ভর হতে পারেন। তাঁদের প্রতি কোনও অসৎ উদ্দেশ্য থাকার প্রশ্নই নেই।” বিজয়ের ব্যাখ্যা, “আমি শুনেছিলাম কিছু মহিলা যোগ্য না হয়েও প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন। এর ফলে মানুষের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। বৈঠকে আমরা আলোচনা করেছি যে শুধুমাত্র যোগ্যেরাই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন। অযোগ্যদের প্রকল্পের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে।”