— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার প্রত্যাঘাত হিসাবে গত ৭ মে গভীর রাতে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালিয়েছিল ভারত। অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’। তার পর থেকেই শুরু হয়েছে সদ্যোজাত কন্যাদের নাম ‘সিঁদুর’ রাখার ধুম। শুধুমাত্র উত্তরপ্রদেশের কুশিনগরেই ১৭ জন সদ্যোজাতের নাম ‘সিঁদুর’ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
কুশিনগর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ আরকে শাহী পিটিআইকে জানিয়েছেন, কুশিনগরে গত ১০ এবং ১১ মে জন্ম নেওয়া ১৭ জন নবজাতকের নামকরণ করা হয়েছে ‘সিঁদুর’। এমনই এক প্রসূতি কুশিনগরের বাসিন্দা অর্চনা শাহীর কথায়, ‘‘পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দিয়েছে ভারত। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীকে সম্মান জানাতেই আমরা মেয়ের নাম ‘সিঁদুর’ রেখেছি।’’ ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পরই কুশিনগর মেডিক্যাল কলেজে একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। সিঁদুরের বয়স মোটে দু’দিন। কিন্তু তার জন্মের আগে থেকেই নাম ভেবে ফেলেছিলেন মা। অর্চনা বলেন, ‘‘পহেলগাঁওয়ে হামলার পর স্বামীহারা বিধবাদের জন্য ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। আমরা এতে গর্বিত। এখন আর ‘সিঁদুর’ কোনও নিছক শব্দ নেই, বরং এটি ভারতবাসীর আবেগ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’ অর্চনার কথায় সহমত তাঁর স্বামী অজিতও। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ের জন্মের আগেই আমি এবং অর্চনা এই নামটি ভেবেছিলাম। এই শব্দটি আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা।’’
আর এক প্রৌঢ় মদন গুপ্ত জানাচ্ছেন, ভারতীয় সেনার অভিযানের পরেই নবজাতকের নাম ‘সিঁদুর’ রাখতে চেয়েছিলেন তাঁর পুত্রবধূ কাজল। মদন পিটিআইকে বলেন, ‘‘এই ভাবে আমরা শুধু এই অভিযানকে শ্রদ্ধা জানাব না, বরং প্রতি বছর এই দিনটি উদ্যাপনও করব।’’ একই রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভাথাহি বাবু গ্রামের ব্যাসমুনিও। তিনি বলেন, ‘‘আমার মেয়ে যখন বড় হবে, তখন সে এই শব্দের প্রকৃত অর্থ বুঝতে পারবে। তাকে ভারতমাতার প্রতি কর্তব্যপরায়ণ এক নারী হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে সাহস জোগাবে এই শব্দবন্ধ।’’
প্রসঙ্গত, গত ৭ মে গভীর রাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের একাধিক জায়গায় প্রত্যাঘাতী হামলা চালায় ভারতীয় সেনা। মোট ন’টি জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ চালানো হয়। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বহাওয়ালপুর, মুরাদকে, সিয়ালকোটের একাধিক ইমারত। এর পরেই পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তানও। শেষমেশ শনিবার বিকেলে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় দুই দেশ। সোমবার সন্ধ্যায় দুই দেশের বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।