Bangladesh Crisis

হাদিহত্যার ষড়যন্ত্রকারী ভারতে? বাংলাদেশ পুলিশের দাবি ওড়াল মেঘালয় পুলিশ এবং বিএসএফ! আর কী জানাল ‘গ্রেফতারি’ নিয়ে

ওসমান হাদিকে খুনের মূল সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম ওরফে দাউদ খানের দুই সহযোগীকে গ্রেফতারের দাবি ওড়াল মেঘালয় পুলিশ এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুধু তা-ই নয়, ফয়সাল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকেছে, তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে মেঘালয় পুলিশ।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:৫৮
Meghalaya Police, BSF respond to Dhaka cops’ claims on Osman Hadi\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s death case

ওসমান হাদি। — ফাইল চিত্র।

ইলকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে খুনের মূল সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম ওরফে দাউদ খানের দুই সহযোগীকে গ্রেফতারের দাবি ওড়াল মেঘালয় পুলিশ এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুধু তা-ই নয়, ফয়সাল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকেছে, তার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে মেঘালয় পুলিশ।

Advertisement

হাদির খুনের তদন্তের গতিপ্রকৃতি কেমন? রবিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এনএন মহম্মদ নজরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য দেন। বিভিন্ন বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে তাঁর বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে দাবি করে, হাদিকে খুনের মূল ষড়যন্ত্রকারী ফয়সাল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে মেঘালয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন। আর ভারতে তাঁদের সাহায্য করেছেন পূর্তি এবং সামি! নজরুল জানিয়েছেন, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে মেঘালয়ে পালান ফয়সাল এবং আলমগীর শেখ।

বাংলাদেশ পুলিশের সেই দাবি নস্যাৎ করল মেঘালয় পুলিশ। একই সঙ্গে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরকে ‘অসত্য’ বলে দাবি করা হয়েছে। মেঘালয় পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্তা ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-কে বলেন, ‘‘বাংলাদেশ পুলিশের থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগাযোগ করা হয়নি। প্রতিবেদনে উল্লেখিত কোনও অভিযুক্তকে গারো পাহাড়ে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কোনও গ্রেফতারও হয়নি।’’

নজরুল ইসলামের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার বলেছিল, ‘‘আমাদের কাছে যা খবর, তা থেকে জানা গিয়েছে যে, হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে সন্দেহভাজনেরা মেঘালয়ে পালিয়েছেন। সীমান্ত পেরোনোর পর প্রাথমিক ভাবে ওই সন্দেহভাজনেরা পূর্তি নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করেন। তার পর সামি নামে এক ট্যাক্সিচালক সন্দেহভাজনদের তুরা শহরে পৌঁছে দেন।’’ তবে এই দাবির কোনও সত্যতা নেই বলে জানিয়ে মেঘালয় পুলিশ। তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তার কথায়, ‘‘পূর্তি বা সামিকে মেঘালয়ের কোথাও শনাক্ত বা গ্রেফতার করা হয়নি। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের থেকে যাচাই না-করেই বিষয়টি নিয়ে বর্ণনা করা হয়েছে।’’

মেঘালয় পুলিশকে সমর্থন করে বিবৃতি দিয়েছে বিএসএফের (মেঘালয় ফ্রন্টিয়ার) প্রধান ওপি উপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে সন্দেহভাজনদের মেঘালয়ে প্রবেশের কোনও প্রমাণ নেই। বিএসএফ এ ধরনের কোনও ঘটনা সম্পর্কে অবগত নয়। এই দাবিগুলি ভিত্তিহীন এবং বিভ্রান্তিকর।’’

তবে মেঘালয় পুলিশ এবং বিএসএফ এ-ও জানিয়েছে, তারা সব সময় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করতে উন্মুক্ত। পাশাপাশি জানানো হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। কোনও রকমের অনুপ্রবেশ আটকানো হচ্ছে।

গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন হাদি। সরকারি উদ্যোগে তাঁকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ছ’দিন পর তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরেই বাংলাদেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য এবং হাদির সমর্থকেরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। সংগঠিত গণরোষের কোপে তছনছ হয়ে যায় একাধিক সরকারি ও সাংস্কৃতিক ভবন, সংবাদপত্রের দফতর। হাদির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে অনেককে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। কিন্তু মূল হত্যাকারী ফয়সাল করিম এবং তাঁর প্রধান আলমগীর শেখের খোঁজ মেলেনি। বাংলাদেশ পুলিশ দাবি করেছিল, তাঁরা ভারতে পালিয়েছেন। যদিও রবিবার সেই দাবি নস্যাৎ করলেন ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।

Advertisement
আরও পড়ুন