মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের সংস্থার সঙ্গে আইনি লড়াইয়ের পর সমাজমাধ্যম সংক্রান্ত নিয়ম পাল্টাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
আমেরিকার ধনকুবের ইলন মাস্কের সংস্থা এক্স-এর সঙ্গে আইনি লড়াইয়ের পর সমাজমাধ্যম থেকে তথ্য সরানোর নিয়মে বদল আনছে কেন্দ্রীয় সরকার। আপত্তিকর, বেআইনি তথ্য ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, এক্স বা ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে থাকলে কারা তা ‘ব্লক’ করার নির্দেশ দিতে পারবেন, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে কোনও তথ্য সমাজমাধ্যম থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন পড়লে তার কারণ ব্যাখ্যা করতেও বলা হচ্ছে। এ ভাবে সরকারি আধিকারিকদের ক্ষমতা বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রক বুধবার রাতে এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
এত দিন যে কোনও সমাজমাধ্যম প্লাটফর্মে আপত্তিকর তথ্য দেখলে ২০০০ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইন অনুসারে তা সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হত। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সেই ‘কন্টেন্ট ব্লকিং’ আইনে কিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। এ বার থেকে শুধুমাত্র সিনিয়র আধিকারিকেরাই এই সংক্রান্ত নির্দেশ দিতে পারবেন। যাঁরা কোনও বিভাগের জয়েন্ট সেক্রেটারি বা সমতুল পদে রয়েছেন, তাঁদের এই দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর চেয়ে নিচু পদে থাকা কোনও আধিকারিক সমাজমাধ্যমের তথ্য সরানোর নির্দেশ দিতে পারবেন না। এ ছাড়া, সংশ্লিষ্ট সমাজমাধ্যম কর্তৃপক্ষকে নির্দেশের সঠিক কারণ এবং এই সংক্রান্ত আইন বিশদে জানাতে হবে। পুলিশের ক্ষেত্রে ডিআইজি (ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ এই নির্দেশিকা জারি করতে পারবেন।
গত মাসে এক্স কর্তৃপক্ষের একটি আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল কর্নাটক হাই কোর্ট। সমাজমাধ্যম থেকে তথ্য সরানোর নির্দেশের ক্ষেত্রে সরকারি আধিকারিকদের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল মাস্কের সংস্থা। তাদের আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। তবে হাই কোর্ট জানিয়েছিল, সমাজমাধ্যমে নিয়মিত নজরদারি আবশ্যিক। বিশেষত, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ক্ষেত্রে এটি প্রয়োজন। তা না হলে সংবিধানে বর্ণিত নাগরিক মর্যাদার অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের নতুন বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে আদালতের এই পর্যবেক্ষণের যোগ আছে বলে অনেকে মনে করছেন।
নতুন নিয়ম কেন্দ্র এবং রাজ্য, উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। আদালতের নির্দেশের ফলে এই পদক্ষেপ কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি। এক বরিষ্ঠ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমাদের মনে হয়েছে, একটা ব্যবস্থা নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন। যে কোনও আধিকারিক এই ধরনের নির্দেশিকা জারি করতে পারবেন না। খুব বরিষ্ঠ আধিকারিকদের হাতে এই ক্ষমতা থাকবে।’’ উল্লেখ্য, বর্তমান নিয়মাবলি অনুযায়ী, সমাজমাধ্যম থেকে তথ্য সরানোর নির্দেশ দিতে পারেন যে কোনও ‘উপযুক্ত সরকারি আধিকারিক’। কেন্দ্রের এই নতুন নিয়ম আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে কার্যকর হতে চলেছে।