বিছানায় বাবা-মায়ের মাঝে পড়ে দম আটকে মৃত্যু সদ্যোজাত শিশুর। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
বাবা-মা ঘুমোচ্ছিলেন। একরত্তি সন্তানকে অতি যত্নে দু’জনের মাঝে শুইয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু সেই যত্নই কাল হল! বাবা-মায়ের চাপে বিছানাতেই দমবন্ধ হয়ে গেল সদ্যোজাতের। টেরও পেলেন না বাবা-মা। সকালে উঠে সন্তানকে কোলে নিয়ে মা বুঝতে পারলেন, শিশু নিথর। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
উত্তরপ্রদেশের অমরোহা শহরের গজরৌলা এলাকার ঘটনা। গত ১০ নভেম্বর সাদ্দাম আব্বাসি এবং তাঁর স্ত্রী আসমার কোলে এসেছিল ফুটফুটে এক পুত্রসন্তান। তার নাম দেওয়া হয় সুফিয়ান। গত শনিবার রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় সেই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, সদ্যোজাতকে ঘুম পাড়়িয়ে বিছানার মাঝে রেখেছিলেন সাদ্দাম ও আসমা। নিজেরা তার দু’পাশে শুয়েছিলেন। কিন্তু ঘুমের ঘোরে বাবা-মা কী ভাবে ন়়ড়াচড়া করেছেন, তা তাঁদের খেয়াল নেই। সেই সময়েই সদ্যোজাতের গায়ের উপর তাঁরা উঠে পড়ে থাকতে পারেন, দাবি পরিবারের। বাবা ও মায়ের মাঝে শিশু এমন ভাবে আটকে পড়েছিল যে, তার দম আটকে যায়। ২৬ দিনের শিশু সেই ভার সহ্য করতে পারেনি।
সকালে ঘুম ভাঙতেই শিশুকে কোলে তুলে নেন মা। তাকে খাওয়ানোর তোড়জোড় করেন। কিন্তু ছেলের শরীরে কোনও সাড় পান না। দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা সদ্যোজাতকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আত্মীয়েরা জানিয়েছেন, জন্মের পর থেকেই ওই শিশু দুর্বল ছিল। তার শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। জন্ডিসও ধরা পড়েছিল। ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছিল একরত্তি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, দমবন্ধ হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে। শুনে হাসপাতালেই বাবা-মা বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। পরে তাঁদের বুঝিয়ে শান্ত করানো হয়। এই ঘটনায় থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, সদ্যোজাতকে কখনও নিজেদের সঙ্গে বিছানায় নিয়ে ঘুমোনো উচিত নয় বাবা-মায়ের। তাতে দুর্ঘটনাজনিত কারণে তার জীবনের ঝুঁকি থেকে যায়। সদ্যোজাত শিশুকে আলাদা রাখা দরকার। উত্তরপ্রদেশের ঘটনাও আরও এক বার চোখে আঙুল দিয়ে তা দেখিয়ে দিল।