গোয়ার নৈশক্লাবের অন্যতম মালিক দুই ভাই (বাঁ দিকে) গৌরব লুথরা এবং সৌরভ লুথরা (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
গোয়ার নৈশক্লাবে অগ্নিকাণ্ডের পাঁচ দিন পর তাইল্যান্ডে ধরা পড়লেন ক্লাবের দুই মালিক সৌরভ ও গৌরব লুথরা। বৃহস্পতিবার তাইল্যান্ডের ফুকেট থেকেই তাঁদের আটক করেছে সে দেশের পুলিশ। এ বার দুই ভাইকে ভারতে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই তার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। শীঘ্রই লুথরা ভাইদের আনতে ফুকেটের উদ্দেশে রওনা দেবে গোয়া পুলিশের একটি দল।
ফেরার দুই ভাইয়ের পাসপোর্ট বাতিল করতে চেয়ে বুধবার কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছিল গোয়া সরকার। এ বিষয়ে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ চেয়ে বিদেশ মন্ত্রকের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। সেই মতো বুধবার রাতেই সৌরভ ও গৌরবের পাসপোর্ট সাসপেন্ড বা সাময়িক ভাবে অবৈধ করে দেওয়া হয়। এর পর আর তাইল্যান্ড ছেড়ে অন্যত্র পালানোর উপায়ও ছিল না তাঁদের। সেই আবহেই অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে ধরা পড়ে যান দুই ভাই।
গত ৬ ডিসেম্বর গভীর রাতে গোয়ার বার্চ বাই রোমিও লেন ক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয় ২৫ জনের। তার পর থেকেই ফেরার ছিলেন ক্লাবের প্রধান দুই মালিক। পর দিন ভোরের উড়ানে তাইল্যান্ডে পালিয়ে যান তাঁরা। তদন্তে নেমে জানা যায়, অগ্নিকাণ্ডের দিন রাত ১টা ১৭ মিনিট নাগাদ একটি অনলাইন ভ্রমণ সংক্রান্ত বুকিং সংস্থার ওয়েবসাইটে লগইন করেন লুথরা ভাইয়েরা। তার পর ভোর সাড়ে ৫টার বিমানে চেপে দিল্লি থেকে রওনা দেন ফুকেটের উদ্দেশে। গৌরব এবং সৌরভের নাগাল পেতে ‘ব্লু কর্নার নোটিস’ জারি করে ইন্টারপোল। জারি হয় লুক-আউট সার্কুলার (এলওসি)। কিন্তু খোঁজ মিলছিল না দুই ভাইয়ের।
এর মাঝে বুধবার তাইল্যান্ড থেকে দুই ভাই জানিয়ে দেন, গ্রেফতারির ভয়েই তাঁরা দেশে ফিরতে পারছেন না। দেশে ফিরলে যেন তাঁদের গ্রেফতার না-করা হয়, তা নিশ্চিত করতে আগাম জামিনের আবেদনও করেন তাঁরা। তাইল্যান্ড থেকে বুধবার লুথরা ভ্রাতৃদ্বয় দিল্লির আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল।
গোয়ার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন নৈশক্লাবের চিফ জেনারেল ম্যানেজার রাজীব মোদক, জেনারেল ম্যানেজার বিবেক সিংহ, বার ম্যানেজার রাজীব সিঙ্ঘানিয়া, গেট ম্যানেজার রিয়াংশু ঠাকুর, কর্মচারী ভারত কোহলি এবং নৈশক্লাবের আর এক মালিক অজয় গুপ্ত। ওই নৈশক্লাবের চার জন মালিক ছিলেন। লুথরা ভ্রাতৃদ্বয় এবং অজয়ের পাশাপাশি সুরেন্দ্রকুমার খোসলা নামে এক চতুর্থ ব্যক্তিও ছিলেন ক্লাবের অন্যতম অংশীদার। সৌরভ ও গৌরবকে নিয়ে মালিকদের তিন জন ধরা পড়লেও সুরেন্দ্র এখনও ফেরার। তাঁর বিরুদ্ধেও লুক আউট সার্কুলার জারি করা হয়েছে।