পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী তথা উপপ্রধানমন্ত্রী ইশাক দার। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা সব সময়ের জন্যই দ্বিপাক্ষিক। এতে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চায় না ভারত! এমনই দাবি করলেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী তথা উপপ্রধানমন্ত্রী ইশাক দার। ‘আল জাজ়িরা’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘অপারেশ সিঁদুর’-এর পর ভারতের সঙ্গে আলোচনার পথ তাঁরা খোলা রেখেছে। কিন্তু নয়াদিল্লি চায় না ভারত-পাক আলোচনায় অন্য কেউ মধ্যস্থতা করুক।
গত মে মাসে ‘অপারেশ সিঁদুর’-এর পর এবং জুলাই মাসে মার্কিন বিদেশমন্ত্রী মার্কো রুবিয়োর সঙ্গে ভারত নিয়ে আলোচনা হয়েছিল ইশাক দারের। সেই আলোচনার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘গত ১১ মে সকাল ৮টা ১৭ মিনিটে রুবিয়োর থেকে আমার কাছে যখন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব আসে তখন আমায় বলা হয়, খুব শীঘ্রই একটি নিরপেক্ষ জায়গায় ভারতের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হবে।’’ সেই আলোচনার ভবিষ্যৎ নিয়ে জুলাইয়ে আবার রুবিয়োর সঙ্গে তাঁর কথা হয় বলে দাবি পাক বিদেশমন্ত্রীর।
তাঁর কথায়, ‘‘২৫ জুলাই ওয়াশিংটনে পাকিস্তান-আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। ভারতের সঙ্গে আলোচনার বিষয় কতদূর এগোল সেই বৈঠকে রুবিয়োর কাছে তা জানতে চেয়েছিলাম। তিনি বলেছিলেন, ভারত না কি তাঁকে বলেছে, বিষয়টি দ্বিপাক্ষিক।’’ ইশাক দারের দাবি, ‘‘আমরা শান্তিপ্রিয় দেশ। আমরা বিশ্বাস করি আলোচনা এগিয়ে যাওয়া উচিত। তবে স্পষ্টতই, এতে দু’পক্ষের উপস্থিতির প্রয়োজন। তাই ভারত যদি আলোচনায় বসতে না চায়, তবে আমরা জোর করতে পারি না।’’
ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে কোনও সমস্যার সমাধান দ্বিপাক্ষিক স্তরে হবে, ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তির অন্যতম শর্তই ছিল। সেই কথা মনে করিয়ে দেন ইশাক দার। শুধু তা-ই নয়, ১৯৯৯ সালে লাহোর ঘোষণার সময় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী যখন পাকিস্তানে যান, তখন তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ় শরিফের সঙ্গে আলোচনার সময়ই একই বিষয় উঠে এসেছিল।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার নেপথ্যে পাকিস্তানের মদত রয়েছে, এমন অভিযোগ তুলেছে ভারত। যদিও পাকিস্তান প্রথম থেকেই সেই দাবি নস্যাৎ করে আসছে। তার পরেও পহেলগাঁও হত্যালীলার প্রত্যাঘাত হিসাবে ৭ মে ভারত ‘সিঁদুর’ অভিযান চালায়। তার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘাত শুরু হয়। চার দিনের সংঘাত থামে সংঘর্ষবিরতির মাধ্যমে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর প্রশাসন দাবি করে আসছে এই সংঘর্ষবিরতিতে হয়েছে তাদের মধ্যস্থতায়। যদিও ভারত প্রথম থেকেই দাবি করছে, কারও মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হয়নি! পাকিস্তান যদিও যুদ্ধবিরতিতে আমেরিকার ভূমিকার কথা জানিয়ে প্রশংসা করেছে।