পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মান। — ফাইল চিত্র।
গুরুদ্বার পরিদর্শনে যাবেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী। বাইরে খুলে রেখে যাবেন জুতো। যার-তার জুতো তো নয়, খোদ মুখ্যমন্ত্রীর! তাই সেই জুতো পাহারা দেওয়ার জন্য মোতায়েন করা হল দুই পুলিশকর্মীকে। সম্প্রতি এমনই ঘটনা ঘটেছে পঞ্জাবে। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বিরোধীদের বিতর্কের মুখে পড়েছেন আপ নেতা তথা সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিংহ মান।
রবিবার পঞ্জাবের গুরু গোবিন্দ সিংহ স্টেডিয়ামে ‘অমৃত ২.০’ প্রকল্পের অধীনে ১৩৮.৮৩ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ভগবন্ত। তার পর যান মুক্তসর সাহিব গুরুদ্বার দর্শনে। অবশ্য, তার অনেক আগে থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার যাবতীয় ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছিল। রীতিমতো নির্দেশিকা জারি করে কর্মীদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছিল মুক্তসর পুলিশ। এমনকি, ভগবন্তের জুতো পাহারা দেওয়ার জন্য সাত নম্বর গেটের বাইরে মোতায়েন করা হয়েছিল দুই সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীকে! রবিবার রাতে এ সংক্রান্ত নির্দেশিকাটি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক তরজা।
‘ভাইরাল’ ওই নির্দেশিকায় লেখা রয়েছে, হেড কনস্টেবল রূপ সিংহ এবং কনস্টেবল সরবত সিংহকে সাত নম্বর গেটে সাদা পোশাকে মুখ্যমন্ত্রীর জুতো পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। আম আদমি পার্টির সরকারের সমালোচনায় সরব হন বিরোধীরা। আপ নেতারা পুলিশ বাহিনীকে ব্যক্তিগত পরিচারক বলে মনে করেন, এমন অভিযোগও উঠতে থাকে। ‘ভিআইপি সংস্কৃতি’র নিন্দা করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবনীত নিট্টু বলেন, ‘‘এর থেকেই স্পষ্ট যে আপ-আমলে পঞ্জাবের পরিস্থিতি ঠিক কী রকম! এখানে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর জুতোই নিরাপদ নয়, তা হলে সাধারণ মানুষের আর কী হবে?’’ কংগ্রেস বিধায়ক পরগত সিংহও কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘এখন কি মুখ্যমন্ত্রীর জুতোও বিশেষ পুলিশি সুরক্ষা পায়? সরকার যদি পঞ্জাবে প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার রক্ষার জন্যও একই রকম তৎপরতা দেখাত!’’
আপ নেত্রী স্বাতী মালিওয়ালও বলেন, ‘‘যাঁরা ভিআইপি সংস্কৃতির অবসানের কথা বলত, তারা এখন পুলিশকে জুতো পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব দিচ্ছে! পুলিশ যদি নেতার জুতো পাহারা দেয়, তা হলে সাধারণ মানুষকে কে রক্ষা করবে? শিক্ষিত পুলিশকর্মীদের এই দায়িত্ব দিয়ে পুরো বাহিনীকে অপমান করা হচ্ছে।’’
যদিও এ সব সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছেন আপ নেতা। প্রশ্ন করা হলে উল্টে ব্যঙ্গাত্মক হাসি হেসে ভগবন্ত বলেন, ‘‘আজকাল আমাদের চপ্পল বা জুতোও রাজনৈতিক বিরোধীদের কাছে একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি, আমাদের মা-বোনেদের জামাকাপড়েও তাদের নজরদারি রয়েছে। তাদের কাছে এখন এ ধরনের বিষয়গুলিই (সমালোচনার জন্য) পড়ে আছে।’’