Manipur Situation

অখণ্ড মণিপুরেরই বার্তা রাষ্ট্রপতির

রাষ্ট্রপতির সফর বয়কট করে মেইতেই জঙ্গিদের যৌথ মঞ্চ দু’দিনের বন্‌ধ ডাকলেও কুকি-জ়ো কাউন্সিল প্রথমে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল। কিন্তু সরকারি অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, রাষ্ট্রপতি আশ্রয়হীন বহু মেইতেই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের জীবন ও ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনের আশ্বাস দেওয়ার পরেই তাল কাটে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৫
মণিপুরের সেনাপতি জেলায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। শুক্রবার।

মণিপুরের সেনাপতি জেলায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। শুক্রবার। ছবি: পিটিআই।

মেইতেই বনাম কুকি সংঘর্ষের দু’বছর সাত মাসের মাথায় রাষ্ট্রপতির শাসনাধীন মণিপুরে দু’দিনের সফর সারলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি ইম্ফলে আশ্রয় শিবিরের বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করেন। দেখেন পোলো খেলা। অংশ নেন নাগরিক সংবর্ধনায়। আজ নাগা এলাকা সেনাপতিতে সফর করেন তিনি। কিন্তু সফরে কুকি এলাকা না থাকায় ও রাষ্ট্রপতি তাঁর ভাষণে মণিপুর বিভাজনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে কুকিদের মধ্যে।

রাষ্ট্রপতির সফর বয়কট করে মেইতেই জঙ্গিদের যৌথ মঞ্চ দু’দিনের বন্‌ধ ডাকলেও কুকি-জ়ো কাউন্সিল প্রথমে তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল। কিন্তু সরকারি অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, রাষ্ট্রপতি আশ্রয়হীন বহু মেইতেই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের জীবন ও ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনের আশ্বাস দেওয়ার পরেই তাল কাটে। কাংপোকপি জেলার একাধিক কুকি সংগঠন ঘোষণা করে, শুক্রবার সেনাপতি জেলায় রাষ্ট্রপতির সরকারি অনুষ্ঠানে তারা উপস্থিত থাকবে না। কুকি ইনপি সদর হিলস সংগঠনের অভিযোগ, সফরে শুধুমাত্র নাগা-অধ্যুষিত সেনাপতিকে গুরুত্ব দেওয়া হলেও হিংসায় সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত কুকি-জ়ো জনগোষ্ঠীর এলাকায় রাষ্ট্রপতির কোনও সফর নেই। এই ঘটনা পক্ষপাতমূলক ও হতাশাজনক।

আজ সকালে ইম্ফলের নুপি লাল স্মারক কমপ্লেক্সে ৮৬তম নুপি লাল দিবসে বিপ্লবী বীরাঙ্গনাদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি। ১৯০৪ ও ১৯৩৯ সালে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে নারীদের নেতৃত্বে দু’টি ঐতিহাসিক আন্দোলনের স্মরণে প্রতি বছর ১২ ডিসেম্বর নুপি লাল পালিত হয়। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘মণিপুরের নারীদের সাহসিকতার কাহিনি দেশের গর্ব। এই আন্দোলনগুলি ছিল মণিপুরের মহিলাদের সম্মিলিত প্রতিবাদের এক ঐতিহাসিক দলিল। সমাজের অগ্রগতি নারীর মর্যাদা রক্ষার মধ্যেই নিহিত।”

রাষ্ট্রপতি পরে পুজো দেন শ্রীগোবিন্দজি মন্দিরে। সেখান থেকে রওনা দেন সেনাপতি জেলায়। সেখানকার জনসভায় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। সেনাপতিতে জনসভায় রাষ্ট্রপতি বলেন, “কেন্দ্র মণিপুরের প্রতিটি সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলোচনা করে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিশীল উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।” পাহাড়-সমতলকে একই ভূমির দুই অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে উল্লেখ করে তিনি সব সম্প্রদায়কে শান্তি, বোঝাপড়া ও পুনর্মিলনের পথে এগোনোর আহ্বান জানান। তিনি বুঝিয়ে দেন, কুকিদের পৃথক প্রশাসনের দাবি মানা হচ্ছে না।

আরও পড়ুন