Tejas Crash in Dubai

শূন্যে উল্টে গিয়ে আর সোজা হতে পারেনি তেজস! ইঞ্জিন কি জ্বলে উঠেছিল শেষ মুহূর্তে? ঠিক কী ঘটেছিল? ভুল হল কোথায়

শুক্রবার দুবাইয়ের স্থানীয় সময় দুপুর ২টো ৮ মিনিটে তেজস ভেঙে পড়ার পর বায়ুসেনা বিবৃতি জারি করে পাইলটের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে দুর্ঘটনার কোনও কারণ জানানো হয়নি।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:০১
দুবাইয়ের এয়ার শো-তে ভারতীয় যুদ্ধবিমান তেজস। শুক্রবার দুর্ঘটনার আগে।

দুবাইয়ের এয়ার শো-তে ভারতীয় যুদ্ধবিমান তেজস। শুক্রবার দুর্ঘটনার আগে। ছবি: পিটিআই।

দুবাইয়ে এয়ার শো চলাকালীন ভেঙে পড়েছে ভারতের তৈরি যুদ্ধবিমান তেজস। মৃত্যু হয়েছে পাইলট উইং কমান্ডার নমন স্যালের। কিন্তু কী ভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটল? ঠিক কী ঘটেছিল শেষ মুহূর্তে? আকাশে কোন কৌশলটি দেখাতে গিয়েই বা পাইলট ব্যর্থ হলেন?

Advertisement

এখনও পর্যন্ত ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে দুর্ঘটনার কোনও কারণ জানানো হয়নি। শুক্রবার দুবাইয়ের স্থানীয় সময় দুপুর ২টো ৮ মিনিটে তেজস ভেঙে পড়ার পর বায়ুসেনা বিবৃতি জারি করে পাইলটের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, আকাশে উড়তে উড়তে আচমকা নীচে নামতে শুরু করছে ভারতীয় যুদ্ধবিমান। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সজোরে আছড়ে পড়ছে মাটিতে এবং তাতে আগুন জ্বলে উঠছে। পুরু কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছিল দুবাইয়ের ওই এলাকার আকাশ। আগুনে বিস্ফোরণও চোখে পড়েছে বহু দূর থেকে।

সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত তেজস একটি লাইট কমব্যাট এয়ারক্র্যাফ্‌ট। এর ব্যর্থতার হার অত্যন্ত কম। ২৪ বছরের ইতিহাসে এই নিয়ে মাত্র দু’বার তেজস ভেঙে পড়ল। কৌতূহলের বিষয় হল, দুর্ঘটনার এক দিন আগেই তেজস নিয়ে সমাজমাধ্যমে ছড়ানো কিছু খবরকে ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিয়েছিল ভারত সরকার। সমাজমাধ্যমে রটে গিয়েছিল, দুবাইয়ের এয়ার শো-তে ভারত থেকে যে তেজস এমকে১ যুদ্ধবিমান পাঠানো হয়েছে, তার জ্বালানি লিক করছে। বক্তব্যের সপক্ষে কিছু ছবি এবং ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল, তেজস থেকে তরল পদার্থ গড়িয়ে পড়ছে। পিআইবি-র তরফে জানানো হয়, এই খবর সম্পূর্ণ ভুয়ো। ভিডিয়োতে যে তরল দেখা গিয়েছে, তা আদৌ তেল নয়। জল। ইচ্ছাকৃত ভাবেই ওই জল ছাড়া হচ্ছিল। এটি নিয়মমাফিক প্রক্রিয়া।

এখন প্রশ্ন, তবে শুক্রবারের দুর্ঘটনা ঘটল কী ভাবে?

বিশেষজ্ঞদের একাংশ ভিডিয়ো দেখে জানিয়েছেন, শূন্যে তেজস নিয়ে একটি বিশেষ কৌশল দেখানোর পরিকল্পনা ছিল পাইলটের। তা ‘ব্যারেল রোল’ নামে পরিচিত। এই কৌশলে জেট এক বার উল্টে গিয়ে আবার সোজা হয় এবং গোলাকার কক্ষপথে ঘুরতে থাকে। যুদ্ধবিমানের পক্ষে এটি খুব একটা কঠিন কৌশল নয়, মত বিশেষজ্ঞদের। তবে এতে পাইলটকে সামান্য সময়ের জন্য বিমানের মধ্যে উল্টে থাকতে হয়। অর্থাৎ, তাঁর মাথা নীচে এবং পা উপরে চলে যায়। এই সময়েই তেজসে গোলমাল হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।

শুক্রবার বিশেষ কৌশল উপস্থাপনের জন্য তেজস যুদ্ধবিমানটিকে প্রথমে বেশ খানিকটা উপরে তুলেছিলেন পাইলট। তার পর উল্টেও যান। উল্টে যাওয়ার পরেই বিমানটি নীচের দিকে নামতে শুরু করে। আর সোজা হয়ে উপরে উঠতে পারেনি। ওই সময় পাইলট বিমানের নিয়ন্ত্রণ হারান। মনে করা হচ্ছে, মাটির সঙ্গে বিমানের দূরত্ব অনেকটা কমে এসেছিল। তাই কৌশলটি সম্পূর্ণ করা যায়নি। অনেকে বলছেন, উল্টে যাওয়ার পর আবার সোজা হয়ে উপরের দিকে উঠতে যে গতির প্রয়োজন হয়, বিমানে সেই গতি ছিল না। কেউ কেউ আবার ইঞ্জিনের ত্রুটির দিকে আঙুল তুলছেন। তাঁদের মতে, শেষ মুহূর্তে তেজসের ইঞ্জিনটিতে কোনও কারণে আগুন ধরে গিয়েছিল। পাইলট তাই আর পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেননি। ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হলেও তেজসের ইঞ্জিন এসেছে আমেরিকার সংস্থা জেনারেল ইলেকট্রিক থেকে।

Advertisement
আরও পড়ুন