Plane Crash in Ahmedabad

দুঃস্বপ্নের ড্রিমলাইনার! প্রযুক্তিগত ত্রুটির অভিযোগ উঠেছিল এক যুগ আগেই, গুরুত্ব দেয়নি বোয়িং?

২০০৭ সালে বাজারে আনার সময় বোয়িং কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিলেন, ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার পৃথিবীর নিরাপদতম বিমান। কিন্তু বিমানটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল কয়েক বছরের মধ্যেই।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৫ ১৮:৩৭
Several questions on Boeing 787-8 Dreamliner after Ahmedabad Plane Crash

মেঘানিনগরের বিজে মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাসের উপর পড়ে রয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই-১৭১-র ধ্বংসাবশেষ। ছবি: পিটিআই।

গুজরাতের অহমদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই১৭১-র ভেঙে পড়া ভারতের উড়ান-ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ দুর্ঘটনা বলে চিহ্নিত হয়েছে। গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী-সহ ২৩০ জন যাত্রী এবং ১২ জন বিমানকর্মী (পাইলট এবং তাঁর সহকারী-সহ) ছিলেন ওই উড়ানে। আশঙ্কা করা হচ্ছে তাঁদের অধিকাংশই আর বেঁচে নেই। লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরগামী ওই বিমানটি আমেরিকার বোয়িং সংস্থার তৈরি ‘৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার’ শ্রেণির। এই প্রথম বার বড় দুর্ঘটনায় পড়লেও অতীতে এই মডেলটির ‘প্রযুক্তিগত ত্রুটি’ একাধিক বার আলোচনায় এসেছে।

Advertisement

এই মডেলটির উড়ান শুরু হয়েছিল ১৮ বছর আগে, ২০০৭ সালে। অহমদাবাদের সর্দার বল্লভভাই পটেল বিমানবন্দরের অদূরে ভেঙে পড়া ড্রিমলাইনারটিও প্রায় ১২ বছরের পুরনো। বাজারে আনার সময় বোয়িং দাবি করেছিল, তৈরি ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার পৃথিবীর নিরাপদতম বিমান। দু’টি রোলস রয়েস ইঞ্জিনের সাহায্যে চলা বিমানটি উড়ানের সময় বিপর্যয়ের মুখে পড়বে না বলেও জানিয়েছিল তারা। প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে প্রথম দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। মাঝ আকাশে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আপৎকালীন অবতরণে বাধ্য হয়েছিল। আহমদাবাদে এই মডেলের বিমানের ষষ্ঠ দুর্ঘটনা ঘটল।

যদিও কিছু দিন আগেই বোয়িং গর্ব করে জানিয়েছিল, ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলটি এ পর্যন্ত ১০০ কোটিরও বেশি যাত্রী পরিবহণ করেছে। বিশ্বজুড়ে ১,১৭৫টিরও বেশি ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার প্রায় ৫০ লক্ষ ফ্লাইট নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করেছে বলেও জানিয়েছিলেন বোয়িং কর্তৃপক্ষ। ঘটনাচক্রে, ড্রিমলাইনারের ‘উত্তরসূরি’ ৭৩৭ ম্যাক্স-৮ বিমানকেও ‘অতি নিরাপদ’ পদে চিহ্নিত করেছিল বোয়িং। এয়ারবাস ৩২০-র প্রতিযোগী হিসেবে উঠে এসেছিল ম্যাক্স। কিন্তু ২০১৮ থেকে ধারাবাহিক ত্রুটি ধরা পড়া এবং কয়েকটি দুর্ঘটনার জেরে বিশ্বের বেশ কিছু উড়ান সংস্থা ওই বিমানকে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করেছিল।

৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারের ক্ষেত্রে অবশ্য তেমনটা ঘটেনি এখনও। যদিও শতাধিক বার বিভিন্ন যান্ত্রিক বিভ্রাটের শিকার হয়েছে এই বিমান। প্রায় এক যুগ আগেই ওই বিমানে ব্যবহৃত লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল, হাইড্রলিকের কার্যকারিতা নিয়েও। সে সময় দ্রুত নতুন নকশা ও সুরক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে সমস্যার নিষ্পত্তির কথা জানিয়েছিল বোয়িং। কিন্তু সমস্যার পুরোপুরি নিরসন হয়েছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল বৃহস্পতিবারের দুর্ঘটনা। বস্তুত কয়েক বছর আগেই বোয়িং সংস্থার প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ার স্যাম সালেফোর অভিযোগ করেছিলেন, দ্রুত বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য বোয়িং কর্তৃপক্ষ ৭৭৭ এবং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সতর্কতা বজায় রাখছেন না। সেই মাসুলই কি দিল আহমদাবাদ?

Advertisement
আরও পড়ুন