বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
আর এক সপ্তাহ পরে শুরু হয়ে যাবে নতুন বছর। সেই বছরেই মার্চ-এপ্রিল মাসে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। সে কথা মাথায় রেখে এ বার সতীর্থ বিধায়কদের নিজেদের বিধানসভা এলাকায় বেশি বেশি করে সময় দেওয়ার নির্দেশ দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার দুপুরে বিধানসভায় এসেছিলেন তিনি। সেখানেই এক ঘরোয়া অনুষ্ঠান চলাকালীন শালতোড়ার বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির কাছে বিরোধী দলনেতা জানতে চান, ‘‘তুমি কোন কাজে কলকাতায় এসেছ?’’ জবাবে চন্দনা বলেন, ‘‘বিধানসভার স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে এসেছি। আজই শালতোড়ায় ফিরে যাব।’’
ওই সময় বিধানসভায় বিজেপি পরিষদীয় দলের ঘরে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচেতক শঙ্কর ঘোষ, পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়, কাঁথি দক্ষিণের বিধায়ক অরূপকুমার দাস, কাঁথি উত্তরের বিধায়ক সুমিতা সিংহ, তুফানগঞ্জের বিধায়ক মালতি রাভা এবং ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। সব বিধায়কের উদ্দেশে শুভেন্দু বলেন, ‘‘ভোট এসে গিয়েছে, তাই শুধু চন্দনাই নয়, আপনাদেরও বলব নিজ নিজ এলাকায় থেকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়ান।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিধানসভা বা কলকাতায় কোনও কাজ থাকলে, সকাল সকাল আসুন আর বিকেলের মধ্যে কাজ সেরে নিজের কেন্দ্রে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ, এই সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’’
প্রসঙ্গত, শুভেন্দুর এমন নির্দেশ প্রসঙ্গে এক বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘‘শুভেন্দুদা বিরোধী দলনেতা হিসাবে যেমন সারা রাজ্য চষে বেড়ান, তেমনই নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামেও সময় দেন। যাঁরা তাঁকে দীর্ঘ দিন ধরে চেনেন, তাঁরা জানেন, ভোট-রাজনীতি নিয়ে তিনি কতটা সচেতন। তাই তো ২০২১ সালে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েও জিততে পারেননি।’’ ওই বিধায়ক আরও বলেন, ‘‘শুভেন্দুবাবু ১৯৯৫ সাল থেকে কাউন্সিলর ছিলেন। ২০০৬ সালে প্রথম বার বিধায়ক হন আর ২০০৯ সাল থেকে সাংসদ ছিলেন। এই সময় জনপ্রতিনিধি হওয়ার পাশাপাশি কখনও রাজ্যের মন্ত্রী, আবার কখনও বিরোধী দলনেতার দায়িত্ব সামলেছেন। হাজারো ব্যস্ততার মাঝে কী ভাবে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে সময় দিতে হয়, তা-ও তাঁর থেকে শিখতেই হবে। তাই তিনি যেমন নির্দেশ দিয়েছেন, আমি আশা করব বিজেপি পরিষদীয় দলের সদস্যেরা তা মেনে চলবেন।’’
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৭৭টি আসনে জয়ী হয়ে রাজ্যের প্রধান বিরোধীদলের মর্যাদা পায় বিজেপি। বিরোধী দলনেতা হন শুভেন্দু। কিন্তু সাংসদপদ ধরে রাখতে নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার বিধায়কপদ থেকে ইস্তফা দিলে বিজেপির বিধায়কসংখ্যা নেমে আসে ৭৫ জনে। এর পর ধাপে ধাপে বেশ কিছু বিধায়ক দলত্যাগ করে তৃণমূলে যোগদান করলে বিধায়কসংখ্যা কমতে থাকে বিজেপির। এর মধ্যে আবার ধূপগুড়ির বিধায়কের মৃত্যু হয়। বর্তমানে ৬৫ জন বিধায়ক নিয়ে বিরোধীদল পরিচালনা করছেন শুভেন্দু। তিনি চান, সব সতীর্থ বিধায়ক জিতে বিধানসভায় ফেরত আসুন। তাই নিজ নিজ এলাকায় মনোনিবেশ করতে বিধায়কদের নির্দেশ দিয়েছেন।