Narendra Modi-Kalyan Banerjee

বিরোধীদের কমিশন অভিযানের দিনই মোদীর পাশে তৃণমূল সাংসদ! সকৌতুকে প্রধানমন্ত্রী বললেন, ‘সব কল্যাণ হ্যায় তো?’

গত সোমবার লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক পদ থেকে ইস্তফা দেন কল্যাণ। মঙ্গলবার তা গৃহীত হয় দলনেত্রী মমতার তরফে। ইস্তফা দেওয়ার আট দিনের মাথাতেই মোদীর পাশে কল্যাণের উপস্থিতি নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৫ ২০:৩০
TMC MP Kalyan Banerjee was present with PM Narendra Modi at the inauguration of newly constructed flats for MP

দিল্লিতে সরকারি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং শ্রীরামপুরের প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

এসআইআরের নামে ‘ভোট চুরি’-র অভিযোগে বিরোধী দলগুলির নির্বাচন কমিশন অভিযানের দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশে দেখা গেল এক তৃণমূল সাংসদকে। শুধু তা-ই নয়। তাঁর সঙ্গে সকৌতুকে কথাও বললেন মোদী। তিনি শ্রীরামপুরের প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

দিল্লির বাবা খরক সিংহ মার্গে নবনির্মিত সাংসদ আবাসনের উদ্বোধন ছিল সোমবার। ১৮৪টি ফ্ল্যাটের এই আবাসনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এই অনুষ্ঠানে ছিলেন কল্যাণও। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, সকলের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করার পরে কল্যাণের সামনে এসে স্মিত হেসে মোদী বলেন, ‘ক্যা কল্যাণজি, কল্যাণ হ্যায় তো?’ জবাবে কল্যাণ ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দেন। ফের মোদী জিজ্ঞেস করেন, ‘সব কুছ কল্যাণ হ্যায় তো?’ ফের কল্যাণ জানান, তাঁর সব কিছু ‘কল্যাণমূলক’ই রয়েছে।

ঘটনাক্রম এখানেই শেষ নয়। অনুষ্ঠানের শেষে মঞ্চে ছিল নির্দিষ্ট কয়েকটি চেয়ার। সেখানেই ছবি তোলার তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু মোদী জানান, তিনি সকলকে সঙ্গে নিয়ে ছবি তুলতে চান। মঞ্চে রাখা চেয়ার সরানোর কথা বলেন। তার পর নিজেই চেয়ার সরাতে উদ্যোগী হন প্রধানমন্ত্রী। সেই সময়ে কল্যাণও হাত লাগান চেয়ার সরাতে। তার পর সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ছবি তোলেন মোদী। সেই ফ্রেমে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর ঠিক পাশে রয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা (অনেকেই বলেন, কল্যাণের সঙ্গে তাঁর অভিন্নহৃদয় সম্পর্ক), কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর, কিরেন রিজিজু প্রমুখ।

কমিশন অভিযানে গরহাজির থাকার কারণ সম্পর্কে কল্যাণ জানিয়েছেন, এসআইআর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে তৃণমূল যে মামলা করেছে, সেই কাজেই তিনি সুপ্রিম কোর্টে ছিলেন। সমগ্র বিষয়টি সম্পর্কে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবহিত বলেও জানান তিনি। তার পর তিনি যান বাবা খরক সিংহ মার্গের সরকারি অনুষ্ঠানে। সংসদের হাউস স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য কল্যাণ। এই আবাসন তৈরির শেষ পর্বে স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য হিসাবে আসবাবপত্র এবং অন্দরসজ্জার বিষয় দেখভাল করেছেন কল্যাণই।

গত সোমবার লোকসভায় তৃণমূলের মুখ্যসচেতক পদ থেকে ইস্তফা দেন কল্যাণ। তার পর মঙ্গলবার তা গৃহীত হয় দলনেত্রীর তরফে। ইস্তফা দেওয়ার আট দিনের মাথাতেই মোদীর পাশে কল্যাণের উপস্থিতি নিয়ে তৃণমূলের মধ্যেও গুঞ্জন শুরু হয়েছে। দলের উপর ‘চাপ’ তৈরি করতেই কল্যাণ সোমবারের সরকারি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন কি না, সেই প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। যদিও কল্যাণ-ঘনিষ্ঠেরা তা মানছেন না। তাঁদের বক্তব্য, মুখ্যসচেতক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরে মমতা সম্পর্কে সমালোচনামূলক মন্তব্য করলেও পরে তা নিয়ে প্রকাশ্যেই অনুতাপ প্রকাশ করেছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ। রাখি পূর্ণিমার দিন কল্যাণ জানিয়েছিলেন, দিদি তাঁকে তিন বার আশীর্বাদ করেছেন। রবিবার মমতার সঙ্গে বেশ কয়েক বার কল্যাণের ফোনে কথা হয়েছে বলেও খবর। তবে সামগ্রিক ভাবে বিরোধীরা যে দিন কমিশন অভিযানে রাস্তায় নেমে লড়াইয়ে ব্যস্ত, সে দিনই মোদীর পাশে কল্যাণের ছবি রাজনৈতিক আলোচনা, জল্পনায় রসদ জুগিয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন