Cloudbursts in Uttarakhand

‘বাঁচাও’! দেহরাদূনে উত্তাল নদীর মাঝে আটকে পড়া ট্র্যাক্টরে দাঁড়িয়ে আর্তি ১০ শ্রমিকের, উদ্ধার করা গেল না কাউকেই

সোমবার রাত থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন এলাকায়। দেহরাদূন, মসূরী, মালদেবতা এলাকায় ধসে পড়েছে বহু বাড়ি। দেহরাদূনের প্রেমনগরে আইন কলেজের কাছে একটি সেতু ধসে গিয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:৩৯
দেহরাদূন-হরিদ্বার জাতীয় সড়কে ভারী বৃষ্টিতে ধসে গেল একটি সেতু।

দেহরাদূন-হরিদ্বার জাতীয় সড়কে ভারী বৃষ্টিতে ধসে গেল একটি সেতু। ছবি: পিটিআই।

উত্তরাখণ্ডের দেহরাদূনে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ফুঁসছে টন্‌স তথা তমসা নদী। তার মাঝে আটকে পড়ে একটি ট্র্যাক্টর। কোনওমতে সেই ট্র্যাক্টর আঁকড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন ১০ জন শ্রমিক। ‘বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। জলের স্রোতে ভেসে গেল সেই ট্র্যাক্টর। প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, ছ’জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। ঘটনার একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে (আনন্দবাজার ডট কম তার সত্যতা যাচাই করেনি)। কেন ট্র্যাক্টরটি নদীর মাঝে গিয়ে পড়ে গিয়েছিল, তা এখনও জানা যায়নি।

Advertisement

মঙ্গলবার মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তরাখণ্ড এবং হিমাচল প্রদেশ। দেহরাদূনে ফুলেফেঁপে উঠেছে নদী। সেখানকার বিকাশনগরে এই দুর্ঘটনা হয়েছে। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, জলের স্রোতে উল্টে যায় ট্র্যাক্টর। তার পরে তলিয়ে যায়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ট্র্যাক্টরে খননকারী শ্রমিকেরা ছিলেন। কী ভাবে ট্র্যাক্টরটি নদীরে মাঝে গিয়ে পড়ল, তা জানা যায়নি। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ছয় শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

দেহরাদূনে নদীর মাঝে আটকে পড়া সেই ট্রাক। তলিয়ে যাওয়ার আগে।

দেহরাদূনে নদীর মাঝে আটকে পড়া সেই ট্রাক। তলিয়ে যাওয়ার আগে। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।

সোমবার রাত থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে উত্তরাখণ্ডের বিভিন্ন এলাকায়। দেহরাদূন, মসূরী, মালদেবতা এলাকায় ধসে পড়েছে বহু বাড়ি। দেহরাদূনের প্রেমনগরে আইন কলেজের কাছে একটি সেতু ধসে গিয়েছে। ইতিমধ্যে ওই এলাকা থেকে ৪০০ জনকে সরিয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে তমসা নদী। দেহরাদূনের প্রায় ১০০ মিটার দীর্ঘ একটি রাস্তা জলের স্রোতে ধুয়েমুছে গিয়েছে।

মেঘভাঙা বৃষ্টি কী? ভারতীয় মৌসম ভবন (আইএমডি) বলছে, কোনও এলাকায় এক ঘণ্টার মধ্যে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে বলে মেঘভাঙা বৃষ্টি। আইএমডি জানিয়েছে, দেহরাদূনে ঘণ্টায় প্রায় ৬৭ মিলিমিটার করে বৃষ্টি হচ্ছে। আবহবিদেরা বলছেন, আচমকা এই বৃষ্টি হয়নি উত্তরাখণ্ডে। প্রত্যাশিতই ছিল। বুধবার পর্যন্ত সেখানে ভারী বৃষ্টির জন্য কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দেহরাদূন, নৈনিতাল, চম্পাবতে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। চমোলী, উধম সিংহ নগর, বাগেশ্বর, পিথোরাগড়ে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টির কারণে রাজ্যের সব নদীতে জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। ২৫ থেকে ৩০টি জায়গায় রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। বাড়িঘর, সরকারি সম্পত্তি ধসে গিয়েছে। জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পুলিশ উদ্ধারকাজে নেমেছে। রাজ্যর পরিস্থিতি নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছেন।

Advertisement
আরও পড়ুন