BLO Suffers

‘চাপ নিতে পারছি না!’ ভিডিয়ো পোস্ট করে বিষপানে নিজেকে শেষ করলেন যোগীরাজ্যের বিএলও! মানতে নারাজ সরকার

উত্তরপ্রদেশের গোন্ডা জেলার বাসিন্দা বিপিন যাদব পেশায় স্কুলশিক্ষক। মঙ্গলবার বাড়িতে বিষপান করেন তিনি। উদ্ধার করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাঁচানো যায়নি। এই ঘটনায় যোগীরাজ্যে শোরগোল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১১:০৬
BLO Suffers

ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্য গুজরাতের পর এ বার যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য উত্তরপ্রদেশ। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআরের কাজের চাপে এক বিএলও আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

মঙ্গলবার বিষ খেয়ে নিজেকে শেষ করার আগে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন ৪০ বছর বয়সি এক বিএলও। পরিবারের দাবি, কাজের চাপের সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনের কর্তারা তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করছিলেন। মৃত্যুর আগে রেকর্ড করা ভিডিয়োয় সেটাই বলেছিলেন বিএলও। যদিও সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।

উত্তরপ্রদেশের গোন্ডা জেলার বাসিন্দা বিপিন যাদব পেশায় স্কুলশিক্ষক। কর্মস্থলে বুথস্তরের আধিকারিকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। পরিবার সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে সকলের নজর এড়িয়ে বাড়িতেই বিষপান করেন তিনি। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল বিপিনকে। দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। কিন্তু তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি দেখে সেখানকার চিকিৎসকেরা গোন্ডা মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করে দেন। প্রশাসনের সহায়তার দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হয়। পরে মেডিক্যাল কলেজ থেকে বিপিনকে নিয়ে যাওয়া হয় লখনউয়ের কেজিএমইউ ট্রমা সেন্টারে। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি করানোর আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকেরা।

মৃত বিএলএওর পরিবারের দাবি, এসআইআরের কাজে অত্যধিক চাপ সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন বাড়ির কর্তা। তাদের এ-ও দাবি, অসুবিধার কথা প্রশাসনের উর্ধ্বতনদের জানিয়েছিলেন বিএলও। উল্টে খারাপ ব্যবহার পান তিনি। এই প্রেক্ষিতে পরিবার একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনেছে। যাতে দাবি করা হয়, নিজেকে শেষ করে দেওয়ার আগে এসআইআর সংক্রান্ত কাজ নিয়ে মানসিক চাপের কথা বলেছিলেন বিপিন। ভিডিয়োটি রেকর্ড করেন বিএলওর স্ত্রী। সেটি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন তাঁরা (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)

প্রশাসনের তরফে পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি, কর্মক্ষেত্রে চাপ দেওয়া হয়নি ওই শিক্ষককে। বিএলওর আত্মহত্যার নেপথ্যে পারিবারিক কারণ থাকতে পারে বলে মত স্থানীয় প্রশাসনের। পাল্টা মৃত বিএলওর স্ত্রীর ব্যখ্যা, ভিডিয়ো তো মিথ্যে নয়! তাতে এসআইআরের কাজ নিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের হয়রানির কথা উল্লেখ করেছেন তাঁর স্বামী। এ-ও জানিয়েছেন, এসডিএম এবং বিডিও কী খারাপ ব্যবহার করেছেন তাঁর সঙ্গে। বিপিনের স্ত্রীয়ের দাবি, কাজের চাপে গত এক সপ্তাহ মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন স্বামী।

বিএলওর ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’র ঘটনার তদন্তের জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন গোন্ডার জেলাশাসক প্রিয়ঙ্কা নিরঞ্জন। তিনি বলেন, ‘‘এসআইআরের কাজ নিয়ে ওঁর উপর কোনও চাপ দেওয়া হয়নি। বস্তুত, কোনও বিএলওকেই চাপ দেওয়া হচ্ছে না। বিপিনবাবু ৮০০টি এনুমারেশন ফর্মের মধ্যে ১০০টির কাজ শেষ করে ফেলেছিলেন। স্বাভাবিক গতিতেই তাঁর কাজ এগোচ্ছিল। চাপের প্রশ্নই নেই।’’ পাশাপাশিই ভিডিয়োর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জেলাশাসক। তাঁর দাবি, ভিডিয়ো বানানোর জন্য কারও প্ররোচনা থাকতে পারে। এর তদন্ত হবে। একই সঙ্গে আত্মঘাতী বিএলওর স্ত্রীর ভূমিকাও তদন্তসাপেক্ষ বলে মন্তব্য করেন তিনি।

Advertisement
আরও পড়ুন