New Delhi Railway Station Stampede

১২ নম্বরের ট্রেন ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে, দু’দিক থেকে জনসমুদ্র, কথাই শুনল না কেউ! বর্ণনা প্রত্যক্ষদর্শীর

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, নয়াদিল্লি স্টেশনে শনিবার রাতে জনসমুদ্র দেখা গিয়েছিল। এত বিপুল সংখ্যক মানুষ কোনও রেলস্টেশনে উৎসবের মরসুমেও জড়ো হন না। সেই কারণেই এই দুর্ঘটনা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:১৬
নয়াদিল্লি স্টেশনে প্রয়াগরাজের ট্রেন ধরার জন্য বিপুল জমায়েত। শনিবার রাতে।

নয়াদিল্লি স্টেশনে প্রয়াগরাজের ট্রেন ধরার জন্য বিপুল জমায়েত। শনিবার রাতে। ছবি: পিটিআই।

নয়াদিল্লি রেলস্টেশনে শনিবার রাতে পদপিষ্টের ঘটনায় অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সকলেই মহাকুম্ভ মেলার যাত্রী। নয়াদিল্লি স্টেশনে তাঁরা কেউ প্রয়াগরাজের ট্রেন ধরবেন বলে অপেক্ষা করছিলেন, কেউ আবার প্রয়াগরাজ থেকে ফিরেছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, নয়াদিল্লি স্টেশনে শনিবার রাতে জনসমুদ্র দেখা গিয়েছিল। এত বিপুল সংখ্যক মানুষ কোনও রেলস্টেশনে উৎসবের মরসুমেও জড়ো হন না। সেই কারণেই এই দুর্ঘটনা, এত প্রাণহানি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত রেল আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, একটা সময়ের পরে আর কেউ কোনও কথা শুনছিলেন না। কোনও ভাবেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছিল না। কয়েক মুহূর্তে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়।

Advertisement

ঘটনাস্থলে ছিলেন বায়ুসেনার সার্জেন্ট অজিত। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে তিনি বলেছেন, ‘‘নয়াদিল্লি স্টেশনে আমাদের একটা দফতর আছে। রাতে কাজ শেষ করে ফেরার সময়ে আমি আটকে পড়ি। বিপুল সংখ্যক মানুষ ওখানে জড়ো হয়েছিলেন। আমরা সকলকে বোঝাচ্ছিলাম। এক জায়গায় এত লোককে আসতে নিষেধ করছিলাম। প্ল্যাটফর্মে ঘোষণাও হচ্ছিল। কিন্তু কেউ কোনও কথাই শুনল না!’’ আর এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘‘স্টেশনে ভিড় হবে সকলেই জানতেন। কিন্তু এত মানুষ আসবেন, কেউ ভাবতে পারেননি। স্টেশন আধিকারিকদের সাধ্যের বাইরে চলে যায় ভিড়। ফুট ওভারব্রিজেও থিকথিকে ভিড় ছিল। আমি কখনও কোনও ট্রেনের স্টেশনে এত মানুষকে জড়ো হতে দেখিনি। কোনও উৎসবের সময়েও নয়। রেল আধিকারিকেরা তো বটেই, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও ছিল ঘটনাস্থলে। কিন্তু এই ভিড় সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল না।’’

ভিড়ের চাপে দিদিকে হারিয়েছেন এক যুবক। হাসপাতাল থেকে তিনি বলেন, ‘‘মহাকুম্ভে যাব বলে আমরা ১২ জন বেরিয়েছিলাম। প্ল্যাটফর্মেও পৌঁছতে পারিনি। সিঁড়িতে দাঁড়িয়েছিলাম। আমার দিদি ভিড়ে আটকে পড়েছিল। আধঘণ্টা পরে ওকে আমরা খুঁজে পাই। তত ক্ষণে ও আর নেই।’’

আর এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। ১২ নম্বরের ট্রেন ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসবে বলে ঘোষণা করা হয়। ফলে দু’দিক থেকে জনসমুদ্র ছুটে আসে ১৬ নম্বরের দিকে। তখনই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে।’’ এই ঘটনার জন্য অনেকে আবার দায়ী করছেন ট্রেনের সময়সূচিকে। অভিযোগ, পর পর দু’টি ট্রেন ‘লেট’ করে। সময় পেরিয়ে গেলেও ট্রেন না-আসায় ভিড় বেড়ে গিয়েছিল। এর পর প্রয়াগরাজে যাওয়ার তৃতীয় ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে ঢুকলে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। নয়াদিল্লি স্টেশনে ১৫০০ জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছিল শনিবার রাতে।

শনিবারের ঘটনার কারণ খুঁজতে দুই সদস্যের উচ্চপদস্থ কমিটি গঠন করেছে রেল। কী ভাবে কখন পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হল, ওই কমিটি তা খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দেবে।

Advertisement
আরও পড়ুন