Haryana Tennis Player Murder

‘ভেবেছিলাম প্রেসার কুকার ফাটল, দোতলায় উঠে দেখি রক্তাক্ত ভাইঝি মেঝেতে পড়ে’! রাধিকা-কাণ্ডে কাকার বয়ান

বৃহস্পতিবার নিজের বাড়িতেই খুন হন হরিয়ানার রাজ্যস্তরের ২৫ বছর বয়সি টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদব। খুনের অভিযোগে গ্রেফতার তাঁর বাবা দীপক। সেই ঘটনায় থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন রাধিকার কাকা কুলদীপ যাদব।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২৫ ১৪:৫৮
What did Haryana tennis player Radhika Yadav\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'s uncle saw after incident

হরিয়ানার টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদব। —ফাইল চিত্র।

বিকট শব্দ। তার পরেই রাধিকা যাদবের চিৎকার। তা শুনে ছুটে গিয়ে তাঁর কাকা কুলদীপ যাদব দেখেন, রান্নাঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ভাইঝি। আর ড্রয়িংরুমের টেবিলের উপর রাখা একটি পয়েন্ট ৩২ বোরের রিভলবার। পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তাঁর দাদা দীপক যাদব!

Advertisement

বৃহস্পতিবার নিজের বাড়িতেই খুন হন হরিয়ানার রাজ্যস্তরের ২৫ বছর বয়সি টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা। খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁর বাবা দীপককে। সেই ঘটনায় থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন রাধিকার কাকা কুলদীপ। পুলিশের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে তিনি জানিয়েছেন, গুরুগ্রামের ৫৭ নম্বর সেক্টরের সুশান্তলোক এলাকায় তাঁদের দোতলা বাড়ি। ঘটনার সময় তিনি একতলায় ছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ হঠাৎই বিকট শব্দ শোনেন। প্রথমে ভেবেছিলেন, দোতলায় কোনও বিস্ফোরণ হয়েছে। প্রেসার কুকার ফেটেছে বলে মনে হয়েছিল। উপরে উঠে দেখেন রাধিকা খুন হয়েছেন!

এফআইআরে কুলদীপ বলেন, ‘‘আমি দোতলায় উঠে দেখি রান্নাঘরে পড়ে রয়েছে আমার ভাইঝি। আমার পরেই ঘটনাস্থলে আসে আমার ছেলে পীযূষ। আমরা দু’জনে মিলে রাধিকাকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে পরীক্ষা করে জানান, অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে রাধিকার।’’

পুলিশকে কুলদীপ জানিয়েছেন, ঘটনার সময় দোতলায় ছিলেন তাঁর দাদা, ভাইঝি এবং বৌদি মঞ্জু যাদব। কুলদীপের কথায়, ‘‘আমার দাদার কাছে একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিভলবার ছিল। ঘটনাস্থলে আমি সেটা পড়ে থাকতে দেখি। সব দেখে আমি বুঝতে পারি রাধিকাকে গুলি করেছেন আমার দাদাই।’’

দীপক এবং কুলদীপ— দুই ভাই পরিবার নিয়ে থাকেন একই বাড়িতে। একতলায় কুলদীপেরা এবং দোতলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন তাঁর দাদা। কুলদীপ এবং স্ত্রী সীমার দুই সন্তান। এক পুত্র, এক কন্যা। তাঁর দাদা-বৌদিরও দুই সন্তান। রাধিকা ছাড়াও দীপকের এক পুত্র রয়েছে। ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন না দীপকের পুত্র ধীরজ। ব্যবসার কাজে বেরিয়েছিলেন তিনি।

পুলিশ সূত্রে খবর, মেয়েকে গুলি করে খুনের কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত দীপক। কেন রাধিকাকে তিনি খুন করলেন তা-ও পুলিশকে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর দাবি, ‘অপমানে’ রাধিকাকে খুন করেছেন। দীপক জানান, দিন কয়েক আগে খেলার সময় কাঁধে চোট পান রাধিকা। এই চোট তাঁকে ভোগাচ্ছিল। ঠিক করেন শিশুদের প্রশিক্ষণের জন্য একটি টেনিস অ্যাকাডেমি খুলবেন। সেই পরিকল্পনামতো নিজের এলাকাতেই একটি প্রশিক্ষণকেন্দ্র চালু করেন রাধিকা। তবে তাঁর এই উদ্যোগ ভাল ভাবে নেননি দীপক। তিনি চেয়েছিলেন এই অ্যাকাডেমি বন্ধ করে দিন রাধিকা, যা নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হত। পুলিশ জানিয়েছে, রাধিকার উপার্জনে সংসার চলত। এই নিয়ে নানা সময়ে প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন কিংবা বন্ধুবান্ধবের কাছে কথা শুনতে হত দীপককে। সেই কারণে দীপক চাইতেন না তাঁর মেয়ে অ্যাকাডেমি চালান। অ্যাকাডেমি বন্ধ করতেও বলেন। কিন্তু বাবার প্রস্তাবে রাজি ছিলেন না রাধিকা। সেই নিয়ে বচসা এবং শেষে মেয়েকে গুলি করে খুন করেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন দীপক।

Advertisement
আরও পড়ুন