Pakistan On The Resistance Front

‘বাস্তববিরোধী’! পহেলগাঁওয়ের হামলায় ‘দায়ী’ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মার্কিন পদক্ষেপের পর বিবৃতি দিল পাকিস্তান, কিসে আপত্তি?

টিআরএফ-কে ‘বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’ এবং ‘বিশেষ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’-র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে মার্কিন প্রশাসন বিবৃতি দিয়েছিল। শুক্রবার তার পাল্টা একটি বিবৃতি দিয়েছে ইসলামাবাদের বিদেশ দফতর।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৫ ০৯:১৯
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। —ফাইল চিত্র।

জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলার দায় প্রাথমিক ভাবে স্বীকার করেছিল যে গোষ্ঠী, লশকর-এ-ত্যায়বার সেই ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ বা টিআরএফ-কে ‘বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’র তকমা দিয়েছে আমেরিকা। শুক্রবারই এ নিয়ে পাল্টা একটি বিবৃতি দিয়েছে পাকিস্তান। সেখানে মার্কিন বিবৃতির কিছু অংশে আপত্তি তোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে পহেলগাঁওয়ের ঘটনার তদন্ত যে এখনও ঝুলে রয়েছে, তা-ও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

শুক্রবার ইসলামাবাদের বিদেশ দফতরের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে পাকিস্তান। এ বিষয়ে তারা ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে এগোচ্ছে এবং সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতায় আন্তর্জাতিক সহায়তার আশা রাখছে।’’ অ্যাবে গেট বোমা হামলায় অভিযুক্ত সন্ত্রাসবাদী শরিফুল্লাহের গ্রেফতারির কথা উল্লেখ করে বিশ্বশান্তিতে তাদের অবদান রয়েছে দাবি করেছে পাকিস্তান। এর পরেই তাদের বিবৃতিতে এসেছে পহেলগাঁওয়ের প্রসঙ্গ। লেখা হয়েছে, ‘‘পহেলগাঁওয়ের ঘটনার তদন্ত এখনও অমীমাংসিত।’’

টিআরএফ-কে ‘বিদেশি সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’ এবং ‘বিশেষ আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী’-র তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে মার্কিন প্রশাসন যে বিবৃতি দিয়েছিল, তাতে এই গোষ্ঠীটিকে লশকরের ছায়া সংগঠন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এতেই আপত্তি পাকিস্তানের। তারা বলেছে, ‘‘লশকর পাকিস্তানে নিষিদ্ধ একটি বিলুপ্ত সংগঠন। তাদের সঙ্গে এর কোনও যোগ বাস্তবতার বিরোধী। সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলিকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তাদের নেতৃত্বকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিচার হয়েছে। পাকিস্তান অত্যন্ত কার্যকর ভাবে সংগঠন ধ্বংস করেছে।’’ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর ঘোরাতে ভারত এই ধরনের তকমাকে পাকিস্তানের বিরোধিতায় কাজে লাগায় বলেও দাবি করা হয়েছে ইসলামাবাদের বিবৃতিতে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মজিদ ব্রিগেডকে বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি-র ছায়া সংগঠনের তকমা দেওয়ার আর্জিও জানিয়েছে পাকিস্তান।

উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তাতে পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ করে ভারত। গত ৬ মে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান চালানো হয়। ‘অপারেশন সিঁদুর’-এ ধ্বংস করে দেওয়া হয় পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি। এর পর টানা চার দিন দুই দেশের সশস্ত্র সংঘর্ষ চলেছে। ১০ মে ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়। পাকিস্তান প্রথম থেকেই পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এ বিষয়ে নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে তারা। পহেলগাঁও হামলার পরপরই সমাজমাধ্যমে তার দায় স্বীকার করেছিল টিআরএফ। তবে পরে ওই সংগঠন দায় অস্বীকার করে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তাঁর মধ্যস্থতায় ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছে। সেই সময়েই তিনি পহেলগাঁওকাণ্ডের তদন্তের আশ্বাসও দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার বিদেশ সচিব মার্কো রুবিয়ো জানান, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এবং পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় ট্রাম্পের ন্যায়বিচারের আশ্বাসকে সুনিশ্চিত করতে টিআরএফ-এর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ করা হল।

Advertisement
আরও পড়ুন