India Pakistan Conflict

সেনাবাহিনীতে ডিজিএমও কে? এই পদের গুরুত্ব কতটা, কাজই বা কী? ভারত ও পাকিস্তানের হয়ে আলোচনায় কারা

ভারত এবং পাকিস্তানের ডিজিএমও শনিবার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সংঘর্ষবিরতির বিষয়ে সমঝোতা করেন। সোমবারও তাঁরাই কথা বলবেন। দ্বিতীয় দফার আলোচনার সময় পিছিয়ে গিয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৫ ১১:৩০
Who are the dgmos of India and Pakistan to talk after ceasefire

(বাঁ দিকে) ভারতের ডিজিএমও রাজীব ঘাই এবং পাকিস্তানের ডিজিএমও কাশিফ আবদুল্লা (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতির পর দ্বিতীয় দফার আলোচনায় বসতে চলেছেন দুই দেশের সামরিক বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশন্‌স (ডিজিএমও)। ভারতের তরফে আলোচনায় থাকবেন ডিজিএমও লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই। পাকিস্তানের তরফে একই পদাধিকারী মেজর জেনারেল কাশিফ আবদুল্লা। এই দু’জনের মধ্যে ‘হটলাইনে’ কথা হবে সোমবার। তার আগে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনে ভারতের স্থল, নৌ, বায়ুসেনার প্রধান, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ অনিল চৌহান উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন। ছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহও। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, বেলা আড়াইটে নাগাদ ভারতীয় সেনার তরফে সাংবাদিক বৈঠক করা হবে।

Advertisement

ভারত এবং পাকিস্তানের ডিজিএমও শনিবার নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সংঘর্ষবিরতির বিষয়ে সমঝোতা করেন। ফোনে কথা হয় রাজীব এবং কাশিফের। উল্লেখ্য, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই সমঝোতার আলোচনা ডিজিএমও স্তরেই সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে। অর্থাৎ, রাজনৈতিক নয়, সামরিক বিভাগই দুই দেশের সংঘাতের পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে। সোমবারের আলোচনাতেও ডিজিএমও ছাড়া কেউ থাকছেন না। দুই দেশের মধ্যে ‘হটলাইনে’ কথা হওয়ার কথা ছিল বেলা ১২টায়। সেই সময় পিছিয়ে গিয়েছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, আলোচনা হতে পারে সোমবার সন্ধ্যায়।

ডিজিএমও-র কাজ কী

ভারতীয় সেনায় ডিজিএমও পদটি অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিএমও তিন বাহিনীর প্রধানের কাছে জবাবদিহি করেন। সীমান্তে সেনার যাবতীয় অভিযান এবং কার্যকলাপের পরিকল্পনার দায়িত্বে থাকেন ডিজিএমও। ভারতে সাধারণত লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদাধিকারী অফিসারেরা ডিজিএমও হন। বিভিন্ন দেশের সামরিক বিভাগের ডিজিএমও-দের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখে চলেন ভারতের ডিজিএমও। পাকিস্তানের ডিজিএমও-র সঙ্গে ভারতের ডিজিএমও-র প্রতি সপ্তাহে ‘হটলাইন’ মাধ্যমে কথাবার্তা হয়। যে কোনও দেশের সঙ্গে সংঘাতের পরিস্থিতি আলোচনার মাধ্যমে সামাল দেওয়ার দায়িত্ব ডিজিএমও-র।

কোনও দেশের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের সিদ্ধান্ত হলে তা কী ভাবে হবে, পরিকল্পনা করেন ডিজিএমও। অভিযানের পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বেও তিনি থাকেন। এ ছাড়া, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানের পরিকল্পনা, পরিচালনাও করেন ডিজিএমও। তাঁর অন্যতম প্রধান দায়িত্ব দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে যে কোনও পরিস্থিতি এবং যে কোনও অভিযানের জন্য প্রস্তুত রাখা।

সেনাবাহিনীর অন্যান্য শাখা এবং বিভিন্ন সরকারি দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা, সেনার পরিকল্পনা ও বার্তা প্রয়োজন অনুযায়ী সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজও করে থাকেন ডিজিএমও। সেনার সঙ্গে সরকারের যোগাযোগ রক্ষা তাঁর দায়িত্ব। মূলত প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকেন ডিজিএমও।

সূত্রের দাবি, ডিজিএমও-দের মধ্যে শনিবারের আলোচনায় সংঘর্ষবিরতি ছাড়া আর কোনও প্রসঙ্গই ওঠেনি। কেবল দুই দেশ সীমান্তে হামলা বা পাল্টা হামলা বন্ধ রাখবে বলে সম্মত হয়েছিল। পাকিস্তানের সরকারি সূত্র উল্লেখ করে রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছিল। মনে করা হচ্ছে, দুই দেশের বাকি সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা হতে পারে সোমবার। তার মধ্যে অন্যতম সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে এই চুক্তি স্থগিত করে দিয়েছে ভারত। দুই দেশের কূটনৈতিক সংঘাতের অন্যতম মূল এই চুক্তি। রবিবার পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, মূলত তিনটি বিষয় নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারেন পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা। সেখানে সিন্ধু জলচুক্তি এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের প্রসঙ্গের পাশাপাশি কাশ্মীর সমস্যার প্রসঙ্গও পাকিস্তান আলোচনায় তুলে ধরতে পারে। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। সেই সংক্রান্ত কোনও সুরাহা সোমবারের বৈঠকে হবে কি না, সে দিকেও নজর রয়েছে সকলের।

Advertisement
আরও পড়ুন