অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে সফল ভাবে উৎক্ষেপণ করা হল এলভিএম৩-এম৬ রকেট। ছবি: পিটিআই।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)-র ‘বাহুবলী’ রকেটে চেপে বুধবার সকালে মহাকাশে পা়ড়ি দিয়েছে মার্কিন কৃত্রিম উপগ্রহ ‘ব্লু বার্ড ৬’। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে ঠিক সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে এলভিএম৩-এম৬ রকেটের সফল উৎক্ষেপণ হয়েছে। ইসরোর সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, ‘‘ভারতের মহাকাশ যাত্রার ইতিহাসে এটি একটি গর্বের মাইলফলক হয়ে থাকবে।’’ তবে, ‘ব্লু বার্ড ৬’-এর উৎক্ষেপণ শুধু ভারতের জন্যই নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কিন্তু কেন?
‘ব্লু বার্ড ৬’ মার্কিন সংস্থা সংস্থা এএসটি স্পেসমোবাইল-এর তৈরি অত্যাধুনিক কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট। কোনও বিশেষ সরঞ্জাম ছাড়াই মহাকাশ থেকে সরাসরি স্মার্টফোনে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পাঠাতে পারবে এই কৃত্রিম উপগ্রহ। প্রায় ৬,১০০ কেজি ওজনের এই বিশালাকার যোগাযোগ উপগ্রহ লো আর্থ অরবিট (এলইও)-এ স্থাপন করা হয়েছে। এই কৃত্রিম উপগ্রহের কাজ হবে দ্রুতগতির সেলুলার ব্রডব্যান্ড পরিষেবা মহাকাশ থেকে সরাসরি স্মার্টফোনে পৌঁছে দেওয়া। সব ঠিক থাকলে বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে যোগাযোগব্যবস্থায় বিপ্লব আসবে বলেই ধারণা বিজ্ঞানীদের।
ব্লু বার্ড ৬ স্যাটেলাইটের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল, এর ২২৩ বর্গমিটার অ্যারে অ্যান্টেনা, যা লো আর্থ অরবিটে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড়। এর কাজ করার জন্য স্টারলিঙ্ক বা ওয়ানওয়েব–এর মতো বিশেষ গ্রাউন্ড টার্মিনাল লাগবে না। ফলে সাধারণ স্মার্টফোনেই সরাসরি সিগন্যাল পাওয়া যাবে। ৪জি এবং ৫জি ভয়েস এবং ভিডিয়ো কল, মেসেজ, স্ট্রিমিং— সব কিছুই করা যাবে অনায়াসে। কাজেই এই উৎক্ষেপণের জেরে গোটা বিশ্বে যোগাযোগ ব্যবস্থায় খুলে যাবে নতুন দিগন্ত।
উৎক্ষেপণের প্রায় ১৫ মিনিট পর রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ব্লু বার্ড ৬। তার পর প্রায় ৫২০ কিলোমিটার উচ্চতায় তার নির্ধারিত কক্ষপথে গিয়ে থিতু হয়েছে সে। উল্লেখ্য, ব্লু বার্ড ৬-ই এ পর্যন্ত ভারতের কোনও রকেট দ্বারা মহাকাশে পাঠানো সবচেয়ে ভারী কৃত্রিম উপগ্রহ। তাই ৪৩.৫ মিটার উঁচু এলভিএম৩-এম৬ রকেটটিকেই এই কাজের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। ভারী কৃত্রিম উপগ্রহ বহনে সক্ষম এই রকেটকে ইসরোর বিজ্ঞানীরা নাম দিয়েছেন ‘বাহুবলী’। এলভিএম৩ রকেটগুলির মধ্যে এটি ষষ্ঠ সংস্করণ। ৬০০০ কেজিরও বেশি ভারী কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়ে ইতিহাস গড়েছে সে।