ত্বকের পরিচর্যা প্রয়োজন পুরুষেরও, বাবার ত্বকের যত্ন নেওয়ার কিছু উপায় রইল। গ্রাফিক সহায়তা: এআই।
ধরেবেঁধে বাবাকে ক্রিম মাখানোই যথেষ্ট ঝক্কির কাজ। রূপচর্চায় ঘোর অনীহা। পিতৃদিবসে বাবার ত্বকের যত্ন নিতে উঠেপড়ে লাগুন। বয়সকালে সঠিক উপায়ে ত্বকের পরিচর্যা না করলে নানা রকম সমস্যা দেখা দেবে। চামড়া তো ঝুলে যাবেই, চর্মরোগ হওয়াও আশ্চর্যের নয়। এমনিতেও পঞ্চাশ বা ষাটোর্ধ্ব পুরুষদের মধ্যে ত্বকের পরিচর্যার অভ্যাস খুব একটা দেখা যায় না। বয়সজনিত কারণে অনীহা যেমন থাকে, তেমনই ছেলেদেরও যে ত্বকের যত্ন নিতে হয়, তা জানেন না অনেকেই। বাবার রূপচর্চার রুটিন তৈরি করে দিন আপনিই। কখন কী ভাবে ত্বকের পরিচর্যা করতে হবে, তার কয়েকটি কৌশল শিখে রাখুন।
বাবাকে যেহেতু রূপচর্চার কৌশল শেখাবেন, তাই পদ্ধতি সহজ হওয়াই উচিত। সে জন্য সানস্ক্রিন দিয়েই শুরু করা যাক রোজের রূপরুটিন। তার পর ধাপে ধাপে ক্লিনজ়িং, ময়েশ্চারাইজ়ারের ব্যবহার শিখিয়ে দেবেন।
সানস্ক্রিন মাখার পদ্ধতি
রোদ থেকে ত্বককে বাঁচাতে বাইরে বেরোনোর আগে ভাল করে মুখ পরিষ্কার করে সানস্ক্রিন মেখে বেরোনো আবশ্যক। দু’ঘণ্টা অন্তর সানস্ক্রিন লাগানো দরকার। ত্বক ভাল রাখতে সানস্ক্রিন লাগানোর আগে ভিটামিন সি বা নিয়াসিনামাইড সেরাম লাগাতে পারলে ভাল হয়। এখন দোকানেও পুরুষদের রূপচর্চার নানা সামগ্রী বেরিয়ে গিয়েছে। দেখেশুনে তেমন সিরামই কিনে নেবেন। পুরুষদের ত্বকের জন্য ৩০-৫০ এসপিএফ-যুক্ত সানস্ক্রিনই ভাল।
মুখ পরিষ্কার
বাইরে বেরোলেই ত্বকে ধুলোবালি জমা হতে থাকে। ত্বকে সহজেই নোংরা জমে যায়। সেগুলি সঠিক ভাবে পরিষ্কার না করলেই ব্রণ, র্যাশ হবে। ত্বকে কালচে ছোপও পড়বে। সে জন্য ক্লিনজ়িং খুব জরুরি। বাড়ির বয়স্করা কেবল জল দিয়েই মুখ ধুয়ে নেন। তাতে ধুলোময়লা পরিষ্কার হবে না। সে জন্য বাবাকে ফেসওয়াশ কিনে দিন। এমন ফেসওয়াশ কিনতে হবে, যাতে মুখ ডি-ট্যানও হয়। অর্থাৎ, রোদে পোড়া দাগ উঠে যায়। সে জন্য এমন ফেসওয়াশ কিনবেন, যাতে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড বা স্যালিসাইলিক অ্যাসিডের মতো উপাদান থাকে।
ফেসপ্যাকও জরুরি
বয়সকালে ত্বকে বলিরেখা পড়বেই। তা ছাড়া ঠিকমতো যত্ন না নিলে চামড়া ঝুলে যাবে, তাতে মেচেতার দাগও পড়বে। ছেলেদের ত্বক কিন্তু অনেক বেশি তৈলাক্ত হয়। তাই ঠিকমতো স্ক্রাবিং ও ফেসপ্যাকের ব্যবহার না করলে, ত্বকে র্যাশের সমস্যা বাড়বে। দাড়ি কাটার পরে চুলকানি, ফুস্কুড়ি হবে।
কী ধরনের ফেসপ্যাক বানাবেন?
বাড়িতেই ফেসপ্যাক তৈরি করে নেওয়া ভাল। দোকান থেকে কেনা ফেসপ্যাকে রাসায়নিকের আধিক্য থাকে। তাই বাবার জন্য যে প্যাক বানাবেন, তাতে চন্দনগুঁড়ো, হলুদগুঁড়োর সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু, টক দই মিশিয়ে তাতে এক চামচ পাতিলেবুর রস মেশান। এ বার মুখে মাখার পরে শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে নিতে বলুন। এতে ত্বক অনেক বেশি নরম হবে এবং কালচে দাগছোপ থাকলে তা দূর হবে।
কফি পাউডারে কয়েক ফোঁটা পাতিলেবুর রস বা ঠান্ডা দুধ মিশিয়ে একটা প্যাক তৈরি করে মুখে মাখতে হবে। দশ মিনিট রেখে ভাল করে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এর পর বাইরে না বেরোলে ময়েশ্চারাইজ়ার লাগিয়ে নিলে ভাল। যদি দিনের বেলায় এই প্যাক লাগান, তা হলে শেষে সানস্ক্রিন ব্যবহার করবেন।
চোখের নীচের ত্বক তুলনায় পাতলা। তাই সহজেই এই ত্বক কুঁচকে যায়। ভিটামিন কে আছে, এমন সিরাম ব্যবহার করুন ওই এলাকায়। তাতে ত্বকের ক্ষতি কম হবে।
ময়েশ্চারাইজ়ার
রাতে শোয়ার আগে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজ়ার ব্যবহার করতে হবে। তা হলে সকালে দাড়ি কাটার সময়ে জ্বালা হবে না। ত্বক ভিতর থেকে নরম রাখতে ময়েশ্চারাইজ়ার খুবই জরুরি।