রুজুতা দিবেকর কেন সাবধান করছেন কৈশোরের রূপচর্চার প্রবণতা নিয়ে? ছবি: আনন্দবাজার ডট কম।
মুখে ব্রণ, চোখের নীচে কালি। ত্বকে তৈলাক্ত বা অতিরিক্ত রুক্ষ ভাব। বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েই হোক বা কৈশোরে পৌঁছোনো ছাত্র-ছাত্রী, তাদের জীবনে এমন সমস্যা নতুন নয়। আর সেই সমস্যার সমাধানে সমাজমাধ্যম বা লোকের মুখে শুনে যে কোনও টোটকা বেছে নেওয়াও স্বাভাবিক বিষয়। অনেক তারকাও কম বয়সে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। বলিউড অভিনেত্রী শর্বরী ওয়াঘ এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, আর পাঁচজনের মতো ‘ট্রেন্ড’-এ গা ভাসিয়ে সেলোটেপ লাগিয়ে আইলাইনার পরা থেকে ব্রণ কমাতে মাজন ব্যবহারের মতো অনেক কীর্তিকলাপই এক সময় করেছিলেন।
তবে এমন কার্যকলাপ সকলে না করলেও, কৈশোরে ত্বক সংক্রান্ত সাধারণ সমস্যার মোকাবিলায় প্রসাধনীর ব্যবহার বিপজ্জনক হতে পারে বলে সাবধান করছেন করিনা কপূরের পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবেকর। বলিউডে রুজুতা যথেষ্ট চর্চিত নাম। শুধু করিনা নন, মুম্বইয়ের অনেক তারকাই তাঁর পরামর্শ মানেন। তিনি বলছেন, ‘‘বয়ঃসন্ধির সময় বা কৈশোরে মুখ তৈলাক্ত হয়ে যাওয়া, ব্রণ এগুলি খুব সাধারণ সমস্যা। সঠিক খাওয়া, ঠিক সময়ে ঘুম এবং শরীরচর্চার বদলে এই বয়সি ছেলেমেয়েরা ত্বক উজ্জ্বল দেখানোর জন্য এটা-সেটা মাখছে। ভাল-মন্দের তফাত করার বোধ তাদের থাকছে না। তার ফল হচ্ছে উল্টো।’’
কৈশোরে ছেলেমেয়েদের এমন প্রবণতা কেন ক্ষতিকর জানানোর পাশাপাশি তা কমানোর জন্য অভিভাবকদেরও পরামর্শ দিচ্ছেন রুজুতা।
১। ১৩-১৭ বছরের ছেলেমেয়েদের যদি স্নানঘর ভর্তি প্রসাধনী থাকে, তা নিয়ে সচেতন হতে বলছেন তিনি অভিভাবকদের। যা কিছু এই বয়সে বেড়ে ওঠার অঙ্গ, তা স্বাভাবিক ভাবে মেনে নেওয়ার মানসিকতা যাতে সন্তানদের তৈরি হয়, তেমনটাই বোঝানোর পরামর্শ রুজুতার। প্রসাধনী কেনারও একটা মাত্রা বেঁধে দিতে বলছেন তিনি।
২। বয়ঃসন্ধিতে শরীর-মনে বদল আসে। ছেলেমেয়েরা চায়, তাদেরও সুন্দর দেখাক। এই বয়সে হরমোনের ভারসাম্যহীনতার জন্য মুখে ব্রণ হলে, কপালে, থুতনিতে র্যাশ বেরোনো সাধারণ বিষয়। সেটাই মানতে পারে না কেউ কেউ। কারও আত্মবিশ্বাসের অভাব হয়। তা থেকেই শুরু হয় ‘সুন্দর’ হওয়ার চেষ্টা, সমাজমাধ্যমে এটা-ওটা দেখে মেখে ফেলার প্রবণতা।
৩। চুল, ত্বক এবং শরীরের খেয়াল রাখার বদলে কৈশোরের প্রবণতাই থাকে রূপচর্চার দিকে নজর দেওয়া। প্রসাধনী নিয়ে প্রচারের লক্ষ্যই হয় বিক্রি বৃদ্ধি করা। সেটা না বুঝেই ছেলেমেয়েরা ক্রমাগত সে সব ব্যবহার করে। রুজুতা জানাচ্ছেন, ১১- ১৬ বছরের ছেলে বা মেয়ে অ্যান্টি-এজিং ক্রিম বা মাস্ক, চোখের নীচের কালি তোলার ক্রিম মাখছে দেখে তিনি চিন্তিত।
৪। বাবা-মা এবং এই বয়সি ছেলেমেয়েদের জন্য রুজুতার পরামর্শ, অতিরিক্ত প্রসাধনী ব্যবহারের ব্যাপারে দু’পক্ষকেই সচেতন হতে হবে। অভিভাবকেরা না বললে, যদি সন্তানের সঙ্গে মনোমালিন্যও হয়, তার পরেও তা করা প্রয়োজন।
৫। ত্বকের খুঁত মেনে নিতে শেখাও জরুরি। তবে একই সঙ্গে তাঁর মত, জোর দেওয়া দরকার সঠিক খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চা এবং ঘুমে। হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং সুস্থ থাকতে এগুলি জরুরি।