Anirban Chakrabarti

ঠাকুর দেখতে গিয়ে মণ্ডপে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম

দুর্গাপুজো নিয়ে বাঙালির নানা স্মৃতি। সেই স্মৃতির পাশাপাশি পুজো কেমন কাটছে, বাকি দিনগুলির পরিকল্পনাই বা কী রকম? ভাগ করে নিলেন অভিনেতা অনির্বাণ চক্রবর্তী।

Advertisement
অনির্বাণ চক্রবর্তী
অনির্বাণ চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:০১
Bengali actor Anirban Chakrabarti shares his memories of pandal hopping during Durga Puja

প্রথম বার কলকাতায় ঠাকুর দেখার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল অনির্বাণের? —ফাইল চিত্র।

রবিবার ষষ্ঠী। বৃষ্টি সামলে মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় বাড়ছে। বছরের এই কয়েকটা দিন বাঙালি আনন্দ করেন। আমিও তাঁদেরই এক জন। কিন্তু ঠাকুর দেখার প্রতি আমার বিশেষ কোনও আকর্ষণ নেই। কারণ, ছোট থেকেই আমি একটু ভিড় এড়িয়ে চলতে পছন্দ করি। আমি নিরিবিলিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তাই ভিড়ের মধ্যে ঠাকুর দেখার চেষ্টা করি না। এই প্রসঙ্গে একটা অভিজ্ঞতা পাঠকদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই।

Advertisement

আমার শৈশব কেটেছে বজবজে। পুজোর সময়ে পরিবারের সঙ্গে এক দিন কলকাতায় এসে ঠাকুর দেখা এবং কোনও জনপ্রিয় রেস্তরাঁয় খাওয়াটা ছিল রুটিনের মতো। আমি তখন যত দূর মনে পড়ছে ক্লাস ইলেভেনে পড়ি। একটু বড়। প্রথম বার বন্ধুদের সঙ্গে কলকাতার ঠাকুর দেখার পরিকল্পনা হল। সকাল থেকে ঠাকুর দেখে রাতে আবার বজবজে ফিরে যাব।

পরিকল্পনামাফিক এ শহরে চলে এলাম। সকাল থেকে ঠাকুর দেখছি। এ দিকে, এখনও আমি খুব রাত জেগে কিছু করতে পারি না। কলেজের দিনগুলোতেও ভোরে পড়তে বসতাম, রাতে নয়। যা-ই হোক, রাত হয়ে গিয়েছে, ঠাকুর দেখতে দেখতে খিদেও পেয়েছে। এ দিকে, সব জায়গায় ভিড়। যত দূর মনে হচ্ছে, দেশপ্রিয় পার্কের মণ্ডপে ঢুকেছি আমরা। ভিড়ের ধাক্কায় বন্ধুদের থেকে একটু দূরে সরে গিয়েছি। আমি খুবই ক্লান্ত। মণ্ডপে একটা চেয়ারে বসে ঘুমিয়ে পড়লাম!

Bengali actor Anirban Chakrabarti shares his memories of pandal hopping during Durga Puja

পুজো কেমন কাটছে অনির্বাণের? —ফাইল চিত্র।

তখন মোবাইল ছিল না। কেউ নিরুদ্দেশ হলে প্যান্ডেলে মাইকে মাইকে ঘোষণা করা হত। বন্ধুরা হয়তো সেই চেষ্টাও করেছিল। কিন্তু আমি তো তখন গভীর ঘুমে। প্যান্ডেলের গান বা নিরুদ্দেশ সম্পর্কে ঘোষণা— কোনও কিছুই কানে ঢোকেনি। সেই ঘুম ভাঙল সকালে। কিন্তু একটুও ভয় পাইনি। বন্ধুরা নেই দেখে বুঝলাম, তারা আমাকে না খুঁজে পেয়ে রাতেই বাড়ি ফিরে গিয়েছে। আমিও তার পর ভোরে ট্রেন ধরে বজবজে ফিরে গেলাম।

একেনবাবু এবং জটায়ু— এই দুই চরিত্রের দৌলতে দর্শক আমাকে চিনেছেন। বিশেষ করে একেন চরিত্রে অভিনয়ের পর অল্পবয়সিদের সঙ্গেও আমার সখ্য তৈরি হয়েছে। আমি তো ঠাকুর দেখতে পছন্দ করি না। ষষ্ঠীর দিন তাই ভাবছি, একেন এবং জটায়ু কলকাতার পুজো কী ভাবে কাটাতেন? একেনকে দর্শক বেঙ্গালুরুতে দুর্গাপুজো উপভোগ করতে দেখেছেন। ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’-এ কাশীতে পুজোর আবহে ফেলুদা-তোপসের সঙ্গে জটায়ু। একেন তো খুব হুজুগে। বাড়িতে বসে থাকার মানুষ নন। তাই মনে হয়, বাপি এবং প্রমথকে সঙ্গে নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়ত। অন্য দিকে জটায়ু তো ফেলুদা এবং তোপসে ছাড়া কোথায় যান না। তাই ঠাকুর দেখতে গেলেও ‘থ্রি মাস্কেটিয়ার্স’ হয়তো একসঙ্গেই যেতেন।

সাধারণত ভিড় পছন্দ নয় বলে প্রতি বছর পুজোর সময়ে আমি শহরের বাইরে থাকার চেষ্টা করি। তবে এ বছর কলকাতায় রয়েছি। দুটো পুজো পরিক্রমার সঙ্গেও যুক্ত ছিলাম। তার দৌলতে বেশ কিছু ঠাকুরও দেখে নিয়েছি। বাকি কয়েকটা দিন এ বার একটু নিজের মতো করে কাটাব। আপনাদের শারদীয়ার শুভেচ্ছা। প্রত্যেকের পুজো খুব ভাল কাটুক।

(সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অনুলিখিত।)

Advertisement
আরও পড়ুন