Satyajit Ray Birthday

বাবা নিজের পছন্দের খাবারগুলোই ফেলুদাকে দিয়েছিলেন

সত্যজিৎ রায় কী খেতে পছন্দ করতেন, তা কিছুটা হয়তো অনেকেরই জানা আছে। কিন্তু রোজের খাবারের নিয়ম কী ছিল? ফেলুদার পছন্দের সঙ্গে মিল কোথায়? বাবার জন্মদিনে সে সব কথা লিখলেন সত্যজিৎ-পুত্র সন্দীপ রায়।

Advertisement
সন্দীপ রায়
সন্দীপ রায়
শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২৫ ০৯:০৯
Bengali director Sandip Ray remembers Satyajit Ray’s love for food on his birthday

সত্যজিৎ রায়ের সাহিত্য এবং ছবিতে বিভিন্ন খাবারের প্রসঙ্গ এসেছে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

জন্মদিনে বাড়িতে কোনও রকম এলাহি আয়োজন পছন্দ করতেন না বাবা। তবে আমার মা ছিলেন খুব ভাল রাঁধুনি। বিভিন্ন ধরনের রান্নায় পারদর্শী ছিলেন। বাবার জন্মদিনে তাঁর প্রিয় খাবারগুলোই মা নিজের হাতে রান্না করার চেষ্টা করতেন। যেমন লুচি ছিল বাবার খুবই পছন্দের। সঙ্গে আলুর দম। না হলে থাকত মাংসের কোনও পদ। মা সে দিন বাবার জন্য পায়েসও বানাতেন। বাবার লেখা গল্পে বা পরিচালিত ছবিতে বিভিন্ন খাবার এবং আড্ডার কথা বার বার এসেছে। যে সব খাবার নিজের পছন্দ ছিল, সে সবই বেশি করে আসত ওঁর লেখা বা ছবিতে।

Advertisement

বাবা যে খাদ্যরসিক ছিলেন, তেমনটা বলতে পারব না। সব সময়ই দেখতাম খুব দ্রুত খাবার খেতেন। কখনও রসিয়ে রসিয়ে অনেক ক্ষণ ধরে কোনও খাবার খাওয়ায় মন ছিল না। আসলে কাজের মধ্যেই থাকতেন বেশি সময়টা।

আমাদের বাড়িতে মূলত বাঙালি খাবারের চল ছিল বেশি। এখনও তেমনটাই আছে। আসলে বাবা বাঙালি খাবার খেতে বেশি পছন্দ করতেন। খুবই ডাল-ভক্ত ছিলেন বাবা। তবে সব ডাল মোটেই নয়। সোনামুগের ডাল, অড়হড় ডাল এবং ছোলার ডাল ছিল বাবার অত্যন্ত প্রিয়। এরই সঙ্গে ইলিশ মাছ এবং পাঁঠার মাংসের বিভিন্ন রান্না বাবা খুব পছন্দ করতেন। আর বাড়িতে দুপুরে খাবারের শেষে বাবার পাতে মিষ্টি দই ছিল মাস্ট। মরসুমে নতুন গুড়ও থাকত। নকুড় এবং ভীম নাগের নতুন গুড়ের সন্দেশ ছিল তাঁর প্রিয়। নতুন গুড়ের মিষ্টি পেলে অন্য মিষ্টি খেতেনই না।

তবে বাবা সিংহভাগ বাঙালির মতো ভাতের ভক্ত ছিলেন না। বরং রুটি খেতে বেশি পছন্দ করতেন। তাই দুপুরে বাড়িতে ভাত খেলেও রাতে রুটিই খেতেন। তবে মোটের উপর সাধারণ ঘরোয়া খাবারই ছিল বাবার রোজের পছন্দ। খিচুড়ি, ভাতে ভাত— এ সব খেতে খুব পছন্দ করতেন। খুব ব্যস্ততার মধ্যে হয়তো দুপুরে অল্প সময়ের জন্য বাড়িতে ফিরেছেন। ভাতে ভাত পেলেই তিনি খুশি। চট করে খাওয়া সেরে নিতে পারতেন। আবার একটু মেঘলা হলেই বাবা বাড়িতে ফিরেই এক বার ঘোষণা করতেন, ‘‘কী, আজ খিচুড়ি তো?’’

Bengali director Sandip Ray remembers Satyajit Ray’s love for food on his birthday

একসঙ্গে খেতে বসেছেন (বাঁ দিক থেকে) সন্দীপ, সত্যজিৎ এবং বিজয়া। ছবি: সংগৃহীত।

অনেকেই হয়তো খেয়াল করে থাকবেন, বাবার পছন্দের খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে ফেলুদা, জটায়ু এবং তোপসের খাওয়াদাওয়ার খুবই মিল রয়েছে। আসলে বাবা যা খেতে পছন্দ করতেন, সেই পদগুলিই তিনি ফেলুদার পছন্দের তালিকায় দিয়েছিলেন।

সেই সময়ে আমাদের বাড়িতে অনেকের আসা-যাওয়া লেগে থাকত। তাই খুব ঘন ঘন চা তৈরি হত। বাবা খুব ভাল মানের চায়ের ভক্ত ছিলেন। বিকেলে বাড়িতে অতিথিদের সঙ্গে আড্ডায় বাবা চায়ের সঙ্গে ডালমুট পছন্দ করতেন। যেমন ‘সোনার কেল্লা’ গল্পে মন্দার বোস জানাচ্ছে যে, সে লেবু চা খেতে পছন্দ করে। কিন্তু তার জন্য চাই ভাল চা পাতা এবং লিকার। চা নিয়ে বাবার মতো ফেলুও যে খুঁতখুঁতে তার প্রমাণ রয়েছে ‘গোঁসাইপুর সরগরম’ গল্পে। গোঁসাইপুরে ফেলুকে আমরা সঙ্গে করে চা পাতা নিয়ে যেতে দেখি।

Bengali director Sandip Ray remembers Satyajit Ray’s love for food on his birthday

‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ ছবিতে তোপসে এবং ফেলুদা খেতে বসেছে। ছবি: সংগৃহীত।

ফেলুদা নিয়মিত শরীরচর্চা করে। কিন্তু অল্প পরিসরে হলেও বেশ কয়েকটি গল্পে আমরা ফেলুকে মিষ্টি খেতে দেখেছি। বাবা তার পাতে কখনও নতুন গুড়ের সন্দেশ, কখনও আবার সান্ডিলা লাড্ডু এবং ভুনা পেঁড়া রেখেছেন। ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ ছবিতে ক্যালকাটা লজে নিবারণের প্রশ্নের উত্তরে আমরা দেখি, ফেলুদা, থুড়ি সৌমিত্রকাকু কাশীতে মাছের প্রশংসা করছেন। শুধু তা-ই নয়, সেখানে ফেলু বলেই বসে, যাতে সেই রাঁধুনিকে না ছাড়া হয়। এই গল্পেই ডাল, ভাত এবং কপির তরকারির সঙ্গে মাছের ঝোল এবং বাবার প্রিয় দইয়ের উল্লেখ রয়েছে। বাবা ভীম নাগের মিষ্টি দই খুবই পছন্দ করতেন। ডাল যে বাবার অত্যন্ত প্রিয় ছিল, তা আগেই জানিয়েছি। এই প্রসঙ্গে ‘কৈলাসে কেলেঙ্কারি’ গল্পের কথা মনে করা যাক। সেখানে ঔরঙ্গাবাদে ডিনার টেবিলে জটায়ু কিন্তু অড়হড় ডালের সঙ্গে রুটি খেয়েছেন। এ রকম বহু উদাহরণ খুঁজলে পাওয়া যাবে। তবে ফেলুদার মতো শঙ্কু কাহিনিতে খাওয়াদাওয়ার প্রসঙ্গ সেই ভাবে আসেনি। তিনি তো ‘বটিকা ইন্ডিকা’র আবিষ্কারক। তাই মনে হয়, বাবাও সেই ভাবেই গল্পগুলো লিখেছিলেন।

বাবা যে খাবার নিয়ে খুব একটা পরীক্ষা করতেন, তা বলা যাবে না। নতুন কোনও জায়গায় গেলে সেখানকার স্থানীয় খাবার চেখে দেখার চেষ্টা করতেন। তবে যে খাবার দেখে চিনতে পারছেন, সেটাই খেতেন। অপরিচিত খাবারের ধারকাছে যেতেন না। ‘যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডু’ গল্পে নেপালে ভাত এবং মাছের ঝোলের সঙ্গেই হঠাৎ মোমো অর্ডার করে বসেন জটায়ু। তোপসে জানায়, সে আর ফেলু নিজেদের জন্য পরিচিত খাবারই অর্ডার করেছে। আর জটায়ুকে তিব্বতি মোমো বোঝাতে ফেলু বলেন, ‘‘তরল পদার্থে ভাসমান মাংসপিণ্ড।’’ একই সঙ্গে বলেন, ‘‘শুনেছি মন্দ লাগে না খেতে।’’ অনুমান করা যায়, অপিরিচিত খাবার থেকে ফেলুকেও দূরে রাখতেই চেষ্টা করতেন বাবা।

নতুন গুড়ের সন্দেশ ছাড়াও বাবা অমৃতি খেতে পছন্দ করতেন। শক্তিগড়ের ল্যাংচার সুখ্যাতি সকলেরই জানা। বাবাকে কিন্তু আমি সেখানকার ল্যাংচা খেতেও দেখেছি। এই প্রসঙ্গেই একটা ঘটনা মনে পড়ে যাচ্ছে। তখন জোধপুরে ‘সোনার কেল্লা’র শুটিং চলছে। সেই সময়ে দেখতাম সার্কিট হাউসের বাইরে সকালে স্থানীয় বিক্রেতারা রকমারি খাবার নিয়ে হাজির হতেন। প্রায় একটা প্লেটের সমান জিলিপি পাওয়া যেত! দেখতাম, বাবা অনেক সময়েই সকালে সার্কিট হাউসের খাওয়াটা বাদ রাখতেন। বদলে ব্রেকফাস্টে ওই জিলিপিটার সঙ্গে একটু চা খেয়ে নিলেন। ব্যস, আর কিচ্ছু নয়। তার পরেই শুটিংয়ে ব্যস্ত হয়ে যেতেন।

Bengali director Sandip Ray remembers Satyajit Ray’s love for food on his birthday

‘শাখা প্রশাখা’ ছবির চরিত্রেরা এক টেবিলে খাবার খাচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত।

বাঙালি খাবারের পাশাপাশি বাবা কন্টিনেন্টাল এবং চিনা খাবার খেতেও পছন্দ করতেন। আসলে মা খুব ভাল বেক্‌ড রান্না করতেন। মাঝেমাঝে বাড়িতে কোনও রেস্তরাঁ থেকে বিরিয়ানিও আসত। আবার দোকানের ডালপুরি বা কচুরি জাতীয় খাবার বাড়িতে এলেও খেতেন।

Bengali director Sandip Ray remembers Satyajit Ray’s love for food on his birthday

বাড়ির স্টাডিতে (বাঁ দিক থেকে) বিজয়া রায়, সন্দীপ রায় এবং সত্যজিৎ রায়। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

হোটেলে গিয়ে খাবার খেতে পছন্দ করতেন না বাবা। কখনও যেতেন না হোটেল-রেস্তরাঁয়, তেমনটা নয়। যেমন মনে পড়ছে, তখন পার্ক স্ট্রিটে ‘স্কাই রুম’ নামে একটি রেস্তরাঁ ছিল। সেখানকার কন্টিনেন্টাল খাবার বাবা খুবই পছন্দ করতেন। বিশেষ করে ওখানকার চিকেন স্ট্রগনফ বাবার খুবই প্রিয় ছিল। এই খাবারটি বাবার সৃষ্ট কোনও চরিত্র কখনও খেয়েছে কি না, সেটা যদিও আমার এ মুহূর্তে মনে পড়ছে না। তবে তখন কলকাতায় খুব ভাল কন্টিনেন্টাল রেস্তরাঁ ছিল না। তাই ‘স্কাই রুম’ ঝাঁপ বন্ধ করার পর খুবই মনখারাপ হয়েছিল বাবার।

তবে এ সবই কাজ না থাকলে সে সব সময়ের কথা। আসলে তো কাজেই ডুবে থাকতে পছন্দ করতেন। আর শুটিংয়ের সময়ে খাওয়াদাওয়ার বিষয়ে বাবা ছিলেন একদম অন্য মানুষ। দেখতাম, কাজ করার সময়ে খুবই হালকা খাবার খেতেন বাবা। খাওয়ার জন্য একদম সময় নষ্ট করতে চাইতেন না। তাই দুপুরে ফ্লোরে বাবা মূলত স্যান্ডউইচ খেতেন। সঙ্গে থাকত ভেটকি মাছ দিয়ে তৈরি ফিশ ফ্রাই। আর দই তো থাকতই। দ্রুত খাওয়া শেষ করেই আবার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। বাবার যখন শরীর-স্বাস্থ্য ভাল ছিল, তখন শুটিংয়ের সময় যে তাঁর জন্য আলাদা করে কোনও রান্না করা হয়েছে, সে রকম দেখিনি।

Bengali director Sandip Ray remembers Satyajit Ray’s love for food on his birthday

‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।

দৈনন্দিন জীবনে বাঙালি যে একটু আরাম করে বসে খেতে পছন্দ করে, বাবা তা বুঝতেন। তবে শুধুই নিছক খাওয়াদাওয়া নয়, এমনই দৃশ্য তৈরি করতেন, যার মধ্যে দিয়ে গল্পটাও এগিয়ে চলবে। ফেলুদার পাশাপাশি বাবার অন্যান্য ছবিতেও তেমন উদাহরণ খুঁজে পাওয়া যাবে। ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ ছবিতে ভূতের রাজার বরে রাজকীয় ভোজের দৃশ্য আজও স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। খুব ব্যস্ততা না থাকলে বাড়িতে বাবা সকলের সঙ্গে বসে খাবার খেতে পছন্দ করতেন। ‘শাখা প্রশাখা’ ছবিতে যেমন পরিবারের সকলে মিলে একসঙ্গে টেবিলে বসে খাওয়ার একটি দীর্ঘ দৃশ্য রয়েছে, খানিকটা তেমন।

‘পথের পাঁচালী’-র পর ‘অপুর সংসার’-এও খাওয়াদাওয়ার দৃশ্য রয়েছে। এই মুহূর্তে ‘ঘরে বাইরে’ ছবির কথা মনে পড়ছে। নিখিলেশ রাতে পঞ্চব্যঞ্জন-সহ খেতে বসেছে এবং বিমলা তাকে পাখা দিয়ে হাওয়া করছে। পাতে রয়েছে লুচি এবং বড় চিংড়ি মাছ। পাশে বাটিতে মাছ, খাসির মাংস, সন্দেশ, পায়েস এবং মিষ্টি দই। ‘আগন্তুক’ ছবিতে মনমোহনের সঙ্গে গয়না বড়ির পরিচয় করিয়ে দেয় অনিলা, যাকে সে ‘আহারের এত বাহার’ হিসেবে উল্লেখ করে। এ ছাড়াও মনমোহনের পাতে দেওয়া হয় ডাল, পালংশাকের ঘণ্ট এবং মাছের ঝোল। মনমোহন জানিয়ে দেয়, সর্বভুক হলেও সে কিন্তু স্বল্পাহারী। বাবাও কিন্তু অনেকটা সে রকমই ছিলেন।

Bengali director Sandip Ray remembers Satyajit Ray’s love for food on his birthday

‘পথের পাঁচালী’ ছবির একটি দৃশ্য। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

জন্মদিন বাবা সাধারণত বাড়িতেই কাটাতে পছন্দ করতেন। ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুবান্ধব দেখা করতে আসতেন। সঙ্গে আনতেন মিষ্টি এবং বিভিন্ন ধরনের খাবারদাবার। খুব আড্ডা হত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জন্মদিনে বাড়িতে ভিড় বাড়তে শুরু করল। বাবার তখন শরীর বেশ খারাপ। খাওয়াদাওয়ার উপরেও একটু নিয়ন্ত্রণ চলে এল। বাড়িতে রান্না করা কচি পাঁঠার ঝোল বাবা খুব তৃপ্তি করেই খেতেন। কিন্তু মনে আছে, শারীরিক কারণে চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছিলেন পাঁঠার মাংস বাদ দিতে। তার পরিবর্তে চলে এল মুরগির মাংস। সেই পরামর্শ বাবা যে খুব একটা পছন্দ করেছিলেন, তা মনে হয় না। কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতেন বাবা। শেষের দিকে সপ্তাহে এক দিন মাত্র পাঁঠার মাংস খেতেন। আমাদের বাড়িতে পাঁঠা এবং মুরগি— দু’রকমই মাংস নিয়মিত হত। কিন্তু বাবাকে যদি দুটোর মধ্যে বেছে নিতে বলা হত, তা হলে তাঁর ভোট পেত পাঁঠার মাংস। বিভিন্ন রকমের মাংসের পদের কথাও বাবার লেখা বিভিন্ন গল্পে রয়েছে।

এ দিকে, সময়ের সঙ্গে জন্মদিনে বাড়িতে ভিড়ও বাড়তে শুরু করল। তাই চিকিৎসক বাবাকে বলতেন, ‘‘জন্মদিনে আপনি একটু গা-ঢাকা দেওয়ার চেষ্টা করুন। তা না হলে মুশকিল!’’ শরীরের কথা চিন্তা করেই কয়েকটি জন্মদিনে বাবা আর বাড়িতে থাকতেন না। কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে বা হোটেলে চলে যেতেন। আবার এ রকমও হয়েছে, হয়তো জন্মদিনে কলকাতার বাইরেই চলে গেলেন কয়েক দিনের জন্য।

Bengali director Sandip Ray remembers Satyajit Ray’s love for food on his birthday

‘শাখা প্রশাখা’ ছবির সেটে একসঙ্গে লাঞ্চ করছেন বিজয়া রায় এবং সত্যজিৎ রায়। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।

শেষের দিকে বাবার খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক নিয়ন্ত্রণ চলে আসে। তখন তাঁর খাবারে যেন অতিরিক্ত তেল-মশালা না থাকে, সে দিকে আমরা বিশেষ নজর দিতাম। তাই জন্মদিনের দিন ভিড় এড়াতে যদি কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যেতেন, সেখানেও তাঁর জন্য হালকা খাবারের বন্দোবস্ত করা হত। কারণ, বাবা কী খেতে পছন্দ করেন, আত্মীয়েরা সেটা ভাল করেই জানতেন। তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি অন্য রকম হলে, তখন বাড়ি থেকেই বাবার জন্য খাবার রান্না করে পাঠিয়ে দেওয়া হত। আমারও বয়স বাড়ছে। ফলে বুঝতে পারি, খাওয়াদাওয়া নিয়ে একটু সচেতন থাকা দরকার।

(সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে অনুলিখিত)

Advertisement
আরও পড়ুন