productivity tips

ব্যস্ত জীবনে কোনও কাজই শেষ করে উঠতে পারছেন না? ছোট ছোট পদক্ষেপে সাফল্য আসতে পারে

নির্ধারিত সময়ে কোনও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলে মনের মধ্যে হতাশা দেখা দিতে পারে। এই ধরনের ঘটনা দৈনন্দিন জীবনযাপনের ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি করতে পারে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২৫ ১১:০৪
Effective tips for setting and achieving short term goals

বড় নয়, লক্ষ্যমাত্রা হবে ছোট ছোট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

কয়েকটি উদাহরণ দিয়েই শুরু করা যাক। একটা নতুন বই পড়তে শুরু করেছেন। ভেবেছিলেন এক সপ্তাহে শেষ করবেন। কিন্তু দেখা গেল, মাস অতিক্রান্ত হল, তবে বইটি পড়া শেষ হল না। আবার হয়তো তিন মাসে সঞ্চয়ের নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা পূরণ করতে পারলেন না।

Advertisement

কর্মব্যস্ত জীবনে মানুষ অনেক সময়েই নিজের জন্য বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। কিন্তু তার পর দেখা যায়, নানা কারণবশত তা সম্পূর্ণ হচ্ছে না। ফলে মনের মধ্যে হতাশা ভিড় করে, যা অন্যান্য কাজেও বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তাই চিকিৎসক এবং মনোবিদদের একাংশের পরামর্শ, বড় কোনও লক্ষ্য স্থির না করে, অল্প সময়ের জন্য নিজের ইচ্ছা বা কাজকে সাজানো উচিত।

একাগ্রতা বৃদ্ধি করে

বর্তমান সময়ে মানুষের একাগ্রতা নষ্ট করার জন্য অজস্র মাধ্যম চারপাশে রয়েছে। মোবাইলে লাগাতার নোটিফিকেশন থেকে শুরু করে সমাজমাধ্যম বা ওটিটি প্ল্যাটফর্ম— ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কেটে যায়। কিন্তু তাতে দৈনন্দিন ‘প্রোডাক্টিভিটি’ নষ্ট হয়। অথচ এগুলোকে জীবন থেকে বাদ দেওয়ায় সম্ভব নয়। তাই মনোবিদদের একাংশের দাবি, যে কোনও কাজের অল্প লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা উচিত। আগে থেকে চলতি সপ্তাহে কী কী করবেন, তাঁর একটি তালিকা তৈরি করতে পারলেও সুবিধা হয়। অনেকের মতে, অল্প সময়ের জন্য নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা বাড়ির ছোট ছোট ইটের মতো, যা শক্ত ভিতের মতো মনোবল বৃদ্ধি করে।

বড় ‘কাজ’ ভেঙে নিন

অনেক সময়, কোনও বড় লক্ষ্যমাত্রা মনের মধ্যে ভীতি বা অবসাদ তৈরি করতে পারে। কিন্তু সেই কাজটিকে ছোট ছোট পর্যায়ে ভেঙে নিতে পারলে সহজেই উপকার পাওয়া যায়। যেমন, এক মাসে বড় মাপে ওজন কমানো কঠিন কাজ। কিন্তু এই লক্ষ্যমাত্রাকে তিন মাসে ভেঙে নেওয়া যেতে পারে। ফলে কাজটা সহজও হবে এবং সহজেই তা আয়ত্ত করা যাবে। একই ভাবে রাতারাতি একটা বই লেখার তুলনায়, আগে প্রতিদিন এক পাতা করে লেখার অভ্যাস তৈরি করা যেতে পারে। মনোবিদদের একাংশের মতে, ছোট ছোট লক্ষ্যমাত্রা পূরণে দৈনন্দিন জীবন অনেকটাই সহজ হয়ে যায়।

Effective tips for setting and achieving short term goals

বড় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত সময়ে পূরণ না হলে মনে অবসাদ বাসা বাঁধতে পারে। ছবি: সংগৃহীত।

সময়ের গুরুত্ব

ছোট ছোট লক্ষ্যমাত্রা সারাদিনের পরিকল্পনা তৈরি করে সাহায্য করে। কারণ, এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন কাউকে কী কী করতে হবে, তার স্পষ্ট ধারণা তৈরি হয়। ফলে সময় নষ্ট হওয়ারও আশঙ্কা থাকে না। যেমন, রাত জেগে একটা গোটা ওয়েব সিরিজ় দেখলে পরের দিন ঘুম থেকে দেরিতে ওঠা বা অফিসের কাজে সমস্যা হতে পারে। পরিবর্তে প্রতি রাতে সিরিজ়টির একটি করে এপিসোড দেখা যেতে পারে।

প্রয়োজনীয়তা শেখায়

লক্ষ্যমাত্রা ছোট হলে তা জীবনে কেউ কী কী চাইছে, তা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি করে। হয়তো দেখা গেল, দিনের শুরুতে কেউ ১০টি কাজ করার সিদ্ধান্ত নিল। এর ফলে তাঁর মনের মধ্যেও একটা প্রত্যাশা তৈরি হল। অথচ দিনের শেষে দেখা গেল সব দিকে দৌড়ঝাঁপ করতে গিয়ে কোনও কাজই ঠিক করে করতে পারেননি তিনি। তাই কোন কাজটি আগে করা উচিত, বা কোনটি পরে করলেও ক্ষতি নেই— এই সিদ্ধান্ত নিতে পারলে সুবিধা হবে। প্রতিদিন অর্থপূর্ণ কাজের ধারাবাহিকতা সহজেই ভবিষ্যতের বড় লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সাহায্য করে।

মনোবল বৃদ্ধি করে

লাগাতার ছোট ছোট লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারলে তা ব্যক্তির মনোবল বৃদ্ধি করে। তখন সহজেই সেই লক্ষ্যমাত্রার পরিধি আরও কিছুটা বাড়িয়ে নেওয়া যেতে পারে। ছোট ছোট লক্ষ্যমাত্রা দৈনন্দিন জীবনে ভাল অভ্যাসও তৈরি করতে পারে। যেমন, একদিনে চাইলে অনেকের পক্ষেই ধূমপান ছাড়া কঠিন মনে হতে পারে। কিন্তু প্রতিদিন ধূমপানের মাত্রা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। প্রত্যেক দিনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে তা হলে মনোবলও বৃদ্ধি পাবে।

মনোবিদদের একাংশের দাবি, যে কোনও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারলে তা মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। মন ভাল থাকে, একাগ্রতা বৃদ্ধি পায়। ফলে দীর্ঘকালীন পরিস্থিতির প্রক্ষাপটে, জাবনযাত্রাও থাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে।

Advertisement
আরও পড়ুন